Dhyan Chand: হকির কিংবদন্তি ধ্যানচাঁদ, দেশীয় খেলায় ধ্যানচাঁদের গুরুত্ব কতটা?
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
Dhyan Chand: ধ্যানচাঁদ শুধু দেশ নয় গোটা বিশ্বের জন্য তিনি একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি হকির জাদুকর।
ভারতীয় হকির (Hockey) কিংবদন্তি বলা হয় ধ্যানচাঁদকে (Dhyan Chand)। এবার থেকে ক্রীড়া জগতে দেশের সর্বোচ্চ পুরস্কারকে মেজর ধ্যানচাঁদের (Major Dhyan Chand Khel Ratna Award ) নামে রাখা হল। যা এত দিন রাজীব গান্ধি খেল রত্ন পুরস্কার (Rajiv Gandhi Khel Ratna Award) নামে ছিল। তবে এই বড় সিন্ধন্ত একেবার হুট করে রাখা হয়নি, ক্রীড়া জগতের মানুষ ও সাধারণ মুনুষেরা অনেকদিন ধরেই এই দাবি করছিলেন। ভারতীয় খেলাধুলায় অনেক অবদান রয়েছে ধ্যানচাঁদের। তাঁর হকি স্টিকের জাদু কামাল দেখিয়েছে অতীতে।
ধ্যানচাঁদ শুধু দেশ নয় গোটা বিশ্বের জন্য তিনি একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি হকির জাদুকর। পর পর তিনবার তাঁর হাত ধরেই অলিম্পিক (Olympic) থেকে সোনা এসেছিল ভারতের ঝুলিতে। ১৯২৮ সালে আমস্টারডাম (Amsterdam), ১৯৩২ সালে লস এঞ্জেলেস (Los Angeles) ও ১৯৩৬ সালে বার্লিনে (Berlin) অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে ভারতের স্বর্ণপদক জয়ে সবথেকে বড় ভূমিকায় ছিলেন ধ্যানচাঁদ। হকি খেলায় ভারতের বিরুদ্ধে সেই সময়ে কোনও দেশই ছিল না যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে। ধ্যানচাঁদ সব মিলিয়ে মোট ১২টি অলিম্পিক ম্যাচ খেলেছেন, যার মধ্যে তাঁর একক গোল সংখ্যা ৩৩টি।
advertisement
বলা হয় ধ্যানচাঁদের হকি স্টিকে জাদু ছিল। একবার খেলার মাঠে ধ্যানচাঁদের হকি স্টিক ভেঙ্গে যায়। সেই সময় কিছুজন তাঁর স্টিকটিকে ভালো করে দেখেন, যে তাঁর স্টিকে কোনও চুম্বক রয়েছে কিনা। সেই সময়ের মাঠ এখনকার মতো এতো উন্নত ছিল না। উঁচু-নিচু কোনও দিকে বেশি ঢালু এমন ছিল। প্রতিকূলতাকে সঙ্গী করেই খেলাধুলা করতে হত। শোনা যায় ১৯৩৬ সালে বার্লিনে অলিম্পিক চলাকালীন জার্মানের (Germany) চ্যান্সেলর (Chancellor) অ্যাডলফ হিটলার (Adolf Hitler) ধ্যানচাঁদের খেলা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। হিটলার, তাঁকে জার্মানের নাগরিকত্ব এবং তাঁর দেশের সেনাবাহিনীতে কর্নেল পদ দেওয়ার প্রস্তাব রেখেছিলেন, কিন্তু ধ্যানচাঁদ তা মেনে নেননি।
advertisement
advertisement
ধ্যানচাঁদ নামেই একটা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। ভারতের স্বাধীনতা-পূর্বের দিনগুলিতে মানুষ অসহায় ছিল। ব্রিটিশ শাসকদের অত্যাচারে সকলের মুখ বন্ধ ছিল। সেই সময় গোটা বিশ্বের দরবারে ভারতীয়দের গর্বিত করেছিলেন ধ্যানচাঁদ। ইউরোপীয়দের ওপর হকি খেলা দিয়ে একছত্র আধিপত্য তৈরি করেছিল দেশ। স্বাধীনতার আগে এবং পরের কয়েক বছর, হকিই একমাত্র খেলা যেটাতে ভারত আন্তর্জাতিক এবং অলিম্পিক মঞ্চে ধারাবাহিকভাবে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছিল।
advertisement
কিংবদন্তি হকি খেলোয়াড় মেজর ধ্যানচাঁদের জন্মদিন ২৯ অগাস্ট। এই দিনটিকে জাতীয় ক্রীড়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিন দেশের রাষ্ট্রপতি যোগ্য প্রার্থীদের অর্জুন পুরস্কার (Arjun Award) ও ক্রীড়া জগতে দেশের সর্বোচ্চ পুরুস্কার প্রদান করা হয়, যা এবার থেকে মেজর ধ্যানচাঁদ পুরুস্কার নাম রাখা হয়েছে। দিল্লির জাতীয় স্টেডিয়ামটি ধ্যানচাঁদের নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে।
advertisement
ইউরোপীয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ানরা কয়েক দশক ধরে অনেক বেশি দক্ষ হয়ে উঠেছে হকিতে। ১৯৮০ সালে অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জয়ের পর থেকে, ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে ভারত অলিম্পিকে শীর্ষ চারে পৌঁছাতে পারেনি। তখনকার খেলা আর এখনকার খেলার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। ধ্যানচাঁদ এবং তার পরবর্তী প্রজন্মের পর সবটাই ইতিহাস হয়ে রয়ে গিয়েছিল, কিন্তু এই বছরের টোকিও অলিম্পিকে (Tokyo Olympic) ভারতীয় পুরুষ হকি দলের ব্রোঞ্জ জয় এবং মহিলা হকি দলের পদকের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া ভারতীয় হকির পুনরুত্থান হয়েছে বলেই মনে করছেন ক্রীড়াবিদরা। তাঁদের দাবি, এমন সময়ে ক্রীড়া জগতে দেশের সর্বোচ্চ পুরুস্কারকে রাজীব গান্ধি খেলা রত্ন থেকে মেজর ধ্যানচাঁদ খেল রত্ন পুরস্কার নামে পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত বড় স্বপ্ন দেখাবে নতুন প্রজন্মকে।
Location :
First Published :
August 07, 2021 8:00 PM IST