Independence Day 2020: অস্টিন গাড়িতে রায় বাহাদুরের বাড়িতে আসতেন নেতাজি, চার ঘণ্টার ভাষণ দিয়েছিলেন রানিগঞ্জে
- Published by:Debamoy Ghosh
- news18 bangla
Last Updated:
সীতারামপুরের রায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজিরও। রায় বাহাদুরের বাড়িতে এসে সময় কাটিয়েছেন নেতাজি (Independence Day 2020)।
#আসানসোল: স্বাধীনতা আন্দোলন ও নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বাঙালির কাছে সম্ভবত সমার্থক শব্দ। হয়ত দেশবাসীর কাছেও। বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করার অন্যতম কারণ নেতাজি। স্বাধীনতা আন্দোলনের এই নায়ক দেশবাসীর কাছে আজও অমর। আজাদ হিন্দ ফৌজের সর্বাধিনায়ক দেশের স্বাধীনতা আন্দোলকে অন্য দিশায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
সুভাষচন্দ্র বসুর মহানিষ্ক্রমন ভারতের বুকে ব্রিটিশ শাসনের পতনের বীজ বপন করেছিল। দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি আসানসোল হয়ে পৌঁছেছিলেন গোমো স্টেশনে। তারপর সেখান থেকে ট্রেন ধরেছিলেন ব্রিটিশ সৈন্যের চোখে ধুলো দিয়ে। তবে তার আগেও অধুনা পশ্চিম বর্ধমানের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ছিল নেতাজির। নিউজ ১৮ লোকালের পাতায় উঠে এসেছে সেই গল্পই।
advertisement
আসানসোলের সীতারামপুরের বেলুরই গ্রাম। সেখানকারই অন্যতম অভিজাত বাসিন্দা রায় পরিবার। রায় পরিবারের দুর্গাপুজো ও দশমীতে কামান দাগার গল্প হয়তো অনেকেই জানেন। কিন্তু রায় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজিরও। রায় বাহাদুরের বাড়িতে এসে সময় কাটিয়েছেন নেতাজি। বেলুরইয়ের রায় পরিবারের কাছে সংরক্ষিত হয়েছে নেতাজির লেখা একটি চিঠি। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে নেতাজির কলকাতার বাড়ির ঠিকানা। সুভাষ চন্দ্র বসু এসে যে চেয়ারে বসেছিলেন, সেই চেয়ারটিও সংরক্ষণ করা হয়েছে পরম যত্নে। তবে এই বিষয়ে বিশেষ মুখ খুলতে চান না রায় পরিবারের সদস্যরা। নেতাজির স্মৃতি রায়বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যেই সীমিত রাখতে চান তারা।
advertisement
advertisement
জানা গিয়েছে, সোনার বাংলা কটন মিলের বোর্ড অফ ডিরেক্টরর্সের সদস্য হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়েছিলেন নেতাজি। চিঠিটি লেখা হয়েছিল সীতারমপুরের জমিদার রায় সাহেব নকুল চন্দ্র রায়কে। চিঠিটি যেদিন রায় বাহাদুর হাতে পেয়েছিলেন, সেদিন রায়বাড়িতে পদার্পন করেছিলেন নেতাজি। চিঠি পাঠানোর তারিখ ছিল ১৯৪০ সালের ১৬ জুন। সেদিনই অস্টিন গাড়িতে করে নেতাজি এসেছিলেন বেলুরইয়ের রায় বাড়িতে। বাড়ির নীচের তলায় একটি কাঠের চেয়ারে বসেছিলেন।
advertisement
একটি ৪/৬ ইঞ্চির কাগজে চিঠিটি লেখা হয়েছিল। সেখানে প্রেরকের ঠিকানা ইংরেজিতে টাইপ করে লেখা আছে। ঠিকানা দেওয়া আছে ‘৩৮/২, এলগিন রোড, ক্যালকাটা’। যে বাড়িটি বর্তমানে সংরক্ষিত। চিঠির নীচে কালো কালিতে হস্তাক্ষর রয়েছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের।
তবে এই চিঠি লোকচক্ষুর আড়লেই রেখে দিয়েছেন রায় পরিবারের বর্তমান সদস্যরা। খুব সযত্নে নেতাজির স্মৃতি মনের মনিকোঠায় রেখে দিয়েছেন তাঁরা।
advertisement
নেতাজি যে অস্টিন গাড়িটি ব্যবহার করতেন, তা বর্তমানে সংরক্ষিত রয়েছে। ইতিহাসবিদদের গবেষণা মতে, ১৯৩০ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত এই গাড়ি ব্যবহার করেছিলেন তিনি। ঝাড়খণ্ডের অধিকাংশ জায়গা এবং আসানসোল সংলগ্ন জায়গাগুলিতে এই অস্টিন গাড়ি নিয়েই ঘুরতেন সুভাষ চন্দ্র বসু। নেতাজির ব্যবহৃত এই অস্টিন গাড়িটি বর্তমানে ধানবাদের ভারত কুকিং কোল লিমিটেডের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
advertisement
এ ছাড়াও নেতাজি বেশ কয়েকবার এসেছিলেন রানিগঞ্জে। জানা যায়, তৎকালীন রানিগঞ্জ পুরসভার মেয়র জ্যোতিষ চন্দ্র ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল নেতাজির। জ্যোতিষ চন্দ্র ঘোষের মাধ্যমে বিপ্লবীদের সাহায্যের কাজ চলত। সেখানে অনেকবার এসেছেন গান্ধিজি, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস থেকে শুরু করে বহু স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক।
স্থানীয় ইতিহাস গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৩৮ সালে একটি সমাবেশে যোগ দিতে রানিগঞ্জে এসেছিলেন নেতাজি। রানিগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কাছে একটি মাঠে চার ঘণ্টা ব্যাপি জনসমাবেশে ভাষণ দেন নেতাজি। তার পর ভাষণ শেষে মাঠ সংলগ্ন রানিগঞ্জ স্কুলপাড়ার একটি বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানে রাত্রিযাপন করে পরদিন নেতাজি রওনা দেন পুরুলিয়ার দিকে।
advertisement
সবমিলিয়ে ইতিহাস গবেষকদের মতে, অধুনা পশ্চিম বর্ধমান জেলা বারবার রসদ জুগিয়েছে স্বাধীনতার আন্দোলনে। আজও শহরের অনেক জায়গায় লুকিয়ে রয়েছে স্বাধীনতা আন্দোলেনর গৌরবময় স্মৃতি। বাঙালির গর্ব নেতাজির সঙ্গে এই জেলার নিবিড় যোগাযোগের অমর কাহিনি আজও সমানভাবে অমলীন।
Nayan Ghosh
view commentsLocation :
First Published :
August 13, 2021 10:39 PM IST