Explained: মাঝ আকাশে শিশুর জন্ম! নাগরিকত্ব নিয়ে সংশয়? বিস্তারিত জানুন!
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
Baby Born Mid Air: একটি প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, ২৬ মিলিয়ন যাত্রীর মধ্যে একজনের এমন ঘটনা ঘটে।
#নয়াদিল্লি: উড়ানের সময় একটি ফ্লাইটে কোনও শিশুর জন্ম হলে কী হয়? পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে, আর কতটাই বা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় সেই বিষয়টি জানা প্রয়োজন (Baby Born Mid Air)। এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার সময় প্লেনের মধ্যে মাঝ আকাশে জন্মানো সদ্যোজাত কোন দেশের নাগরিক হবে? এটি এমন একটি প্রশ্ন যা আমাদের কৌতূহল বাড়ায়। সন্তানের জন্মস্থান কোথায়? সঠিক করে বলাই দুষ্কর ।
কারণ এই পৃথিবীর আলো যখন দেখল শিশুটি, সে তখন মাঝ আকাশে। এই প্রশ্ন অনেকেরই মনে থাকে- যদি একটি শিশু একটি ফ্লাইটে জন্ম নেয়? যদিও এটি একটি খুব অদ্ভুত পরিস্থিতির মত শোনাতে পারে, যদিও এই ঘটনায় একাধিকবার ঘটেছে মাঝ আকাশে উড়ানের সময়। বিষয়টি নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে এসেছে। যেমন, শিশুটির নাগরিকত্বের প্রশ্ন(Baby Born Mid Air)। ধরা যাক ভারত থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উড়ে যাচ্ছে বিমান, সেই সময় কোনও গর্ভবতী মহিলার সন্তান প্রসব হল মাঝ আকাশে। তখন শিশুটি কি ভারতের না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হবে, তা নিয়ে বিস্তর ধোঁয়াশা থেকে যায়।
advertisement
মাঝ আকাশে সন্তান প্রসবের কত ঘটনা ঘটেছে?
advertisement
এমন ঘটনা হাতেগোনা বা বিক্ষিপ্ত। দেখা যাক এমন কত ঘটনা ঘটেছে! একটি প্রতিবেদনে পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, ২৬ মিলিয়ন যাত্রীর মধ্যে একজনের এমন ঘটনা ঘটে(Baby Born Mid Air)। অর্থাৎ, ফ্লাইটে ভ্রমণ করার সময় বাচ্চা হয়। এই ঘটনাগুলি এতই বিরল যে, সংবাদ সংস্থাগুলি তাদের প্রধান ফিচারে এই খবরগুলো প্রকাশ করে৷
advertisement
আরেকটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, শিশু জন্মের সংখ্যার হিসেবে ৩৫০,০০০ থেকে ৪০০,০০০ শিশুর জন্মের মধ্যে সাধারণত ৫০ জন শিশু আকাশজাত হয়। অর্থাৎ বিমানে ভ্রমণকালে মাঝ আকাশে তাদের জন্ম হয়। যে সমস্ত শিশুরা সময়ের আগেই ভূমিষ্ঠ হয়, তারাই মাঝ আকাশে জন্ম নেয়। যদিও বিমান সংস্থাগুলি তাদের নীতির মাধ্যমে এই ঘটনাগুলি কমানোর চেষ্টা করে, তবুও এটি ঘটে যায় প্রাকৃতিক নিয়মে। বেশিরভাগ এয়ারলাইন্সের নিয়ম অনুযায়ী, গর্ভবতী নারীদের গর্ভধারণের ৩৬ সপ্তাহ হবার আগে পর্যন্ত তাদের বিমানে চড়তে কোনও বাধা নেই।
advertisement
এই পরিস্থিতিতে কী হয় বিমানে?
যদিও ঘটনাটি বিরল(Baby Born Mid Air), তবু আকাশজাতদের খবর পাওয়া মাঝেমধ্যেই। এমনকী ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে ভারতীয় বংশোদ্ভূত লোকেদের সন্তানও জন্ম নিয়েছে। যখন এই পরিস্থিতি দেখা দেয় সাধারণত ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বা বিমান সেবিকারা সংশ্লিষ্ট পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন। প্রসূতির যত্ন নেন তাঁরা। বিমানে যদি কোন চিকিৎসক থাকেন তাঁদের সাহায্য নেন বিমান সেবিকারা। এর মধ্যে কিছু পরিস্থিতিতে বিশেষ করে প্রসূতির জরুরী বা আপৎকালীন অবস্থা হলে সংশ্লিষ্ট বিমানটিকে দ্রুত অবতরণ বা যাত্রাপথ পরিবর্তন করানো হয়। যাতে গর্ভবতী মহিলা প্রয়োজনীয় সহায়তা পেতে পারেন।
advertisement
বিষয়টিকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করার জন্য একটি ঘটনার উল্লেখ করা যেতে পারে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের একটি ঘটনা দেখলে আরও ভালভাবে(Baby Born Mid Air) বোঝা যায় যখন বিমানে মাঝ আকাশে শিশুর জন্ম হয়েছিল। ব্যাংককগামী কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটকে শিশুর জন্মের সময়ের আগেই অর্থাৎ জন্ম হলে তাৎক্ষণিক সহায়তা পেতে কলকাতায় অবতরণের রুট পরিবর্তন করতে হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সুস্থভাবে যাতে শিশুটিকে ভূমিষ্ঠ করা যায় তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রয়োজন। কারণ অপরিণত শিশু জন্ম হতে পারে এই সময়।
advertisement
এই ক্ষেত্রে শিশুটির নাগরিকত্ব কোন দেশের হবে?
এয়ারলাইনগুলি সাধারণত নবজাতকের জন্মের(Baby Born Mid Air) পর নানাবিধ সুবিধা প্রদান করে এবং শিশুটির জন্ম মুহূর্তটিকে আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপন করে। বিমান সংস্থাগুলি আপাতভাবে সদ্যজাতর নাগরিকত্বের বিষয়েও বিভ্রান্ত হয়। যদিও কিন্তু কিছু নিয়ম বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির সমাধান করে।
মাঝ আকাশে জন্ম হলে, জন্মের সময় ফ্লাইটটি যে দেশের আকাশসীমা বা পিতামাতার জাতীয়তার কথা মাথায় রেখেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শিশুটির নাগরিকত্ব সম্পর্কে(Baby Born Mid Air)। যদি এই উভয় কারণই শিশুটির নাগরিকত্বের বিষয়টি সম্পর্কে সমাধান না করে, তখন বিমানটি যে দেশে নিবন্ধিত হয়েছে তা পরীক্ষা করার পরে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় সংশ্লিষ্ট শিশুর। মধ্য আকাশে জন্ম নেওয়া শিশুটির আজীবন বিনামূল্যে আকাশ ভ্রমণ করার স্বীকৃতি দেয় বিমান সংস্থাগুলি।
advertisement
মাঝ আকাশে শিশুর জন্ম হওয়া নিয়ে বিমানকর্মীরা যে ভাবে আনন্দ করেন, তার ছবি ও ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় হামেশাই ভাইরাল হয়। এমন ঘটনা নিয়ে বিমান সংস্থা, কর্মী এবং চিকিৎসকদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলেই। বিমানে যে এক শিশুর জন্ম হয়েছে, সেই খবর আগেই পৌঁছে যায় সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরে। ফলে সেখানে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতিও নিয়ে ফেলেন কর্মীরা। করতালি আর মুহুর্মুহু ক্যামেরার ফ্ল্যাশের মধ্যে হুইল চেয়ারে বসা মায়ের কোলে শুয়ে মাটিতে নেমে আসে আকাশে জন্ম নেওয়া শিশু। তবে এই ঘটনা নতুন নয়। ২০১৭ সালে সৌদি আরব থেকে ভারতে আসার একটি বিমানে এক মহিলা কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। জেট এয়ারওয়েজ তার সারাজীবনের বিমানের টিকিটের দায়িত্ব নিয়েছিল। এমন ঘটনা আরও আছে। ২০০৯ সালে এয়ার এশিয়া একজন মালয়েশিয়ান মা ও তাঁর ছেলেকে গোটা জীবনের বিমানের(Baby Born Mid Air) টিকিট উপহার দিয়েছিল। একটি ফিলিপাইনের এয়ারলাইন সংস্থা বিমানে জন্মানো শিশু কন্যাকে বিনামূল্যে ১ মিলিয়ন এয়ার মাইল ভ্রমণের উপহার দিয়েছিল।
যদিও এখন কিছুটা সঙ্কুচিত মনোভাব হয়েছে এয়ারলাইনগুলোর। সংস্থাগুলি নিজেরাও এই উটকো ঝামেলায় জড়াতে চায় না। অনেক এয়ারলাইনই সন্তানসম্ভবা(Baby Born Mid Air) নারীদের ভ্রমণের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করে। আরব আমিরশাহির এতিহাদ, কাতারের কাতার এয়ারওয়েজ, তুরস্কের টার্কিশ এয়ারওয়েজ সহ বিশ্বের অধিকাংশ এয়ারলাইনই ৩৬ সপ্তাহের বেশি সময়ের গর্ভবতী নারীদেরকে প্লেনে চড়ার অনুমতি দেয় না। অনেক এয়ারলাইন ২৬ কিংবা ২৮ সপ্তাহের পর থেকেই ডাক্তারের সার্টিফিকেট চেয়ে বসে। এছাড়াও এক সন্তান, যমজ সন্তান প্রভৃতির জন্যও এয়ারলাইনগুলো ভিন্ন ভিন্ন শর্ত রাখে।
তার পরেও মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। অনেক সময়ই নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই অনেক নারীর(Baby Born Mid Air) প্রসব বেদনা উঠতে পারে। ২০১৫ সালে এরকম একটি ঘটনাও ঘটেছিল, যেখানে এয়ার কানাডার একটি ফ্লাইটে প্রসব বেদনা ওঠার পূর্ব পর্যন্ত অ্যাডাগুয়ানের কোনও ধারণাই ছিল না যে, তিনি গর্ভবতী! তাঁর প্রেগন্যান্সি টেস্টে একাধিকবার ভুল ফলাফল এসেছিল, ফলে তাঁর ধারণা ছিল এমনিতেই তাঁর ওজন বৃ্দ্ধি পাচ্ছে!
এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত কোনও ঘটনা যদি ঘটেই যায় এবং উড়ন্ত প্লেনেই যদি কোনও নারীর প্রসব বেদনা ওঠে, সেক্ষেত্রে পাইলট সাধারণত যাত্রীদের মধ্যে থাকা কোনও ডাক্তার, নার্স বা অভিজ্ঞ কোনও ব্যক্তির সাহায্য কামনা করেন। কিন্তু প্লেনের অপরিসর স্থানে সন্তান জন্ম দেওয়ার কাজটি সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ।
view commentsLocation :
First Published :
February 07, 2022 6:51 PM IST