রহস্যময় এই গ্রামে সকলের ঘুম ভাঙে ৫-৬ দিন পর , কারণ জানলে চমকে উঠবেন
- Published by:Simli Raha
Last Updated:
শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও এই ঘুমের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এমনকি ঘুম ভাঙলেও থেকে যায় অনেক রকম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।
#কাজাখস্তান: কাজাখস্তানের (Kazakhstan) একটি রহস্যময় গ্রাম কালাচি (Kalachi) । যে গ্রামের নাম বহুবার সংবাদ শিরোনামে এসেছে। কারণ এখানে বেশকিছু গ্রামবাসী প্রায় ছয়দিন একটানা ঘুমিয়ে পড়েছিল বলে জানা যায়। আর তাদের এই ঘুমিয়ে পড়ার ঘটনাই গোটা বিশ্বকে চিনিয়েছে এই গ্রামকে। শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখিরাও এই ঘুমের হাত থেকে রেহাই পায়নি। এমনকি ঘুম ভাঙলেও থেকে যায় অনেক রকম পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া।
এই উদ্ভট ঘুমের পাশাপাশি সকলের মধ্যে হ্যালুসিনেশন (Hallucination) এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা বৃদ্ধি পায় বলে জানা যায় গ্রামবাসীদের থেকে। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর শিশুরা যেমন তার মায়ের মুখে হাতির শুঁড় গজাতে দেখে তেমনি আবার পুরুষদেরও ওই সময়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরির ইচ্ছা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। চাহিদা পূরণ না হলেই উত্তেজনা চরমে। এই হ্যালুসিনেশন এবং যৌন মিলনের চাহিদা প্রায় ৭ দিন থেকে ১ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
advertisement
একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে প্রায় ১৬০ জন লোক গ্রামে এই অদ্ভুতপরিস্থিতির শিকার হয়েছিল। যাকে পরে 'স্লিপি হোলো' (Sleepy Hollow) নামে অভিহিত করা হয়েছিল। ২০১৪ সালে কমসোমলস্কায় প্রভদা (Komsomolskaya Pravda) নামে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে এই অদ্ভুত ঘটনাটি তদন্ত করা হয়েছিল। সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, অসুস্থ ব্যক্তি সচেতন বলে মনে হয় এবং তাঁরা হাঁটতেও পারেন। তবে হ্যালুসিনেশনের পাশাপাশি আবার অনেকের স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর অনেকে কিছুই মনে করতে পারেননি।
advertisement
advertisement
তবে গ্রামটি যেহেতু সোভিয়েত-যুগের একটি ইউরেনিয়াম খনির কাছে অবস্থিত ছিল, তাই এই বিষয়টিকেও অনেকেই ঘুমের কারণ হিসাবে বিবেচনা করেছেন। ১৯৯০ সালে খনি বন্ধ হলেও এর তেজস্ক্রিয়তাকেই ঘুমের জন্য দায়ী করা হয়। যদিও এর কোন বিজ্ঞানসম্মত কারণ পাওয়া যায়নি এখনও। সমস্যাটি দিন দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজাখস্তান সরকার বিবৃতি দিয়ে এই ঘুমের কারণ হিসাবে জলে বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইডের (carbon monoxide) মাত্রা বৃদ্ধিকেই দাবি করেছে। যার পরে কালাচির কয়েক শতাধিক পরিবার অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়েছিল।
advertisement
পরবর্তীকালে একটি পরীক্ষায় প্রকাশিত হয় যে, গ্রামের জলে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ছিল। তবে কার্বন মনোক্সাইডের ফলেই যে অস্বাভাবিকত্ব, সেই দাবিটিকেও অনেকেই মানতে নারাজ। কাজাখস্তানের নাজারবায়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Nazarbayev University Kazakhstan) প্রফেসর বায়রন ক্রেপও(Byron Crape) দাবি করেছেন যে, এই ঘটনার জন্য কার্বন মনোক্সাইড মূল কারণ ছিল। তিনি মনে করেছিলেন যে ইউরেনিয়াম খনি থেকে অব্যাহত ‘রাসায়নিক’ ভূগর্ভস্থ জল পাম্পের জলে এসেছিল এবং এটিই এই সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে, কালাচিতে মাত্র ১২০ টি পরিবার বাস করে। তাঁরা এখন স্বাভাবিকভাবে ঘুমায় এবং তার পর এখনও পর্যন্ত আজগুবি আর কোনকিছুই দেখা যায়নি।
Location :
First Published :
May 18, 2021 1:37 PM IST