মা দুর্গাকে দেখার অনুমতি ছিল না সকলের, সেই রাগ থেকেই জন্ম হল বারোয়ারি দুর্গা পুজোর

Last Updated:
#কলকাতা: সালটা ছিল ১৭৯০। আকাশে পেঁজা তুলোর মত মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে । কাশফুল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বন । এমনই এক আশ্বিনের শারদ বিকেলে বসে পুকুর পাড়ে বসে গল্পে মজলিস ছিলেন ১২ জন বন্ধ‌ু। হরেক রকম আড্ডার বিষয়ে আলোচনার মাঝেই উঠে এসেছিল সেকালের কলকাতায় বাবুদের দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গ । ক্ষোভ ফেটে বেরিয়ে এল সকলের যেন সকলের চোখে মুখে ! আর সেই ক্ষোভ থেকেই জন্ম নিল চিরপরিচিত বারোয়ারি পুজো ।
সেকালের বাবুদের বাড়িতে ধুমধাম করে দু্র্গাপুজো হত । আলোর রোশনাই, ঢাকের আওয়াজে গমগম করত গোটা এলাকা । কিন্তু সেই দুর্গা মা-কে দেখার অধিকার ছিল না সবার । দারোয়ান দাঁড়িয়ে থাকত বাড়ির সদর দরজায় । হাতে চাবুক নিয়ে । অতিথিদেরই একমাত্র অধিকার ছিল এই দুর্গাঠাকুর দেখার । সাড়ম্বরে স্বাগত জানানো হত তাঁদের । যদি ভুলবশত কেউ ঢোকার চেষ্টা করত বাবুদের বাড়িতে, তাহলেই পিঠে পড়ত চাবুকের মার । ঠাকুর দেখতে গিয়ে তাই মার খেয়ে ফিরে আসত গরীব-দুখীজনেরা ।
advertisement
সেই রাগ-দু্:খ-ক্ষোভ থেকেই জন্ম নিল বারোয়ারি পুজো । ১৯৭০ সালে হুগলির গুপ্তিপাড়ায় ১২ জন ব্রাহ্মণ বন্ধ‌ু মিলে পুজো করবেন বলে ঠিক করেন । সেই শুরু....
advertisement
বারোয়ারি শব্দটির উত্ পত্তি "বারো" ও "ইয়ার" শব্দদুটি থেকে । ১২ জন বন্ধ‌ু প্রতিবেশীদের থেকে চাঁদা তুলে আয়োজিত হয় সেই পুজো । এভাবেই সেই ১২ বন্ধ‌ুর পুজোই লোকমুখে "বারোয়ারি পুজো" নামে পরিচিত ।
advertisement
baroyari
প্রথম দিকে দুর্গাপুজা শুধুমাত্র কলকাতার ধনীদের বাড়িতেই হত । কিন্তু বারোয়ারি পুজোর রেওয়াজ চালু হতেই ধীরে ধীরে কমতে থাকে ব্যক্তি উদ্যোগে দুর্গাপুজোর চল । অপরদিকে, পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বারোয়ারি পুজোর চল । যেখানে ঢুকতে বাধা ছিল না কোনও গরীব দু:খীর ।
advertisement
ধনীর অঙ্গন ছেড়ে পুজো নেমে এল জন সাধারণের কাছে । সেই শুরু.. তবে, হুগলির গুপ্তিপাড়ার আদর্শ অনুসরণ করে মফঃস্বলে বেশ কিছু এলাকাতেও শুরু হয় বারোয়ারি পুজো । কিন্তু বারোয়ারি পুজোর ঢেউয়ের আঁচ কলকাতায় এসে পৌঁছতে সময় লেগেছে আরও ১০০বছর ।
কলকাতার সবচেয়ে পুরোনো দুর্গাপুজোটি হয় বড়িশার সাবর্ণ রায়চৌধুরি বাড়ির পুজো । তবে, সেটি বারোয়ারি পুজো বলে একেবারেই গণ্য করা হয়নি । কলকাতায় এ ধরনের পুজো প্রথম শুরু হয় কাশিমবাজারের রাজা হরিনাথের বাড়িতে । পরে আর্থিক অনটন-সহ আরও বেশ কিছু কারণে ওই এলাকার বেশ কিছু মানুষ চাঁদা তুলে পুজো করতে শুরু করেন ১৯১০ সাল থেকে । ভবানীপুরের সনাতন ধর্মোত্সাহিনী সভার এই পুজোয় বহু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন । তারপর থেকেই এটি বিখ্যাত বারোয়ারি পুজো নামেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে । এখন আর প্যান্ডেল বেঁধে নয় । বলরাম বসু ঘাটের উপরে জোড়া শিবমন্দিরের পাশেই তৈরি করে নেওয়া হয়েছে মঞ্চ । তবে, বারোয়ারি পুজো হলেও সাবেকি রীতি বজার রেখেই এই মা’কে পুজো করা হয় এই মণ্ডপে ।
advertisement
ভবানীপুরের সনাতন ধর্মোত্সাহিনী সভার পাশাপাশি আরও বেশ কিছু বারোয়ারি পুজো আয়োজিত হয় শহরের বুকে । ১৯১১ সাল থেকে শুরু হয় শ্যামপুকুর আদি সার্বজনীন দু্র্গোত্সব, শ্যামবাজারের শিকদারবাগান, ১৯১৯ সালে নেবুবাগান অর্থাৎ যেটি বর্তমানে বাগবাজার সার্বজনীন । এছাড়াও আরও বেশ কিছু সার্বজনীন পুজো আজও হয়ে চলেছে তিলোত্তমায় ।
তবে, বারোয়ারি পুজোয় মাঝখানে কিছুটা ভাটা পড়েছিল ঠিকই । তখনই শুরু হয় সার্বজনীন দুর্গোত্সব । ফারাক সামন্যই । কিন্তু ফ্ল্যাট কালচার চালু হওয়ার ফলে আবারও শহর কলকাতায় ফিরে এসেছে বারোয়ারি পুজো । এক একটি আবাসনের বাসিন্দারা একসঙ্গে মিলে এই দুর্গাপুজো করে থাকেন । যেটি বারোয়ারি পুজো নামেই পরিচিত ।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
মা দুর্গাকে দেখার অনুমতি ছিল না সকলের, সেই রাগ থেকেই জন্ম হল বারোয়ারি দুর্গা পুজোর
Next Article
advertisement
সাউথ ব্লক ছেড়ে নতুন ঠিকানায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর! সেন্ট্রাল ভিস্তায় গড়ে উঠল ‘সেবাতীর্থ’ কমপ্লেক্স, অমিত শাহ বললেন 'সোনালি যাত্রাপথ'!
সাউথ ব্লক ছেড়ে নতুন ঠিকানায় প্রধানমন্ত্রীর দফতর! সেন্ট্রাল ভিস্তায় গড়ে উঠল ‘সেবাতীর্থ’
  • প্রধানমন্ত্রীর দফতর সাউথ ব্লক ছেড়ে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের নতুন কমপ্লেক্সে যাচ্ছে.

  • সেবাতীর্থ কমপ্লেক্সে থাকবে ক্যাবিনেট সচিবালয় ও NSA অজিত ডোভালের দফতর.

  • সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের অংশ হিসেবে নতুন প্রশাসনিক পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে.

VIEW MORE
advertisement
advertisement