India Independence Day 2021: বয়স ১১১, আজও স্মৃতিতে উজ্জ্বল '৪৭-এর সেই উদ্দাম ১৫ অগাস্ট....
- Published by:Arka Deb
- news18 bangla
Last Updated:
India Independence Day 2021 || ১১১ বছরের বৃদ্ধ হারাধন সাহা এবং ৯২ বছর এক বৃদ্ধ নন্দলাল কুম্ভকার দেখেছেন গোরা সৈন্যদের অত্যাচার। কেমন ছিল পরাধীন ভারতের অভিজ্ঞতা, জানালেন ১১১ বছরের বৃদ্ধ।
#নয়ন ঘোষ, পশ্চিম বর্ধমান: স্বাধীনতার সাড়ে সাত দশক। এই ৭৪ বছরে স্বাধীন ভারত অনেক কিছুর সাক্ষী হয়েছে। ২০০ বছর পরাধীনতার পরে, এই দেশ দেখেছে নানান ওঠাপড়া। কিন্তু পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ রাজ কেমন ছিল? কেমন ছিল সেই সময়ের শাসন ব্যবস্থা? কেমন ছিল সেই সময় ব্রিটিশ সৈন্যদের অত্যাচার? এই সব বিষয় খুব কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন পশ্চিম বর্ধমানের ১১১ বছরের বৃদ্ধ হারাধন সাহা। দেখেছেন পশ্চিম বর্ধমানের ৯২ বছর আর এক বৃদ্ধ দেখেছেন গোরা সৈন্যদের অত্যাচার। পরাধীন ভারতের ভারতীয় নাগরিকদের সেই যন্ত্রণাময় অভিজ্ঞতা নিয়ে ওঁরা মুখ খুলতেই মনে হবে লেখা হচ্ছে এক বিরাট কাব্যনাট্য যার পরতে পরতে আবেগ।
কাঁকসার জঙ্গলমহলের সরস্বতী গঞ্জের বাসিন্দা হারাধন সাহা। বড় কৃষক পরিবারে জন্ম হয়েছে তার। আজ তিনি চোখে আবছা দেখেন। কানেও ঠিক মতো শুনতেও পান না আর। তবে খুব পরিস্কার ভাবে দেখেছেন পরাধীন ভারতের যন্ত্রণা, সেইসময়ের শাসন। প্রথম স্বাধীনতা দিবসে রেডিওতে শুনেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ। সেইসব স্মৃতি আজ অনেকটাই অস্পষ্ট। কিন্তু ভোলেননি ৭৫ বছর আগের ইতিহাস।
advertisement
প্রথম স্বাধীনতা দিবসের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে হারাধন বাবু নিজেকে বলেছেন অজপাড়াগাঁয়ের মানুষ। বিশেষ কিছু বুঝতেন না। তবে প্রথম স্বাধীনতা দিবসে দেখেছিলেন সব মানুষের আনন্দ, হৈ-হুল্লোড়। বুঝতে পেরেছিলেন ব্রিটিশ শাসনের মুক্তি হয়েছে।
advertisement
সে অর্থে স্বাধীনতা সংগ্রাম তিনি করেননি। কিন্তু যে দমন পীড়ণ দেখেছেন তা আজীবন বুকে দাগ রেখে গিয়েছে। তার কাছে ফিকে আজকের দমনপীড়নের ব্যবস্থাও।
advertisement
অন্যদিকে, দুর্গাপুরের আঢ়া শিবতলার কাছে থাকেন নন্দলাল কুম্ভকার। কৈশোর বয়সে ব্রিটিশ শাসনের তীব্রতা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। ৯২ বছরে পা দিয়েও সুস্থ-সবল এই অশীতিপর বৃদ্ধ। গোপালপুরের কুম্ভকার পাড়ায় বসবাস নন্দলাল কুম্ভকারের। সুস্থ সবল এই ব্যক্তিটির পেশা ছিল কৃষিকাজ এবং মাটির জিনিসপত্র তৈরি। ব্রিটিশ শাসনকালে তিনি এই কাজ করেই সংসার চালাতেন, দিন গুজরান করতেন। আজও এই পেশার সঙ্গে যুক্ত নন্দলাবাবুর পরিবার। দীর্ঘ জীবনকালে তিনি অনেক কিছু ভুলে গিয়েছেন। তবে এখনও ভুলতে পারেননি ব্রিটিশদের অত্যাচার।
advertisement
স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ের কথা বলতে গিয়ে, শিউরে ওঠেন নন্দলাল। আজও মনে করতে পারেন স্থানীয় এক ব্যক্তিকে তুলে নিয়ে গিয়ে, তাকে মাঠের ধারে কেটে ফেলে দিয়েছিল ব্রিটিশ সৈন্যরা। তাঁর কথায়, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, 'গোরা' সৈন্যরা বিভিন্ন অঞ্চলে নিজেদের ঘাঁটি গেড়েছিল। এই সমস্ত জায়গাগুলিতে থাকতো তারা। তাদের রাস্তায় চলাচলের অধিকার ছিলনা ভারতীয়দের। গোরা সৈন্যরা যে রাস্তায় চলাচল করতে, তার পাশে তৈরি করা হয়েছিল অন্য রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে হত ভারতীয় নাগরিকদের।
advertisement
ব্রিটিশ শাসনের দীর্ঘ অত্যাচার দেখার পর, প্রথম স্বাধীনতা দিবস দেখে খুবই আনন্দিত হয়েছিলেন ৯২ বছরের নন্দলাল কুম্ভকার। স্বাধীনতার আনন্দে শামিল হয়েছিলেন তিনি। বছরের অন্য দিন ওঁদের কথা কেউই হয়তো বলবে না, তবে আজ এই পুন্য অবসরে বলতেই হয়, স্মৃতিটুকু থাক।
-Nayan Ghosh
Location :
First Published :
August 14, 2021 6:40 PM IST