#কলকাতা: রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন,'চলুন পাল্টাই'। শুভেন্দু অধিকারীর চ্যালেঞ্জ, 'আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসে আরও ভাঙ্গন ধরবে। কলকাতার পাশাপাশি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড় হিসেবে চিহ্নিত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূল কংগ্রেসকে সাফ করে দেবেন'। বিজেপি নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির কথাতেও এবার বাংলায় বিজেপি সরকার। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বললেন,' কাটমানির সরকার আর নেই দরকার'। তৃণমূলের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে এবং বিজেপি যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে উন্নয়ন ও সুশাসনকে সামনে রেখেই তাঁদের পাখির চোখ বিধানসভা নির্বাচন তাও নিউজ এইট্টিন বাংলাকে এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন স্মৃতি ইরানি।
চনমনে গেরুয়া শিবির বলছে, 'আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন । বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস করার লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না'। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন,' তৃণমূলের ভাঙ্গন তো সবে শুরু হয়েছে। এখনও অনেক বড় চমক বাকি আছে। শাসক দলের অনেক তাবড় তাবড় নেতা- মন্ত্রী বিজেপিতে যোগদানের প্রশ্নে ওয়েটিং লিস্টে রয়েছেন'। এসব শুনে শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা, 'মমতা ছিলেন, আছেন আর আগামী দিনেও থাকবেন। ওদের বাংলা দখলের স্বপ্ন স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে'। গত কয়েকদিন ধরেই শুভেন্দু অধিকারী বিভিন্ন সভা মঞ্চ থেকে আত্মবিশ্বাসের সুরে বলছেন, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই হরিশ মুখার্জি এবং হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে পদ্ম ফোটাবেন। আর এবার হাওড়ার ডুমুরজলার মেগা সভা মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর টার্গেট অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক।
অভিষেক- শুভেন্দুর রাজনৈতিক তরজার মধ্যেই এবার অভিষেকের খাস তালুকে থাবা বসানোর চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর। বিজেপির রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবারই বলে থাকেন,' পিসি-ভাইপোর সরকার আর নেই দরকার'। অনেকে আবার এও বলেন, 'তৃণমূল কংগ্রেস এখন প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। ওই কোম্পানিতে কিছুদিনের মধ্যেই পিসি-ভাইপো একা হয়ে পড়বে'। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক জমি ভালোই শক্ত করে ফেলেছে। তবে কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এখনও সেভাবে তারা সংগঠনকে বিস্তার লাভ করে তুলতে পারেনি। একসময়ের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করে বিজেপি কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাজনৈতিক জমি শক্ত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিজেপি নেতাদের নজরে এখন তাই মমতার কলকাতা এবং অভিষেকের দক্ষিণ ২৪ পরগনা। ইতিমধ্যেই এই দুই জোনে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে এগারো সালের পরিবর্তনের অন্যতম কাণ্ডারী শুভেন্দু অধিকারীকেও ময়দানে নামিয়ে একুশের নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চাইছে বিজেপি।
রবিবার ডুমুরজলা সভা মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর কলকাতা এবং সংলগ্ন দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও এবার গেরুয়া ঝড়ের চ্যালেঞ্জ রাজনৈতিক মহলে নতুন করে জল্পনা বাড়িয়েছে। আগামী দিনে তাহলে কি কলকাতা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও পদ্মের দাপটে ঝরে পড়বে জোড়া ফুল ? জোড়া ফুল আর পদ্ম ফুল নিয়ে যুযুধান দুই শিবিরের লড়াই জমজমাট। গেরুয়া শিবির বলছে ,' মমতা আর অভিষেকের ঘরে কুঁড়ি এসে গিয়েছে। পদ্ম ফুল ফুটল বলে'। জবাবে তৃণমূল বলছে,' কুঁড়ি হয়েই থেকে যাবে। পদ্ম ফুল আর ফুটবে না'। তবে শেষমেষ রাজনীতির কুরুক্ষেত্রের ময়দানে জোড়া ফুল নাকি পদ্ম ফুল ? কোন ফুল বাজিমাত করে তার উত্তর দেবে সময়ই।
VENKATESWAR LAHIRI