Explained| LIC|| বৃহত্তম জীবন বিমা সংস্থা এলআইসি কেন বাজারে শেয়ার ছাড়ছে? জানুন...
- Published by:Shubhagata Dey
Last Updated:
India's largest insurance company LIC: কেন্দ্রীয় সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলআইসির অংশীদারিত্ব বিক্রি করার তখন স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছে পলিসি হোল্ডারদের।
#নয়াদিল্লি: লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার (LIC) স্লোগান হল, 'জীবনের সঙ্গে, জীবনের পরেও'। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলআইসির অংশীদারিত্ব বিক্রি করার তখন স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছে পলিসি হোল্ডারদের।
এলআইসি এবং আইপিও:
এলআইসি আইপিওর পরে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হবে। এলআইসিকে তার সমস্ত সিদ্ধান্ত এক্সচেঞ্জের কাছে জানাতে হবে। এর সাহায্যে পলিসি হোল্ডাররাও জানতে পারবেন যে এলআইসি কত এবং কোথায় বিনিয়োগ করছে এবং শেয়ার বাজারে এটি কী ব্যয় করছে। তবে এই মুহূর্তে এলআইসি শেয়ার বাজারে প্রচুর পরিমাণে অর্থ বিনিয়োগ করেছে। পিএসইউ হিসাবে প্রচুর অর্থ ব্যয়ও করেছে। তবে পলিসিধারীরা এ সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন নয় এখনও।
advertisement
advertisement
এলআইসি এবং পিএসইউ:
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ (Nirmala Sitharaman) বাজেট পেশের সময় ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সরকারি রাজস্ব পূরণ করতে ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা জোগাড় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। এর আওতায় এলআইসির কিছু অংশ বিক্রি করারও ঘোষণা করা হয়েছে।
গত বছরই, সরকারের তরফে এলআইসি, বিপিসিএল (BPCL), এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India) মতো সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রির কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। করোনার সঙ্কটের কারণে এই পরিকল্পনাগুলি কার্যকর করতে পারেনি সরকার। ২.১ লক্ষ কোটি টাকা জোগাড় করার লক্ষ্যমাত্রা তৈরি করা হয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: ভালবাসার উদযাপন না মুনাফার বাজার? ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে চমকে দেবে 'এই' তথ্যগুলো
এলআইসির ক্ষেত্রে বিষয়টি চিন্তা বাড়াচ্ছে। কারণ প্রতিটি গ্রামে এলআইসি এজেন্ট পাবেন। সকলেই এলআইসিকে বিনিয়োগের সবচেয়ে নিরাপদ পদ্ধতি হিসাবে বিবেচনা করে। এমন পরিস্থিতিতে পলিসিধারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের এই উদ্যোগ ক্ষতি করবে না।
advertisement
লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, অর্থাৎ এলআইসি দেশের বৃহত্তম বীমা সংস্থা। প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কে.ভি. সুব্রহ্মণ্যম গত বছর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে এলআইসিতে ৬ থেকে ৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে সরকার প্রায় ৯০,০০০ কোটি টাকা জোগাড় করতে পারে।
এলআইসিতে শেয়ার বিক্রির পিছনে সরকারের যুক্তি হ'ল সংস্থাগুলিতে আর্থিক শৃঙ্খলা বৃদ্ধি করা। সরকার যদি ৬-৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে তবে কোম্পানির পরিচালনা বা মালিকানার উপর এর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। তবে এতে স্বচ্ছতা বাড়বে বলে মত।
advertisement
আরও পড়ুন: শেষের পথে করোনা! তবে সচেতন থাকতেই হবে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা...
এলআইসি আইপিওর পরে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হবে। এলআইসিকে তার সমস্ত সিদ্ধান্ত এক্সচেঞ্জের কাছে জানাতে হবে। এর সাহায্যে পলিসি হোল্ডাররাও জানতে পারবেন যে এলআইসি কত এবং কোথায় বিনিয়োগ করছে এবং শেয়ার বাজারে এটি কী ব্যয় করছে।
দেশের বাজারে আইপিও-র রমরমা:
advertisement
এলআইসির আইপিও-র প্রস্তাবিত বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি। অনেকেই মনে করছেন এত বড় অঙ্কের আইপিও এর আগে বাজারে খুব কমই এসেছে।
ঝুঁকি না নিলে বড় কিছু পাওয়া যায় না। বিনিয়োগের জগতে শেয়ার মার্কেট, স্টক এক্সচেঞ্জ, আইপিও ক্রয় ঠিক তেমনই। ভাগ্য সহায় থাকলে কেল্লা ফতে! না হলে সব হাওয়া। অবশ্য সবটাই গণিত এবং অর্থশাস্ত্র। গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে আইপিও-তে বিনিয়োগ করে বেশ মোটা লাভের অঙ্ক ঘরে তুলেছেন অনেকেই। যেমন জোমাটো (Zomato)। আবার শেষ বেলায় এসে অনেকে মারও খেয়েছেন। যেমন পেটিএম (Paytm)।
advertisement
আরও পড়ুন: অলিম্পিক্সের আসর বসছে বেজিংয়ে, কেন নেওয়া হল এমন সিদ্ধান্ত?
নতুন বছরের শুরুতেও বিনিয়োগের জগতে সাড়া ফেলতে আসছে একাধিক বড় সংস্থার আইপিও। তবে আপাতত সবার নজর একটি সংস্থার দিকে। সেটি হল দেশের সর্ববৃহৎ বিমা সংস্থা লাইফ ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া। সংক্ষেপে এলআইসি। অনেকেই মনে করছেন এত বড় অঙ্কের আইপিও এর আগে বাজারে খুব কমই এসেছে। আপাতত খবর অনুযায়ী, এলআইসি আইপিও-র প্রস্তাবিত বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ১০ লক্ষ কোটি। যা বহু বিনিয়োগকারীর ভাগ্যের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।
ইতিমধ্যেই এলআইসি-র আইপিও-র ড্রাফ্ট বা খসড়া প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকরা। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে সেবির (SEBI) কাছে অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হবে সেই ড্রাফ্ট। অনুমোদন পেলেই বাজারে পা রাখবে সংস্থার আইপিও।
কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এই আইপিওর আওতায় জারি করা শেয়ারের প্রায় ১০ শতাংশ সংস্থার পলিসি হোল্ডারদের জন্য সংরক্ষণ করে রাখা থাকবে। তাঁরা কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড়ও পাবেন। প্রসঙ্গত, তাঁরা অন্য বিনিয়োগকারীদের তুলনায় অনেকটা সস্তাতে শেয়ার কিনতে পারবেন। এলআইসি-র বিমা গ্রাহকরা যাতে শেয়ার ক্রয়ে আগ্রহ দেখান, সেই কারণেই এমন উদ্যোগ।
এলআইসি কী বলছে?
গত বছর অর্থাৎ, ২০২১-এর ডিসেম্বরে সংস্থার ওয়েবসাইটে আইপিও সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে এলআইসি। যেখানে বলা হয়েছে, আলাদা করে পলিসি হোল্ডারদের জন্য আইপিও রাখা হবে। কোম্পানির পলিসি হোল্ডাররা চাইলে ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে সরাসরি এই শেয়ার কিনতে পারেন।
আরও পড়ুন: স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড কী? কী ভাবে কাজ করবে এই ইন্টারনেট পরিষেবা প্রযুক্তি ?
তবে সেই ক্ষেত্রে দু’টি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, ওই ব্যক্তির আধার নম্বরের সঙ্গে এলআইসি-র লিঙ্ক থাকতে হবে। দ্বিতীয়টি হল, সরকারি নথিতে অবশ্যই প্যান কার্ডের বিষয়ে আপডেট থাকতে হবে।
শেয়ারের দাম কম কারণ, এলআইসি-র যে তহবিলগুলি রয়েছে সেগুলি কিন্তু ততটাও লাভজনক নয়। তার মধ্যে রয়েছে গ্যারান্টি রিটার্ন প্ল্যান, গ্রুপ ইনস্যুরেন্স প্ল্যান, কর্মচারীদের রিটায়ারমেন্ট ফান্ড ইত্যাদি। গ্লোবাল ইনভেস্টারদের কোম্পানির মতে এই প্রোডাক্টের উপর জোর দিতে ঘুঁটি সাজাতে চাইছে সংস্থা।
আরও পড়ুন: কানাডায় কোভিড বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের নেপথ্য কারণ কী? বিক্ষোভে সামিলই বা হয়েছেন কারা?
তবে যাই হোক না কেন এলআইসি-র আইপিও যে এখনও দেশের সবথেকে বড় ঘোষণা হতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরাও। আসলে এই আইপিও-র মাধ্যমে পরবর্তী অর্থবর্ষ অর্থাৎ ২০২২-২০২৩ সালের বিনিয়োগের লক্ষ্যপূরণ করতে চাইছে সরকার।
এলআইসির অন্যান্য সুবিধা:
এর আগে এলআইসি পেনশনের সঙ্গে দিয়েছে বিমার সুবিধা। এলআইসির এই পলিসিতে ১৩০২ টাকার প্রিমিয়াম দিলে পলিসি হোল্ডারের হাতে আসার কথা ২৭.৬০ লক্ষ টাকা। এলআইসি সময়ে সময়ে গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন পলিসি নিয়ে আসে, যেখানে কোনও গ্রাহক নিজের পাশাপাশি পরিবারের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে পারেন। জীবন উমঙ্গ (Jeevan Umang) নামে এলআইসির এমন একটি পলিসি রয়েছে, যেখানে বিনিয়োগ করলে ভাল লাভ পাওয়া যেতে পারে। এই পলিসি করতে গেলে ২ লক্ষ টাকার বিমা অবশ্যই করতে হবে গ্রাহককে।
৯০ দিন থেকে ৫৫ বছর বয়সীরা এই পলিসি গ্রহণ করতে পারেন। এটি একটি এনডাওমেন্ট প্ল্যান। এতে লাইফ কভারের পাশাপাশি ম্যাচিওরিটির ওপরে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পাওয়া যায়। ম্যাচিওরিটির পরে প্রতি বছর গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আসবে। অন্য দিকে, যাঁর নামে পলিসি রয়েছে, তাঁর মৃত্যু হলে পরিবারের সদস্য এবং নমিনি বিমার এককালীন অর্থ পাবেন। এই পলিসির অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হল ১০০ বছর পর্যন্ত কভারেজ পাওয়া যাবে অর্থাৎ বিমাকারী বিমার আওতায় থাকবেন।
view commentsLocation :
First Published :
February 16, 2022 7:43 PM IST