সাড়ে চারশো বছরের প্রথা মেনে আজও দুর্গা পুজো হচ্ছে ঝাড়গ্রামের গুপ্তমনি মন্দিরে
Last Updated:
কথিত আছে, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে গুপ্ত অবস্থায় ছিলেন উমা। গোপন-পথ পাহারায়।
#ঝাড়গ্রাম: কেউ বলেন বনদেবী। কারও কাছে বনদুর্গা। এখানে পুজো হয় পাথরে। ব্রাহ্মণ পুরোহিত নন। শবরদের দুর্গা পুজো পান শবরদের হাতেই। প্রায় সাড়ে চারশো বছরের প্রথা মেনে আজও পুজো হচ্ছে ঝাড়গ্রামের গুপ্তমনি মন্দিরে। কথিত আছে, ঝাড়গ্রামের জঙ্গলে গুপ্ত অবস্থায় ছিলেন উমা। গোপন-পথ পাহারায়। মহারাজ মল্লদেব অথবা শবর অধিপতি দেবীর নাম দেন গুপ্তমনি। ঝাড়গ্রামের ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে গুপ্তমনিতে মিথ-গল্পের মিলমিশে এক অন্য পুজোর গল্প।
জঙ্গল ঘেরা রাজপ্রাসাদ। রাজস্ব ও রাজ্যরক্ষায় গুপ্তপথ তৈরি করেন ঝাড়গ্রামের রাজা নরসিংহ মল্লদেব। গুপ্তপথে অতর্কিত হামলায় বহু যুদ্ধও জয় করেন মল্লরাজ। তবে যাদের হারিয়ে মল্লদেবের এত প্রতিপত্তি, সেই শবরপতি নন্দ ভুক্তা আবিষ্কার করে ফেলেন সেই পথ। সেখান থেকেই গল্পের শুরু। রাজার হারিয়ে যাওয়া হাতির খোঁজ মেলে গুপ্তপথের সামনে। গাছের লতাপাতা দিয়ে বাঁধা রাজহস্তি। মল্লদেব বোঝেন, শবরপতি নন্দ ভুক্তা হদিশ পেয়ে গিয়েছেন গুপ্তপথের। তখনই সন্ধির কৌশল। যদিও এ গল্পে জড়িয়ে যায় স্বপ্নাদেশের মিথ।
advertisement
বুদ্ধিমান রাজা জঙ্গলের ওই গোপন পথ রক্ষার দায়িত্ব দেন শবরদেরই। বীর শবররাই বুক দিয়ে আগলে রাখেন রাজমহল। সেই থেকে শুরু গুপ্তমনির পুজো। এখানে পুজো হয় পাথরের। যে পাথর আড়াল রেখেছে গুপ্তপথের। ওই পাথরের উপরই ঘট বসিয়ে হয় পূজার্চনা। এই মন্দিরে চন্ডীপাঠ হয় না। যে যেভাবে পারেন , সেভাবেই পুজো দেন। মন্দিরে জ্বলে শুধুই মোমবাতি আর প্রদীপ। স্থানীয়দের দাবি , মন্দিরের ভিতর বহুবার বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হলেও,টেকেনি তা। প্রাচীন মন্দিরের শরীর জুড়ে নানা পৌরাণিক ছবি। রহস্যে ঢাকা গুপ্তমনিতে এখন আগমনীর সুর।
advertisement
Location :
First Published :
September 11, 2019 9:09 PM IST

