'প্রভু ও ভক্তে'র অনশন সামলাতে নাজেহাল গোয়েন্দারা

Last Updated:

মাদক পাচার চক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত জয়দেব দাসের পোষ্য রকি ও টাইসন, 'প্রভু' ভক্তির জেরে খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে।

Sujay Pal
#কলকাতা: প্রভু ও ভক্তে'র অনশন সামলাতে নাজেহাল গোয়েন্দারা ৷ রাস্তার হোক বা বাড়ির পোষা, কুকুরের প্রভুভক্তি সকলেরই জানা। তবে বাড়ির পোষা কুকুরের তার প্রভুর প্রতি টান বেশি হওয়ায়ই স্বাভাবিক। তাই মাদক পাচার চক্রে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত জয়দেব দাসের পোষ্য রকি ও টাইসন, 'প্রভু' ভক্তির জেরে খাওয়াদাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছে। জয়দেবকে কাছে না পেয়ে, তার হাতের খাবার না পেয়ে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে কার্যত অনশন শুরু করেছে জয়দেবের দুই 'ভক্ত'। রকি ডোভারম্যান। টাইসন হল রটউইলার প্রজাতির।
advertisement
অন্যদিকে জয়দেবও গ্রেফতারের পর শেষ দু’দিন কিছু খায়নি। অনেক জোরাজুরির পরেও তাকে কিছু খাওয়াতে পারেনি পুলিশ। সে কি কারণে অনশন করছে তা জানা নেই পুলিশের। তবে এটা জেরা এড়ানোর কৌশল হতে পারে বলেই মত পুলিশের।
advertisement
প্রসঙ্গত, জয়দেব সম্প্রতি রাজনীতিতে নেমেছিল। লোকসভা ভোটে প্রার্থী হওয়া থেকে প্রথম সারির  রাজনৈতিক নেতাদের সাথে মেলামেশা, সবই করছিল। গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করছে, জয়দেব গ্রেফতারের সময় থেকেই নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করছে। তাই রাজনীতির শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে অনশনের মাধ্যমে হয়তো নীরব প্রতিবাদ করছে।
advertisement
কলকাতায় মাদক পাচারকারী হিসেবে জয়দেব পুলিশের দীর্ঘদিনের টার্গেট। গত ২৭ নভেম্বর তাকে হাতেনাতে ১ কেজি চরস সহ গ্রেফতার করে গোয়েন্দা বিভাগ। তার বাড়ি যে কার্যত মাদকের গুদামঘর সেই খবরও ছিল পুলিশের কাছে। কিন্তু বাড়ি পাহারায় তার যে দুই 'ভক্ত' রয়েছে তা জানা ছিল না গোয়েন্দাদের। তাতেই বাধে বিপত্তি। বাড়ির গেট খুলে ঢুকতেই পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রকি। জয়দেব গ্রেফতারের পর পুলিশ যে তার বাড়িতে হানা দেবেই সে ব্যাপারে নিশ্চিত ছিল তার স্ত্রী। সেজন্যই দুই পোষ্যকে খোলা ছেড়ে রেখেছিল। একা পুলিশের পক্ষে তাদের বাগে আনা সম্ভব ছিল না। তাই ডেকে পাঠানো হয় ডগ স্কোয়াডকে। তাঁরাও এসে হিমশিম খান। উত্তেজিত রকিকে সামলাতে গিয়ে কামড় খান একজন ডগ হ্যান্ডলার। তার দু’হাতে আঁচড়ে কামড়ে দেয় প্রভুভক্ত রকি।
advertisement
পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ায় সেই রাতে জয়দেব ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়। তখন ফাঁকা বাড়িতে অসহায় হয়ে পড়া রকি ও টাইসনকে রাখা হয় মধ্য কলকাতার একটি পশু হাসপাতালে। সেখানে সম্পূর্ণ এক অন্য পরিবেশ। নেই খোলা ঘর বারান্দা। ছোট্ট একটি ঘরে তাদের থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের প্রভু অর্থাৎ জয়দেব বা তার পরিবারের কেউ আশেপাশে নেই। এই জয়দেব তাদের নিয়মিত হাতে করে খাওয়াতো, কিন্তু তার হাতের খাবারও মিলছে না। ফলে কোন রকম সুযোগ-সুবিধা না পেয়ে পশু হাসপাতালে অনশন শুরু করে রকি ও টাইসন। সিএসপিসিএ পশু হাসপাতালের প্রধান সমীর শীল বলেন, "প্রথম কদিন ওরা কিছুই খায়নি। খাবারের থালা ফেলে দিয়েছে। তা সত্বেও আমরা নিয়ম করে ভাত খাসির মাংস দিয়েছি। ক'দিন কেটে যাবার পর সামান্য খাবার মুখে তুলেছে। কিন্তু এই পরিবেশে ওরা মানিয়ে নিতে পারছে না। তাই ওদের কতদিন এখানে রাখা সম্ভব হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। পুলিশ যদি জয়দেবের অনুমতি নিয়ে তার কোন আত্মীয়ের বাড়িতে এদের রাখার অনুমতি দেয় তাহলে হয়তো ওরা ভালো থাকবে।"
advertisement
ধৃত জয়দেবকে মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানানো হলেও আদালত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তাকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রাখা হবে। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের এক অফিসার বলেন, "পুলিশ হেফাজতে প্রথম কয়েকদিন তথ্য দিলেও পরে অনশন করা শুরু করে জেরা করতে আমাদের সমস্যা হয়েছে। অনশন করলে আমরা ঠিকভাবে জেরা করতে পারবনা বা শারীরিক দুর্বলতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জেরা পর্ব এড়াতে পারবে তাই হয়তো কারবার গোপন করতে অনশন করেছে।"
advertisement
পুলিশের দাবি, এই কুখ্যাত মাদক পাচারকারীর থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য বের করতে পেরেছে তাঁরা। কিছু সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে। তবে 'প্রভু' ও 'ভক্তে'র অনশন চিন্তায় রেখেছে গোয়েন্দাদের।
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
'প্রভু ও ভক্তে'র অনশন সামলাতে নাজেহাল গোয়েন্দারা
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement