Explained: কোভিড পরিস্থিতিতে হাড়ের সমস্যায় ভুগতে পারে শিশুরা, যে কথাগুলো জেনে না রাখলেই নয়!
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
Covid 19- শিশুরাও একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। এর মধ্যে হাড়ের (Bone Disease) একাধিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।
#কলকাতা: ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে শুরু হয়েছে, এখনও সারা দেশ জুড়ে আক্রমণ করছে কোভিড ১৯ (Covid 19)। যার ফলে একাধিক শারীরিক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। শিশুদের (Child) ক্ষেত্রেও একাধিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে। এদিকে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। যার ফলে শারীরিক ভাবে সেভাবে তুলনামূলক কম পরিশ্রম করতে হচ্ছে। যার ফলে শিশুরাও একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছে। এর মধ্যে হাড়ের একাধিক সমস্যায় (Bone Disease) পড়তে হচ্ছে তাদের।
বর্তমান করোনা (Covid 19) পরিস্থিতির জন্য বেশিরভাগ অভিভাবকই তাঁর সন্তানদের (Child) বাড়ির বাইরে বের করছেন না। পড়াশোনা হচ্ছে অনলাইনে। খেলাধুলো বা অন্য সব কিছুই চলছে বাড়িতে। ফলে শারীরিক ভাবে সেভাবে গঠন হচ্ছে না। সন্তানের অভিভাবকরাও এই বিষয়ে সচেতন। শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য কী ভাবে ভালো রাখা যায় তার চেষ্টা করছেন তাঁরা।
advertisement
এই পরিস্থিতিতে হাড়ের সমস্যায় (Bone Disease) ভুগছে শিশুরা। হাড়ের সঠিক ভাবে বৃদ্ধি হচ্ছে না, ক্ষমতা কমছে এবং হাড়ের একাধিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শিশুদের হাড় সব সময় বৃদ্ধি পায় এবং গঠনগত ভাবে পরিবর্তন হয়। একই ভাবে বিভিন্ন টিস্যুর ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়। কোভিড পরিস্থিতিতে কী ভাবে শিশুদের হাড়ের যত্ন নেওয়া উচিত? জেনে নেওয়া যাক-
advertisement
advertisement
প্রতি সপ্তাহে অন্তত পাঁচবার শরীরচর্চা করা দরকার
শিশুরা যাতে শরীরচর্চার উপর জোর দেয় সেই দিকে নজর রাখা দরকার। বিভিন্ন ব্যায়ামের পাশাপাশি অন্য শারীরিক কসরত করা দরকার। তবে শিশুর বয়স অনুযায়ী পরিশ্রম করা দরকার। ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের জন্য ৬০ মিনিট পর্যন্ত বিভিন্ন শারীরিক কসরত করা দরকার। অল্প পুশ আপ, দৌঁড়-ঝাঁপ সহ একাধিক অনুশীলন করা দরকার। এগুলি সপ্তাহে অন্তত ২ দিন করা উচিত।
advertisement
শিশুদের খাবারে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রাখা দরকার
বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। এবং ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই শিশুকে দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ানো উচিত। এছাড়া শিশুদের খাদ্য তালিকায় রাগি রাখা যায়। কারণ রাগিতে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম রাগিতে ৩৫০ থেকে ৩৭৫ মিলি গ্রাম করে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। যদি রাগি খেতে অপছন্দ করে তাহলে শিশুকে রাজমা দেওয়া যেতে পারে। প্রতি ১০০ গ্রাম রাজমাতে ২৭৫ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম করে ক্যালসিয়াম পাওয়া সম্ভভ। এভাবেই শিশুর শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে হবে।
advertisement
আরও পড়ুন - Champions League 2020-21: Shakhtar-র বিরুদ্ধে ধামাল জয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৫-০ গোলে জিতল Real Madrid
যে কোনও রকম ঠাণ্ডা পানীয় খাওয়া বন্ধ করতে হবে
বর্তমানে অনেক শিশুই ঠাণ্ডা পানীয় খেতে পছন্দ করে। কিন্তু সোডা এবং কার্বোনেড পানীয় খাওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে। কারণ এতে হাড়ের বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় জানা গিয়েছে সোডা বা এই জাতীয় পানীয় গ্রহণ করলে হারের ঘনত্বের উপর প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন রিপোর্টে প্রকাশ, যে সব শিশু সফট ড্রিঙ্ক পান করে তারা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার কম গ্রহণ করে। কারণ বিভিন্ন পানীয় গ্রহণের প্রবণতা বেড়ে যায় যার ফলে দুধ বা পুষ্টিকর পানীয় গ্রহণ অনেক হয়।
advertisement
অনলাইন ক্লাসের সময় শিশুর কী ভাবে বসছে সেদিকে নজর রাখতে হবে
শিশু যখন অনলাইন ক্লাস করে তখন যেন সে ৯০-৯০-৯০ এর ফর্মুলা মেনে চলে। এবিষয়ে নজর রাখার দায়িত্ব অভিভাবকদের। কনুই, হিপ এবং হাঁটু যেন ৯০ ডিগ্রি ভাবে থাকে সেই দিকে নজর রাখতে হবে। মাথায় রাখতে হবে সন্তানের পড়াশোনার জায়গাটি যেন তাদের কনুই-এর সমান উচ্চতায় হয়। প্রয়োজন হলে চেয়ারের সাইজে পরিবর্তন করা যেতে পারে। এবং লক্ষ্য রাখতে হবে চেয়ারে বসার পর শিশুর পা যেন চেয়ার থেকে না ঝোলে। হয় মেঝেতে পা দিয়ে রাখতে হবে অথবা পায়ের নিচে ছোটো কোনও স্টুল ব্যবহার করা যেতে পারে।
advertisement
শিশুদের ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা দেখা দিতে পারে?
ইন টোয়িং (In Toeing)
অনেক শিশুদের ক্ষেত্রে ইন টোয়িং-এর সমস্যা দেখা দিতে পারে। মূলত পায়ের বুড়ো আঙুলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। হিপ-এর সমস্যার জন্য বুড়ো আঙুলে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, ইন-টোয়িং এর জন্য বিশেষ কিছু চিন্তা করার কোনও প্রয়োজন নেই। কোনও পেডিট্রিয়াশিয়ান এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন। অথবা কোনও অর্থোপেডিক সার্জেনও এই সমস্যা সারিয়ে তুলতে সক্ষম।
নক নি (Knock Knees)
অনেক শিশুর মধ্যে নক নি-র সমস্যা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে হাঁটার সময় দুই পায়ের দু'টি হাঁটু অনেক সময় জড়ো হয়ে যায়। ফলে হাঁটতে সমস্যা দেখা দেয়। শিশুদের ১৮ মাস বয়স থেকে ৩৬ মাস বয়স পর্যন্ত নক নি-র সমস্যা দেখা দেয়। এবং ৭ বছর বয়সের মধ্যে সেই সমস্যা সেরে যাবে।
স্পাইন কার্ভেচার (Spine Curvature)
স্পাইনের যে কার্ভেচার রয়েছে তা অনেক সময় পরিবর্তন হয়ে যায়। কিন্তু সেই দিকে খুব একটা লক্ষ্য করেন না অনেকে। অভিভাবকদের খেয়াল রাখা উচিত স্পাইন কার্ভেচারের কোনও পরিবর্তন হয়েছে কি না। বাইরে থেকে দেখেই তা বোঝা সম্ভব। এই সমস্যা মূলত কিশোরীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়।
হাড়ের সমস্যার জন্য শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন হতে পারে-
হাড়ের কোনও সমস্যার জেরে শরীরে ইনফেকশন হতে পারে, এমনকী ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। যত বয়স বাড়ে, তত এই ধরনের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। এই ধরনের কোনও সমস্যা লক্ষ্য করলে যত দ্রুত সম্ভব বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া দরকার। এবং X-Ray বা MRI জাতীয় কোনও পরীক্ষার প্রয়োজন হলে তা করা উচিত।
রিকেট (Rickets)
শরীরে ভিটামিন D-এর অভাবে রিকেট দেখা দিতে পারে। এটি মূলত একটি হাড়ের সমস্যাজনিত কারণে একটি রোগ। এক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন ধরে রিকেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অস্টিওপেট্রোসিস (Osteopetrosis)- জন্ম থেকেই এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই রোগের কারণে সঠিক ভাবে হাড়ের গঠন হয় না। এছাড়াও দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তি হারানোর সম্ভাবনা থাকে।
হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিলেও অতিরিক্ত চিন্তার কোনও কারণ নেই। কারণ ভিটামিন D এবং ক্যালসিয়াম দিয়ে সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে তার সঙ্গে প্রয়োজন নিয়মিত শরীরচর্চা। নিয়মিত শরীরচর্চা করলে হাড়ের সমস্যায় কম ভুগতে হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে হাড়ের কোনও সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Location :
First Published :
October 20, 2021 10:50 AM IST