বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ি, ক্ষীরপাইয়ে ভট্টাচার্যদের জমাটি পুজো
Last Updated:
#পশ্চিম মেদিনীপুর: প্রাচীন হলেও, মাহাত্ম্য একটাই। বিশেষত্ব আসলে নামে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ির পুজো বলে কথা। জৌলুসহীন পুজোয় আজও ঐতিহ্যই শেষকথা। ধূসর ঠাকুরদালান। খসে পড়া পলেস্তরার মধ্যেই পাথরের মূর্তিতে দুর্গার আবাহন পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষীরপাইয়ের ভট্টাচার্য পরিবারে।
চন্দ্রকোনার ক্ষীরপাই কাছারি বাজারের শত্রুঘ্ন ভট্টাচার্যের একমাত্র মেয়ে দীনমণি দেবীর সঙ্গে বিয়ে হয় ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামের ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সালটা ১৮৩৫ সালের ২০ জৈষ্ঠ্য। ঈশ্বরচন্দ্র তখন পনের বছরের কিশোর। দীনমণির বয়স নেহাতই ন’য়। ভট্টাচার্য পরিবারের দাবি, বিয়ের পর বেশ কয়েকবার শ্বশুরবাড়িতে এসেছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বিশেষ করে পুজোয় শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের সঙ্গে আড্ডা তাঁর বিশেষ পছন্দের ছিল।
advertisement
তখনও ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্যাসাগর হননি। নেহাতই কিশোর, লড়াই চালাচ্ছেন অভাবের সঙ্গে। শিখছেন জীবনের পাঠ। সময় বদলাচ্ছেন। সেই দিনের কিশোর পরবর্তীতে বাংলার সবচেয়ে আধুনিক মানুষ হবেন। অধ্যক্ষ হবেন সংস্কৃত কলেজের। হবেন সমাজ সংস্কারক। অনেক পেছুটান উপেক্ষা করে এগিয়ে যাবেন। বাংলার সমাজকে, ভাষাকে আধুনিক করতে।
advertisement
হরগোবিন্দ দলুই, বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা কমিটির সদস্য। জীবনীতে ক্ষীরপাইয়ের শ্বশুরবাড়ির কথা লেখা থাকলেও, দুর্গাপুজোর উল্লেখ নেই।
advertisement
তাতেই বা কি আসে যায়। তবু বিদ্যাসাগরের নামেই পুজোর বাড়বাড়ন্ত। এত বছরেও তার ব্যতিক্রম নেই। পুরোন মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছে নতুন মন্দির। পাথরের মূর্তিতে বছরভর পুজোর নিয়ম। আগে অন্নভোগ হলেও, আর্থিক কারণে এখন চিঁড়ে ভোগ হয়। তবে পুজোর কদিন দুর্গার জন্য এলাহি আয়োজন।
কৌলিক প্রথায় পুজোর নিয়ম। মহালয়ার পরদিন থেকে পুজো শুরু। সপ্তমী থেকে নবমী। পাঁঠা ও চালকুমড়ো বলির প্রথা পরিবারে।
advertisement
বিদ্যাসাগরের শ্বশুরবাড়ি বলে কথা। কৈশোরের ঈশ্বরচন্দ্র হয়তো আসতেন এখানে। বড় হয়ে হয়তো এসেছেন, নয়তো আসেননি। তাতে অবশ্য ক্ষীরপাইয়ে ভট্টাচার্য পরিবারে পুজোর ঐতিহ্যে এতটুকুও টান ধরছে না। দূর গাঁয়ের দুগগা হয়েই এখনও আরাধ্যা ভট্টাচার্যদের।
নিউজ 18 বাংলা, পশ্চিম মেদিনীপুর
Location :
First Published :
October 01, 2018 8:23 PM IST