Imran Khan: সাইফার মামলায় জেলে ইমরান খান! আর কি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশ নিতে পারবেন তিনি?
- Published by:Rachana Majumder
- trending desk
- Written by:Trending Desk
Last Updated:
পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ইমরান খান। এখন মনে করা হচ্ছে ১০ বছর কারাভোগের পরও ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশির নির্বাচনে লড়ার পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
করাচি: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে পাকিস্তানের আদালত। ইমরান খান বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী। সেখানেই এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ইমরান। বিশেষ আদালতের এই রায় তাঁর কাছে বড় ধাক্কা। কারণ ১০ বছরের কারাদণ্ড হওয়ায় ভোটে লড়ার রাস্তা আপাতত বন্ধ হয়ে গেল বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা। ইমরানের খানের বিরুদ্ধে দেশের কূটনৈতিক তথ্য ফাঁসের অভিযোগ এনেছিল পাকিস্তানের ফেডারেল তদন্ত সংস্থা। তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেছিলেন ইমরান খান স্বয়ং।
পাকিস্তানের বিশেষ আদালত গত মাসে নতুন করে সাইফার ট্রায়াল শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বর এই মামলায় ইমরান খান এবং শাহ মাহমুদ কুরেশিকে দ্বিতীয়বার অভিযুক্ত করা হয়। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী, দুজনেই বর্তমানে জেলে রয়েছেন। অক্টোবরে এই মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রথমবার অভিযোগ আনা হয়। তবে দুজনের কেউই দোষ স্বীকার করেননি।
advertisement
advertisement
কূটনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন যে বর্তমানে দুর্ভাগ্যের অতলে চলিয়ে যাচ্ছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন ইমরান খান। এখন মনে করা হচ্ছে ১০ বছর কারাভোগের পরও ইমরান খান ও শাহ মাহমুদ কুরেশির নির্বাচনে লড়ার পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবে তাঁদের দুজনেরই বিশেষ আদালতের সিদ্ধান্তকে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ রয়েছে। তারপরও সেনাবাহিনীর সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণে উচ্চ আদালতে গিয়েও ইমরান খান তেমন কোনও সুবিচার পাবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখা উচিত হবে যে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক আগে, ইমরানের দল পিটিআই থেকে নির্বাচনী প্রতীক ব্যাটও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রযুক্তিগত কারণ দর্শিয়ে। ইমরান খান ২০২৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হন। এরপর ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
advertisement
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির বিপুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ আপাতত এই যে তাঁরা দেশের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছেন। এটিই প্রকৃতপক্ষে পোশাকি ভাষায় সাইফার মামলা হিসাবে পরিচিত। ইমরান খানকে দেশের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ইমরান খান জনসভায় একটি স্লিপ দেখিয়ে বলেছিলেন যে আমেরিকায় পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত আসাদ তাঁকে এটি দিয়েছিলেন। প্রকাশ্য জনসভায় সেই স্লিপ নাড়াতে নাড়াতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে তাঁর সরকারকে পতনের ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রটি করেছে তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আমেরিকার সহযোগিতায়।
advertisement
আসলে, কোনও রাষ্ট্রদূতের পাঠানো কোনও তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার কথাও নয়, ইমরান খান সেই ভুলটাই করেছিলেন। ইমরান খান জনসভায় অভিযোগ করেন যে তৎকালীন সেনাপ্রধান কামার বাজওয়াও তাঁর সরকারকে পতনের ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। এই প্রসঙ্গে বলে রাখা উচিত হবে যে কোনও রাষ্ট্রদূতের পাঠানো এই ধরনের তথ্য গোপনীয় তথ্যের আওতায় আসে। পাবলিক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই ধরনের তথ্য সাধারণ মানুষের সঙ্গে শেয়ার করা যায় না। এটি দেশের গোপনীয়তা লঙ্ঘন বলে মনে করা হয়। ফলে, বিষয়টি এমন একটা পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি পাবলিক ফোরামে রাষ্ট্রদূতের কেবলের তারিখ এবং নম্বর শেয়ার করেছেন। এখন এই মামলায় শাস্তি পাওয়ার পর শুধু আইনি নয়, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জও বেড়েছে ইমরান খানের। কেন না, রাজনৈতিক দিক থেকেও এই পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়।
advertisement
ইমরান খানকে ফলে ইতিমধ্যেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইমরান খান আপাতত তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন। শুধু তাই নয়, তাঁকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ কারণে তিনি যেখানেই নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন, অযোগ্যতার কারণ দেখিয়ে তা বাতিল করা হয়েছে। তোষাখানা মামলায় তাঁর সাজা স্থগিত হয়ে জামিন অবশ্য তিনি পান। কিন্তু, জেল থেকে বেরিয়ে আসার আগেই সাইফার মামলায় সাজা হওয়ায় তাঁকে আবার গ্রেফতার করা হয়। পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির অভিযোগ, ইমরান খান কখনওই রাষ্ট্রদূতের কেবল ফেরত দেননি। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও হারিয়ে গিয়েছে কেবলটি। তবে জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান খান জানিয়েছেন যে, তিনি নিজেই কেবলটি পিএমওতে রেখে গিয়েছেন, দোষ তিনি স্বীকার করেননি।
advertisement
এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক ভাইরাল অডিও, যা তাঁর ১০ বছরের কারাদণ্ডের কারণও হয়ে উঠেছে। এক অডিওতে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাঁর সচিব ও মন্ত্রিপরিষদের মন্ত্রীদের সঙ্গে আলোচনা করতে শোনা গিয়েছে। এই অডিও ভাইরাল হয়েছিল। অডিওতে তিনি বলছিলেন কীভাবে সাইফার মামলাকে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগানো যায়। তাঁর এই অডিও একই সঙ্গে সাইফার মামলায় শাস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও ইমরান খান এবং তাঁর দল পিটিআই অভিযোগ করে চলেছে যে সমস্ত মামলা তাঁদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্রের অংশ।
advertisement
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় এই যে ইমরান খানের মামলা চলার কালে একই সময়ে ২০১৯ সালে দেশ ছেড়ে যাওয়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পাকিস্তানে ফিরে এসেছেন। তাঁকে আবার এই পদে দেখা যেতে পারে কি না, সেই উত্তর অবশ্য ভবিষ্যতই দেবে।
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,Kolkata,West Bengal
First Published :
February 03, 2024 11:41 AM IST