৩৫০ বছর ধরে চলছে রীতি, দেবীর বিসর্জন এখানে হয় মহালয়াতেই
Last Updated:
সাড়ে তিনশো বছর আগে মৃৎশিল্পীর অভাবে পটে এঁকে পুজো শুরু। তারপর থেকে পটের প্রতিমারই আরাধনা।
#রামপুরহাট: মহালয়ায় দেবীপক্ষের শুরু। অথচ সেদিনই বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা! ৩৫০ বছর ধরে প্রথা আর পরম্পরা চলছে গা ঘেঁসে। বীরভূমের খরুন গ্রামে রায় ও কর্মকার পরিবারের পুজো সাবেকি। এখানে প্রতিমা মাটির নয়, পটের।
‘খরুন-বেলিয়া-চাকপাড়া, মধ্যিখানে মা তারা’... গ্রামীণ প্রবাদে ত্রিভূজ জনপদ। যার মাঝে তারা-মায়ের বসত। আসলে ঠিকানা জানানো। রামপুরহাট শহর থেকে ষাট নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে সিউড়ি। সিউড়ির দিকে চার কিলোমিটার এগোলে বাঁ হাতে খরুন গ্রাম। ঢুকতেই চোখ আটকায় পাঁচ দুর্গা মন্দিরে। প্রাচীন পরম্পরা আর ঐতিহ্যের ইট গাঁথা সারি সারি। সারা বছরই পাঁচ বংশের সাবেকি পুজো। গ্রামে পুজোর গন্ধটাও পুরোন। নিজের বৈশিষ্ট্যে এ পুজো আলাদা। মহালয়া আসে দেবীপক্ষ নিয়ে... তবে খরুনের রায় ও কর্মকার পরিবারের পুজো অন্যরকম। দশমীতে নয়, প্রতিমা বিসর্জন যায় মহালয়াতেই। সাড়ে তিনশো বছর আগে মৃৎশিল্পীর অভাবে পটে এঁকে পুজো শুরু। তারপর থেকে পটের প্রতিমারই আরাধনা। এখন কালের নিয়মে কিছু অদল বদল ঘটেছে। পটে আঁকার বদলে প্রতিমায় কখনও শোলা বা থার্মোকলের ব্যবহার হচ্ছে। তবে নিয়মের বেড়াজালে মাটির ছোঁয়া নেই। প্রতিপদে পুজো শুরু। সারাবছর উপাসনার পর ওই পটই বিসর্জন যায় পরের মহালয়ায়।
advertisement
প্রতিপদে ঘট ভরা। মহাষষ্ঠীর সন্ধেয় অন্য চার বাড়ির সদস্যরা মিলে নবপত্রিকা বাঁধেন। রায় বাড়ির চণ্ডীমণ্ডপে বসেই। সপ্তমীর সকালে দোলা এনে বন্দনার পর শুরু সিঁদুর খেলা। সন্ধিতে সাদা ছাগল বলি দেওয়া হয়। এখনও।
advertisement
রায় পরিবারের সদস্য শ্যামলী রায় বললেন, সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত রায় পরিবারের বাড়িতে হাঁড়ি চড়ে না। কারণ ওই তিনদিন পরিবারের তিনশো সদস্য একসঙ্গে বসে মায়ের প্রসাদ গ্রহণ করেন। প্রতিমা যে শুধু পটের বৈশিষ্ট্যে আলাদা তা নয়। এখানে দুর্গার সঙ্গে আরাধনা শুধু দুই মেয়ের। অসুর-সিংহও অবশ্য পুজো পান।
advertisement
তারাপীঠের আশেপাশে খরুন... গ্রামবাংলার চেনা মাটির গন্ধ আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে...অলিগলিতে লেপটে থাকে পুজোর গন্ধটাও...গ্রামীণ পুজোগুলো এক-একটা গল্প বলে যায়....অজানা কিছু জানিয়ে যায়...৷
view commentsLocation :
First Published :
October 04, 2018 1:57 PM IST

