#কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য স্থানীয় নেতৃত্বকে তুলে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যের কথা মাথায় রেখে কাজ করুন। হাওড়ায় বিজেপি-র সাংগঠনিক বৈঠকে পদাধিকারীদের উদ্দেশে এ কথা বলেন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় মুখ্য পর্যবেক্ষক সুনীল বনশাল। পারস্পরিক দোষারোপ না করে, সংগঠনকে মজবুত করতে দলের মধ্যে আরও সমন্বয় বাড়ানোর নির্দেশও দেন বনশাল।
১৬ ডিসেম্বর হুগলির ব্যান্ডেলে রাজ্যের পদাধিকারী বৈঠকের আগে, হাওড়ায় দলীয় এক বৈঠকে বনশাল বলেন, "আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা হারলাম না জিতলাম, সেটা বিবেচ্য নয়। আমরা নিশ্চয়ই রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করব। কিন্তু, মনে রাখতে হবে, আমাদের আসল লক্ষ্য ২৪- এর লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজ্যের সব বুথে বুথে স্থানীয় নেতৃত্ব তৈরি হবে। এলাকায় এলাকায় দলের কর্মসূচি রূপায়ণে এই স্থানীয় নেতৃত্বকে চিহ্নিত করাই এই মূহুর্তে সংগঠনের সব থেকে বড় কাজ।"
আরও পড়ুন: আবারও সেই প্রভাবশালী তকমা! মিলল না জামিন, কয়েদখানাতেই বন্দি কেষ্ট
বনশালের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, '' বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা বনশালের কথা থেকে স্পষ্ট যে আমরা রাজ্যে বিজেপির সংগঠন নিয়ে যা বলি সেটাই ঠিক। আসলে ওদের কোনও লোক নেই। ' ২৪- এর নির্বাচন আসছে, তাই ওরা এখন লোক খুঁজতে বেরিয়েছেন।"
পঞ্চায়েত যে বিজেপির লক্ষ্য নয়, সেটা নতুন কিছু নয়।
কিন্তু, পঞ্চায়েতকে সামনে রেখে বিজেপির ২৪- এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে প্রতি পদে হোঁচট খেতে হচ্ছে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক দোষারোপের বহর দেখে।সম্প্রতি হাওড়ার বৈঠকে বনশাল, সতীশ ধন্ডদের সামনেই জেলা নেতৃত্ব বলেন, দলীয় বৈঠকই হোক কিম্বা কর্মসূচি, তাতে দলের পদাধিকারীরাই ঠিক মতো যোগ দেন না। উপস্থিতির হার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৫০ শতাংশের বেশি নয়। জেলা নেতৃত্বের এই অভিযোগের জবাবে জেলায় রাজ্যের পদাধিকারীরা বলেন, রাজ্যের লিখিত নির্দেশ সত্বেও, জেলা সভাপতি তাঁদের মতামতকে গুরুত্ব দিতে চান না।
আরও পড়ুন: 'আদালত কোনও চিলড্রেন পার্ক নয়', ফের কড়া মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের
সাংগঠনিক রদবদলের পর, দলের বহু কর্মী নিস্ক্রিয় হয়ে বসে গিয়েছেন, তাঁদের ফেরানোর কোনও উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে না। জেলায় রাজ্যের পদাধিকারী হওয়া সত্বেও, বৈঠকে জেলা নেতৃত্বের থেকে যোগ্য সম্মান না পাওয়াকে কেন্দ্র করে বনশালের সামনেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈঠক ছেড়ে চলে যান কয়কজন নেতা৷ তার জেরে, জেলা নেতৃত্বকে সতর্ক করে বনশাল বলেন,'' নতুন সভাপতিকে নতুন ও পুরনো কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় রেখেই কাজ করতে হবে। দলের একাংশ নিস্ক্রিয় হয়ে গেলে তা দলের ক্ষতি। এটা মানা যাবে না। "
বিজেপির এক রাজ্য নেতার মতে, সাম্প্রতিক কালে দলের ৫টি জোনের বিভাগীয় বৈঠকে সংগঠনের যে করুণ ছবি উঠে এসেছে তাতে চিন্তিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তুলনামূলক ভাবে দক্ষ্মিণবঙ্গের চেয়ে পরিস্থিতি কিছুটা ভাল উত্তরবঙ্গের। গতকাল, হাওড়ায় শ্রীরামপুর, হাওড়া সদর ও হাওড়া গ্রামীণ সাংগঠনিক জেলার বৈঠক ছিল। সাংগঠনিক ও জনভিত্তির দিক দিয়ে হাওড়ায় বিজেপির একটা দীর্ঘ সূত্রতা রয়ছে। সেখানেও সংগঠনের হাঁড়ির হাল একই।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ১৬ ডিসেম্বর, হুগলির ব্যান্ডেলে দলের রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকের আগে সংগঠনের এই পরিস্থিতি যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: BJP, Panchayat elections