Independence Day: স্বাধীনতা সংগ্রামে দুর্গাপুরের অসীম গুরুত্ব, ভবানী পাঠককে মনে আছে?
- Published by:Suman Biswas
- news18 bangla
Last Updated:
Independence Day: ভবানী পাঠকের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে তৎকালীন দুর্গাপুরের নাম। ঘন জঙ্গলে ঢাকা দুর্গাপুর একটা সময় ছিল ভবানী পাঠকের রাজত্ত্ব।
#নয়ন ঘোষ: স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে বর্তমান দুর্গাপুরের মিল খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন। তবে জমিদার দুর্গাচরণ চট্টোপাধ্যয়ের প্রতিঠিত দুর্গাপুর জড়িত স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে। স্বাধীনতা ইতিহাসের চর্চিত একটি নাম ভবানী পাঠক। যিনি ব্রিটিশদের লুট করে, গরিবদের ত্রাতা রূপে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। ভবানী পাঠকের সঙ্গে ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে রয়েছে তৎকালীন দুর্গাপুরের নাম। ঘন জঙ্গলে ঢাকা দুর্গাপুর একটা সময় ছিল ভবানী পাঠকের রাজত্ত্ব। তারপর জঙ্গলে ঢাকা দুর্গাপুরে রয়ে গিয়েছে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বহু স্মৃতি।
সন্যাসী বিদ্রোহের অন্যতম চরিত্র হলেন ভবানী পাঠক। যাদের কার্যকলাপ মূলত ছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন গ্রামে। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুরে একটি চা বাগানে রয়েছে দেবী চৌধুরানী ও ভবানী পাঠকের মন্দির। ইতিহাসে বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে, এই দুইজন মূলত ডাকাতি করতেন দুষ্টের দমন করতে। ইংরেজদের সংগৃহীত খাজনা লুট করে রবিনহুডের কায়দায় বিলিয়ে দিতেন গরিবদের মধ্যে।
কিন্তু এখানে প্রশ্ন উঠবে, তাহলে ভবানী পাঠক দুর্গাপুরে এলেন কোথা থেকে ? ইতিহাসবিদদের মতে, দেবী চৌধুরানি যে বজরা নিয়ে ডাকাতি করতে যেতেন, সেই বজরা নিয়ে ভেসে এসে দামোদরের পাড়ে গভীর জঙ্গলে আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে এই জায়গা থেকেই নিজের কাজ চালিয়ে যেতেন ঐতিহাসিক দুই চরিত্র ভবানী পাঠক ও দেবী চৌধুরানি।
advertisement
advertisement
বর্তমান দুর্গাপুরের অম্বুজা কলোনিতে রয়েছে ভবানী মাতার মন্দির। এই মন্দিরটি ভবানী পাঠকের মন্দির বলে জনশ্রতি রয়েছে। একটা সময় এই মন্দিরে এসে আত্মগোপন করেছেন বহু স্বাধীনতা সংগ্রামী। এমনকি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর এখানে এসে রাত্রিযাপনের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কারণ স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় দুর্গাপুর সংলগ্ন রাণীগঞ্জে এসে বহুবার থেকেছেন তিনি। ফলে ইংরেজদের চোখে ধুলো দিতে জঙ্গলে ঢাকা এই জায়গায় আত্মগোপন করে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করেন অনেক অনেক ইতিহাস গবেষক।
advertisement
ভবানী পাঠকের কালী মন্দিরের পাশেই রয়েছে একটি ত্রিমুখী সুড়ঙ্গ। যার একটি দিক নির্দেশ করে ভবানী মাতার মন্দিরের দিকে, একটি দামোদরের দিকে এবং অন্যটি মন্দিরের পেছনে অবস্থিত ইছাই সরোবরের দিকে। ইংরেজ সেনাদের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে এই গুপ্ত সুড়ঙ্গটি তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। যা ব্যবহৃত হত চোর কুঠুরি হিসেবেও।
advertisement
বর্তমানে সুড়ঙ্গটির ৩০ মিটার মতো অংশ সুরক্ষিত রয়েছে। জানা যায়, সুড়ঙ্গটি বেলে পাথরের তৈরি। ইতিহাসবিদদের মতে, স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় আত্মগোপন ও পলায়নের জন্য এই সুড়ঙ্গটি ব্যবহার করতেন ভবানী পাঠক ও অন্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। তবে এই সুড়ঙ্গটির নির্মান হয়েছিল তারও অনেক আগে। সম্ভবত বর্গি আক্রমনের হাত থেকে বাঁচতে রাঢ়বঙ্গের রাজা ইছাই ঘোষের আমলে এই সুড়ঙ্গের নির্মান করা হয়।
advertisement
যদিও দু্র্গাপুরে ভবানী পাঠকের মন্দির ও সুড়ঙ্গটি নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। তবে স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ইতিহাস আজও লুকিয়ে রয়েছে ভবানী পাঠকের মন্দির চত্ত্বরে। আজও ঝা- চকচকে আলোর মাঝে এই মন্দির জানান দেয়, অন্ধকার জঙ্গলে ভবানী পাঠকের লড়াইয়ের। অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর আন্দোলনের, আত্মগোপনের গল্প বুকে নিয়ে, স্বাধীনতা ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ভবানী পাঠকের মন্দির ও সংলগ্নটি সুড়ঙ্গটি।
view commentsLocation :
First Published :
August 13, 2021 6:54 PM IST