#ইজরায়েল: এক দিকে অ্যানিম্যাল প্রোটিনের উপরে জোর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। অন্য দিকে, পশুমাংসের সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রগুলিতে নানা ধরনের সমস্যাও দানা বাঁধছে। উঠছে একাধিক অভিযোগের আঙুল। আজকাল পরিবেশ, বাস্তুতন্ত্র, প্রাণীহত্যা-সহ নানা অভিযোগে সরব হচ্ছেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন। বর্তমানে বিষয়টি শুধু আর পশুহত্যার নীতিগত অভিযোগের মধ্যে আটকে নেই। বাস্তুতন্ত্র ও জীববৈচিত্র্য নষ্ট হওয়ার উপরেও জোর দিতে চেয়েছেন অনেকে। একাংশ আবার ফার্মের মধ্যে গবাদি পশুর লালন-পালন, তার জন্য পাহাড়প্রমাণ খরচা ও সেই সমস্ত ফার্ম থেকে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের বিষয়টিকে সামনে আনার চেষ্টা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে ল্যাব গ্রোন মিটের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। এবার সেই পথেই দিশা দেখাচ্ছে আলেফ ফার্মস (Aleph Farms) নামে ইজরায়েলের এক সংস্থা। বিশ্বের প্রথম 3D প্রিন্টেড রিবআই স্টেক তৈরি করে লাগিয়ে দিয়েছে এই সংস্থা।
রিবআই স্টেক। গবাদি পশুর পাঁজরের অংশ থেকে নেওয়া এই সুস্বাদু ও জনপ্রিয় মাংসের জন্য কিন্তু আর পশুহত্যার প্রয়োজন নেই। আর এখানেই প্রযুক্তির কেরামতি! বায়োপ্রিন্টিং টেকনোলজিকে কাজে লাগিয়ে সত্যিকারের গরু বা অন্য গবাদি পশুর কোষ থেকে তৈরি হচ্ছে এই রিবআই স্টেক। এই আবিষ্কারের নেপথ্যে রয়েছে ইজরায়েল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বায়ো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অধ্যাপকরা ও আলেফ ফার্মস।
এক বিবৃতিতে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার তরফে। শোনা যাচ্ছে, আকার-আকৃতি, গুণগত মান ও স্বাদে সত্যিকারের মাংসের মতোই রিবআই স্টেক। সব চেয়ে বড় বিষয় হল, এখানে কোনও পশুকে হত্যা করার দরকার নেই। এমনকি তাদের কোনও রকম ক্ষতিও করা হচ্ছে না। গবেষকদের দল প্রথম গোরু বা অন্য গবাদি পশুর কাছ থেকে সোয়াব নিচ্ছেন, তার পর একটি সুদীর্ঘ জৈবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই নমুনাকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে। এটিকে যখন কাটা হচ্ছে বা রান্না করা হচ্ছে, তখন সত্যিকারের মাংসের মতোই লাগছে। এর সঙ্গে সত্যিকারের পশুমাংসের তেমন একটা পার্থক্য পাওয়া যাচ্ছে না। শুরুর দিকে অপেক্ষাকৃত পাতলা ধরনের স্টেক তৈরি করা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও নানা রকমের স্টেক তৈরি করা হবে, এমনই জানাচ্ছে সংস্থা।
নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতে একটা বড় পথ দেখাচ্ছে এই আবিষ্কার। তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও রেগুলেটরি অথরিটি বা খাদ্য নিয়ামক সংস্থার তরফে এই মাংস ব্যবহারে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। খাদ্য নিয়ামক সংস্থাগুলির তরফে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়ার পর যদি এই মাংসে ছাড়পত্র মেলে, তাহলেই তা ব্যবহার করা যাবে। তার পর হয়তো সুপার মার্কেট থেকে শুরু করে আশেপাশের দোকানগুলিতে পাওয়া যাবে এই নতুন ধরনের মাংস। আপাতত তাই অপেক্ষা জারি!