স্বামীকে সাজিয়ে অন্য মহিলার কাছে রাতে পাঠানোই স্ত্রীর কাজ! এমনই ছিল নিয়ম!
Last Updated:
#কলকাতা: শুরু হয়ে গিয়েছে নতুন বাংলা বছর। পয়লা বৈশাখও পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু জানেন কি নববর্ষের আগের রাতে স্বামীকে সাজিয়ে রক্ষিতার বাড়িতে পাঠাতেন স্ত্রী। চৈত্র সংক্রান্তির সন্ধ্যায় বাবু যাবেন রক্ষিতার বাড়ি। যাওয়ার আগে বাবুর কখন কি লাগবে তা জোগান দেওয়ার দায়িত্ব বিবির। পান থেকে চুন খসলেই আর রক্ষে নেই। গালাগাল তো শুনতে হবেই, এমনকী মারও জুটতে পারে! তাই বিবিকে যত্ন করে সাজিয়ে দিতে হবে বাবুকে। নইলে আর রক্ষে নেই। যদি পান থেকে চুন খসে তাহলেই বাবু রেগে বলবেন,“বাড়ির ‘মেয়েছেলে’টা এটুকু খেয়াল রাখতে পারে না! কী রাজকাজ করে! কিসের জন্য তাহলে বিয়ে করা?” বিবি পড়িমরি করে সব ব্যবস্থা করে বাবুকে রওনা করিয়ে দিতেন রক্ষিতার বাড়ির দিকে।
বাবু সেজেগুজে ফিটন হাঁকিয়ে পৌঁছতেন রক্ষিতার বাড়ি। ফোয়ারা উড়ত বিদেশ থেকে আমদানি করা সুরার বোতলে। চলত সারারাত ফুর্তি। আমোদে আমোদে রাত কেটে হত ভোর। নববর্ষের প্রথম দিন বাবু ফিরতেন বাড়ি। উঠে সোজা নিজের ঘরে। বাবুকে ধরে বিবি বিছানায় শুইয়ে দিতেন। শয্যা নিতেই বাবু ঘুমের দেশে। বাংলা নতুন বছরের প্রথম দিনটা ঘুমিয়েই কাটাতেন বাবু। দুপুরের পর ঘুম ভাঙলে আবার সান্ধ্য মজলিশের তোড়জোড়। সেদিন অর্থাৎ নববর্ষের সন্ধ্যাবেলা আর রক্ষিতার বাড়ি নয়। বাড়ির জলসাঘরে বসত নাচ-গানের আসর। বসত পুরাতনী গান, বৈঠকি কিংবা ধ্রুপদী গানের। আজ বাবুর বাড়িতে মোসাহেবদের ভিড়। বিলাতি সুরার গন্ধে ম ম করছে জলসাঘর। নববর্ষের আগের দিন এতই মদ্যপান হত যে, বাবুর গতরাতের খোঁয়াড়ি কাটত না। তাই নববর্ষের সন্ধ্যায় আর সুরাপান নয়, গড়গড়ার নলে মুখ। ভুকভুক তিনি টানতেন আর ভুরভুর করে তামাকের সুবাস ছড়িয়ে পড়ত গানঘরে। আর বিবিদের জায়গা হত নিজের ঘরে। এভাবেই কলকাতার বাবুরা পয়লা বৈশাখ কাটাতেন। আর বিবিরা এই দিন থেকেই কাঁদতে শুরু করতেন। সারা বছর বাবুর খেয়াল রাখতেই কেটে যেত। মেনে নিতেন অন্য মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কও। কিছুটি বলার ক্ষমতা ছিল না তাঁদের। কোনও আইনও ছিল না তাঁদের জন্য। সব কিছু মুখ বুজে সহ্য করে নিতে হত। এটাই ছিল বাবু সমাজের নিয়ম। সাহিত্যিকদের লেখায় এই ধরণের অনেক কথা খুঁজে পাওয়া যায়।
view commentsLocation :
First Published :
April 18, 2019 6:33 PM IST

