#লন্ডন: চিঠি লেখা, পোস্টকার্ডে বিভিন্ন মেসেজ লিখে পাঠানোর দিন আর নেই বললেই চলে। বর্তমানে কয়েক সেকেন্ডে একটি মেসেজ বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে পৌঁছাতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বিশ্বের যে কোনও মানুষের সঙ্গে সংযোগ সম্ভব। এমন একটি সময়ে যদি কারও পাঠানো পোস্টকার্ড হাতে পড়ে, তা হলে কেমন লাগতে পারে? অবশ্যই অবিশ্বাস্য অনুভূতি হতে পারে। এমনই হল ইংল্যান্ডের ৭৪ বছরের এক বৃদ্ধের সঙ্গে। তিনি খুঁজে পেলেন ৬৬ বছর পুরনো একটি পোস্ট কার্ড।
অরকুট (Orkut), ফেসবুক (Facebook) বা হোয়াটসঅ্যাপের (WhatsApp) জমানারও বহু বছর আগে যখন পোস্টকার্ডে চিঠি লেখাই ছিল একমাত্র মাধ্যম, তখন আজকালকার দিনের ফেসবুক ফ্রেন্ডের মতো পেন ফ্রেন্ড ছিল বহু মানুষের। এক দেশ থেকে অন্য দেশে বার্তা পৌঁছাত ডাকযোগের মাধ্যমে। অনেক সময় অনেক পোস্টকার্ড হারিয়েও যেত। একজনের লেখা, তার পরের পোস্টকার্ডে তার বন্ধুর উত্তর, এ ভাবেই লেখা চলত দিনের পর দিন।
ইংল্যান্ডের ৭৪ বছরের ক্রিস হারমোনেরও ছিল এমনই এক পেন ফ্রেন্ড। যাঁর নাম ফ্রেড কেন্ডাল। ৬৬ বছর আগে তিনি আমেরিকা থেকে ইংল্যান্ডে হারমোনকে একটি পোস্টকার্ডে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। যা হারিয়ে গিয়েছিল যাতায়াতের মাঝেই। দু'জনের কেউই তা খুঁজে পাননি।
কিন্তু সেই পোস্টকার্ডটিই বর্তমানে জায়গা পায় ডোরচেস্টারের ডোরসেটের একটি চ্যারিটি শপে। এখানে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা হয়। Metro, UK-র রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই দোকানের একজন ভলান্টিয়ারের নজরে পড়ে পোস্টকার্ডটি। তিনিই উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন। খোঁজার চেষ্টা করেন পোস্টকার্ড যাঁকে পাঠানো হয়েছে সেই ব্যক্তিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় খুঁজতে খুঁজতে পেয়েও যান হারমোনকে। তার পরই তাঁকে মেসেজ করে এটির কথা জানান।
মেসেজটি পেয়ে বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না হারমোন, যে ৬৬ বছর আগে পাঠানো একটি পোস্ট কার্ড তিনি কখনও খুঁজেও পাবেন। এবং কেউ পোস্ট কার্ডটি তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এতটা প্রচেষ্টা করবেন! তিনি বলেন, আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি আমি কার্ডটি পড়ছি। আমাকে তা পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিল।
হারমোন যখন ৯ বছর বয়সী ছিলেন, তখন সেই পোস্টকার্ডটি তাঁর কাছে পৌঁছানোর কথা ছিল। পোস্ট কার্ডটিতে ফ্রেড লিখেছিলেন, ইতি আঙ্কল ফ্রেড। হারমোনের ১০ বছরের জন্মদিনের শুভেচ্ছাবার্তাও তাতে লেখা ছিল। কিন্তু পোস্টকার্ডটি যখন তিনি হাতে পেলেন, তখন তাঁর বয়স ৭৪। তিনি জানান, ফ্রেডের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল ১৯৭০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু তার পর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
হারমোন জানিয়েছেন, তিনি আগে পিচহেভেনের বার্কলেইস ব্যাঙ্ক হাউজে থাকতেন। সেখানকার ঠিকানাতেই চিঠিটি লেখা হয়েছিল। তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডোরসেটের ওই চ্যারিটি শপটিকে।