#ঢাকা: ঢাকায় গুলশন রেস্তোঁরা হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলাকারীরা আইএস-এর সদস্য নয় ৷ তারা সবাই বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন জেএমবি-এরই সদস্য ৷ এই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ৷
সংবাদসংস্থা AFP সূত্রে খবর, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলাকারীরা কোনওভাবেই আইএসের সঙ্গে যুক্ত নয় ৷ তাঁর দাবি, হামলার পিছনে রয়েছে ঘরের মাটিতে বেড়ে ওঠা স্থানীয় জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন। জঙ্গিরা প্রত্যেকেও বাংলাদেশি নাগরিক। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, হামলায় দেশীয় অস্ত্র ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা।
এক দশকেরও আগে থেকে বাংলাদেশ সরকার ওই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষণা করেছে ৷
ঢাকায় শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ ঢাকার অভিজাত গুলশন এলাকার একটি কাফেতে হামলা চালায় কয়েকজন জঙ্গি ৷ মুহূর্তের মধ্যে পণবন্দি করে নেওয়া হয় রেস্তোরাঁয় উপস্থিত মানুষদের ৷ হামলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্যুইটারে ট্যুইট করে ঢাকার অভিজাত গুলশান এলাকার রেস্তোঁরা হলি আর্টিজান বেকারিতে দায় নিয়েছে ইসলামিক স্টেট।
#ISIS apparently claims responsibility for the #Dhaka terror attack via Amaq News Agency. Provides no proof at all. pic.twitter.com/iPv3IUvep2
— Aditya Raj Kaul (@AdityaRajKaul) July 1, 2016
এমনকি ইসলামিক স্টেট প্রভাবিত আমাক নিউজ এজেন্সির মাধ্যমে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতিও দেয় তারা। তবে ঢাকায় হামলার পরই ট্যুইটারে প্রকাশিত হয়েছে ৫ সন্দেহভাজন জঙ্গির ছবি। পাঁচজনের নাম আবু মুসলিম, আবু সালমা, আবু মুহারিব, আবু রহিম এবং আবু ওমর। এরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক ও জেএমবি সদস্য বলে জানা গেছে। তারপরই ঢাকার জঙ্গি হামলায় আইএস যোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে, জেএমবি-র কথা বলেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান।
বাংলাদেশ সরকার প্রথম থেকেই দাবি করে আসছে, এই হামলার সঙ্গে ইসলামিক স্টেট কোনওভাবেই যুক্ত নয় ৷
নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত ছয় জঙ্গির ছবি ও নাম প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এই হামলাকারীরা সকলেই অবস্থাপন্ন পরিবার থেকে এসেছে ও অভিজাত স্কুলে পড়াশোনা করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার ৷ কেন ধনী পরিবারের এই শিক্ষিত সদস্যরা আইএসের সদস্য হতে গেল সে প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আইএস -এ যোগদান তো এখন একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷
হামলার পর আইএস ছাড়াও একাধিক জহ্গি সংগঠন গুলশন হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় ৷ আনসারুল্লা বাংলা দল দিয়ে শুরু হয় দায় স্বীকার ৷ তারপর একে একে হামলার দায় নেয় জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ, ইসলামিক বাংলা মুজাহিদ। এতেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে তদন্তকারীরা ৷ তবে জঙ্গিরা যেভাবে জামাত নেতার মুক্তির দাবিতে অনড় ছিল, তা দেখেই বাংলাদেশ সরকারের দাবি জঙ্গিরা কোনওভাবেই আইএস জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত নয় ৷ তারা জামাতের সদস্য ৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে পরিষ্কার, গুলশানের হামলার সঙ্গে আইএস যোগ ঝেড়ে ফেলতে মরিয়া বাংলাদেশ প্রশাসন। কিন্তু কেন এমন মরিয়া ভাব ঢাকার? কূটনীতিবিদদের মতে, এর কারণ বিদেশি জঙ্গি সংগঠনের অস্তিত্ব কখনই স্বীকার করতে চায় না বাংলাদেশ ৷ বাংলাদেশের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশগুলিতে হামলার ঘটনাও অস্বীকার করেছে তারা ৷ নয়াদিল্লির বার বার বোঝানো সত্ত্বেও এবিষয়ে অনড় ঢাকা ৷ কূটনৈতিক কারণেই বিদেশি যোগ মেনে নেওয়া অস্বস্তির কারণ বাংলাদেশের ৷
হামলায় ৬ জঙ্গি, ১৭ জন বিদেশি নাগরিক ও দুই পুলিশ কর্তা সহ মৃতের সংখ্যা ২৮ ৷ কোরান বলতে না পারায় শুক্রবার রাতেই রেস্তোরাঁ ভিতরে ১১ জনই বিদেশি নাগরিক সহ ২০ জনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে জঙ্গিরা ৷ মৃতদের মধ্যে একজন ভারতীয় ও তিনজন বাংলাদেশি নাগরিকও রয়েছেন ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bangladesh, Bangladesh Terror, Dhaka Terror Attack, Dhaka Terrorist Attack, Jamat E Ishlami, Jamat Ul Mujahiddin, Terrorist Attack