Siliguri Green channel: উত্তরের মন এক, প্রমাণ করল শিলিগুড়ি! গ্রিন চ্যানেল করে হাসপাতালে আনা হল আহতদের
- Published by:Samarpita Banerjee
Last Updated:
বিশাল পরিমাণে স্বেচ্ছায় রক্তদানে ব্লাড ব্যাংকের শূন্যতা কেটে যায়।
#শিলিগুড়ি:মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় রীতিমত হকচকিয়ে গেল গোটা উত্তরবঙ্গ। এই দুর্ঘটনা সাড়া ফেলেছে সবার মনে। তাই তো রীতিমত শীতের কাঁপুনি উপেক্ষা করে গভীর রাত পর্যন্ত ভিড় দেখা গিয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এবং জলপাইগুড়ি ব্লাড ব্যাংকে (Siliguri Green channel)।
শিলিগুড়ি শহর থেকে ময়নাগুড়ি-দোমহনির দূরত্ব প্রায় ৫৭ কিলোমিটার। এই দূরত্ব কম কিছু নয়। তবুও মানবিকতার কাছে হেরে গিয়েছে দূরত্ব। ময়নাগুড়ি-দোমহনির মাঝে দুর্ঘটনার খবর মিলতেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ। দুর্ঘটনার পর সজাগ ছিল ট্রাফিক পুলিশ থেকে শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য এবং রাজনৈতিক দলগুলি। বলা বাহুল্য, বিশাল পরিমাণে স্বেচ্ছায় রক্তদানে, ব্লাড ব্যাংকের শূন্যতা কেটে যায়।
advertisement
এই ৫৭ কিলোমিটার রাস্তা একপ্রকার গ্রিন চ্যানেল (green channel) করে নিয়ে আসা হয় আহতদের। গুরুতর আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। যতক্ষণ না সকল গুরুতর আহতদের মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়, ততক্ষণ তৎপরতার সঙ্গে গভীর রাত পর্যন্ত ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু থাকে। সারারাত উদ্ধারকাজ চলার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরাও।
advertisement
advertisement
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, "যেভাবে সকলে এসে রক্তদান করেছেন, তা অভাবনীয়। সবাই মানবিকতা দেখিয়েছেন। সারারাত জেগে ছিলেন দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষেরা।" মেডিক্যাল কলেজে সারারাত ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অধিকাংশ কর্মী ও চিকিৎসক করোনা সংক্রমিত হওয়ার কারণে মুশকিল আরও বেড়ে গিয়েছিল। তবে মুশকিল আসান করে তোলেন জুনিয়র ডাক্তার এবং স্বেচ্ছাসেবকরা। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম এদিন নজির গড়েছে।
advertisement
এমনই পরিস্থিতিতে পিছিয়ে ছিল না বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, শিলিগুড়ি সূর্যনগর সমাজ কল্যাণ সংস্থা, শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন, ইউনিক ফাউন্ডেশন টিম শিলিগুড়ির মতো বিভিন্ন ছোটো-বড় সংস্থা এগিয়ে এসেছে। শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনের তরফে জানান হয়, ভয়াবহ এই ট্রেন দুর্ঘটনায় আহতদের জন্য আপতকালিন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে সংগঠন (Siliguri Green channel)। শুক্রবার এই শিবিরে পুরুষ, মহিলা মিলিয়ে মোট ৩৫জন রক্তদান করেন। পাশাপাশি অর্গানাইজেশনের সদস্যরা বৃহস্পতিবার রাতেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গিয়ে ১৫ ইউনিট রক্তদান করেন। এছাড়া তাদের পক্ষ থেকে কম্বল ও শুকনো খাওয়ার বিতরণ করা হয়।
advertisement
একই সুর শোনা গেল শিলিগুড়ি সূর্যনগর সমাজকল্যাণ সংস্থার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য গৌতম করের গলায়। তিনি News 18 -কে বলেন, "নতুন বছরের শুরুতে এই ধরনের দুর্ঘটনা খুবই মর্মান্তিক। আমাদের সংস্থা সূর্যনগর সমাজকল্যাণ সব সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষদের পাশে আছে। দুর্ঘটনার কথা জানতে পেরেই, আমাদের সংস্থার তরফে মোট ২২ জন রক্তদান করেছেন। যার মধ্যে চারজন মহিলাও রয়েছেন। এমনকি আমরা আমাদের দুটো যে অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, অতিসত্বর সময় নষ্ট না করে আমরা সেই দুটো অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই আহতদের উদ্ধার করতে। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা আহতদের প্রত্যেকেই যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন।"
advertisement
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টা নাগাদ ময়নাগুড়ির কাছে দোমহনিতে ভয়াবহ দূর্ঘটনার কবলে পড়ে গুয়াহাটিগামী গুয়াহাটি-বিকানের এক্সপ্রেস। লাইনচ্যুত হয় ট্রেনের ১২টি বগি। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯ যাত্রীর। দুর্ঘটনার পরপরই ভারতীয় রেলের তরফে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা, গুরুতর জখম যাত্রীদের ১ লক্ষ ও অল্পবিস্তর আহত যাত্রীদের ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষনা করেছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলে রেল সূত্রে খবর।
advertisement
দুর্ঘটনার দিন রাত থেকে ভোর পর্যন্ত রাস্তাজুড়ে শোনা যায় অ্যাম্বুলেন্সের আওয়াজ। শিলিগুড়ির বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যেমন ইউনিক ফাউন্ডেশন, যুব ভারতী, মাটিগাড়া ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ইউনিক সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যুব ছাত্র নেতারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি অ্যাম্বুলেন্স দিয়েও সাহায্য করে আহত এবং তাদের পরিবারকে।
Vaskar Chakraborty
Location :
First Published :
January 14, 2022 8:43 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/জলপাইগুড়ি/
Siliguri Green channel: উত্তরের মন এক, প্রমাণ করল শিলিগুড়ি! গ্রিন চ্যানেল করে হাসপাতালে আনা হল আহতদের