‘বাইরে গুলি চলছে, আমি বোধহয় মরে যাব মা’, মাঝরাতে শেষ মেসেজ

Last Updated:

ড়িতে তখন রাত দুটো বেজে ছয় মিনিট ৷ অন্যান্য দিনের মতোই ডিনারের পর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন মিনা জাস্টিস ৷

#অরল্যান্ডো: ঘড়িতে তখন রাত দুটো বেজে ছয় মিনিট ৷ অন্যান্য দিনের মতোই ডিনারের পর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন মিনা জাস্টিস ৷ ফোনে একের পর এক টেক্সট মেসেজ ঢুকতে থাকে ৷ আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় মিনার ৷ কোনওমতে আধো ঘুমে ফোন হাতড়ে দেখেন তাঁর ছেলে এডি জাস্টিস বেশ কিছু অদ্ভুত মেসেজ পাঠিয়েছে তাঁকে ৷
একটায় লেখা, ‘মা আমি তোমাকে খুব ভালবাসি ৷’ আরেকটায় ‘ক্লাবে ওরা গুলি চালাচ্ছে ৷’
গভীর রাতে ছেলের কাছ থেকে পাওয়া এই বিদঘুটে মেসেজগুলোর কোনও মানেই বুঝতে পারেননি মিনা ৷ তখন তাঁর পক্ষে এটা বোঝা সম্ভবই ছিল না যে, কী সর্বনাশ ঘটছে তখন ফ্লোরিডার সমকামী ক্লাব পালসে ৷ সমকাম বিদ্বেষী ওমর মাতিন নামের এক আফগান বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিকের গুলির নিশানায় সেখানে ঝাঁঝরা হয়ে যাচ্ছে সপ্তাহান্তে আনন্দ করতে আসা শতাধিক উল্লাস প্রিয় মানুষ ৷
advertisement
advertisement
মাঝরাতে ছেলে এডির কাছ থেকে একরম মেসেজ পেয়ে প্রথমে তাঁকে ফোন করার চেষ্টা করে মিনা ৷ কিন্ত কোনও উত্তর পাননি ৷ উদ্বিগ্ন প্রৌঢ়া তখন ছেলের ফোনে মেসেজ করে জানতে চান, কি হয়েছে? এডি ঠিক আছে কিনা? এবারে উত্তর আসে, ‘মা আমি বাথরুমে বন্দি ৷ বাইরে গুলি চলছে ৷’
এক ঝটকায় ঘুম উড়ে যায় মিনার ৷ ছেলের কাছে একটাই প্রশ্ন করতে পারেন যে, সে কোথায় আছে? কোথায় হচ্ছে এসব ৷ উত্তর আসে, ‘পালস ক্লাব৷ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পুলিশকে ফোন কর ৷’ ঘড়িতে তখন ০২:০৮ ৷ এডি মেসেজ করে, ‘মা আমি বোধহয় মারা যাবে ৷’
advertisement
i-am-fonna-die2-750x500
আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেননি মিনা ৷ এডি মারাত্মক কোনও বিপদে পড়েছে বুঝে, ছেলেকে বাঁচাতে পাগলের মতো ৯১১-এ ডায়াল করেন ৷ একইসঙ্গে মেসেজে এডিকে আশ্বস্ত করেন, ‘আমি পুলিশকে কল করেছি ৷ তুমি ঠিক আছ তো?’ এডির উত্তর আসে, ‘ওদের বল, আমি বাথরুমে লুকিয়ে আছি ৷’
advertisement
পুলিশকে খবর দেওয়ার পর ছেলের মেসেজের অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না মিনা জাস্টিসের ৷ ততক্ষণে বেশ কিছু এসএমএস চালাচালির পর বুঝে গিয়েছিলেন ছেলে যে ক্লাবে গিয়েছে সেখানে কোনও বন্দুকবাজ হামলা করেছে ৷ পুলিশকে ফোন করেও বিস্তারিত কোনও বিবরণ পাচ্ছিলেন না ৷ তাই বারবার ছেলেকে মেসেজ করছিলেন ৷ জানতে চাইছিলেন, কোন বাথরুমে সে আছে? কারুর কোনও হয়েছে কিনা? পুলিশ এখনও পৌঁছাল কিনা? এরকম অনেক কিছু ৷
advertisement
Capture
এরপর অনেকক্ষণ এডির থেকে কোনও উত্তর আসেনি ৷ আতঙ্কে একের পর এক মেসেজ পাঠাতেই থাকেন মিনা ৷ অনেক পরে এডির ফোন থেকে মেসেজ আসে,‘ বহু লোককে ও মেরেছে ৷ এখন ও বাথরুমেই আছে ৷’ এর পরের মেসেজে ভেসে আসে এডির কাতর আর্তি , ‘ ও সন্ত্রাসবাদী ৷ ও এদিকেই আসছে ৷ আমাকেও মেরে ফেলবে মা ৷ তুমি পুলিশকে তাড়াতাড়ি জানাও ৷’
advertisement
ছেলের কাছাকাছি সন্ত্রাসবাদীর পৌঁছে যাওয়ার বার্তা পেয়ে আতঙ্কে, আশঙ্কায় একরকম উন্মাদ হয়ে যান মিনা ৷ আবার মেসেজ করেন, ‘ও বাথরুমের ভেতর ঢুকে গিয়েছে ?’ ঘড়িতে তখন রাত তিনটে বাজতে আর দশ মিনিট বাকি ৷ এডির মেসেজ আসে ৷ শুধু একটি শব্দ লেখা ‘হ্যাঁ’ ৷
তারপর থেকে কোনও উত্তর পাননি এডির থেকে ৷ না কোনও মেসেজ, না কোনও ফোন ৷ সম্পূর্ণ নৈ:শব্দ এডির তরফে ৷
advertisement
বেসরকারি সংস্থায় অ্যাকাউট্যান্ট পদে কাজ করতেন বছর তিরিশের যুবক, এডি জাস্টিন ৷ অরল্যান্ডোর শহরতলিতে বিশাল বহুতলে ফ্ল্যাট নিয়ে আলাদাই থাকতেন। ছেলে সমকামী তা মিনা জানতেন ৷ এডিকে নিয়ে গর্বের শেষ ছিল না তাঁর ৷ বড়লোক ছেলের সাফল্য নিয়ে প্রতিবেশীদের কাছে গল্প করতেন ৷ সপ্তাহ শেষে আর পাঁচটা ছেলের মতো ক্লাবে পার্টি করতে যেত এডি ৷ মিনা বা এডি কেউই জানতেন না ওই দিনের রাতটা তাদের জন্য কী নিয়ে অপেক্ষা করছে৷
১২ জুন ফ্লোরিডা শহরের সমকামী ক্লাব পালস-এ আফগান বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক ওমর মাতিনের এলোপাথারি গুলিতে প্রাণ হারান ৫০ জন ৷ গুলিবিদ্ধ হন ৫৩ জন ৷ সকালে পুলিশ যখন ৫০ জন নিহতের নামের তালিকা প্রকাশ করেন, তার মধ্যে একটি নাম ছিল এডি জাস্টিস ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
‘বাইরে গুলি চলছে, আমি বোধহয় মরে যাব মা’, মাঝরাতে শেষ মেসেজ
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement