Explained: স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের পরিকল্পনা? আগে যা জানা দরকার...
- Published by:Dolon Chattopadhyay
Last Updated:
ঝুঁকি থাকলেও একটু বুঝে বিনিয়োগ করলে অল্প সময়ে ভালো টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। তাই কী ভাবে বিনিয়োগ করা উচিত শেয়ার বাজারে?
#কলকাতা: উপার্জনের কিছু পরিমাণ অর্থ প্রত্যকেই সঞ্চয় করেন। কেউ ব্যাঙ্ক বা কেউ পোস্ট অফিসে সঞ্চয় করলেও বর্তমানে বিভিন্ন বিনিয়োগ প্ল্যানেও বিনিয়োগ করছেন অনেকে। ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে সুদের হার কমছে। বর্তমান প্রজন্মের অধিকাংশই সেকারণে রেকারিং ডিপোজিট বা ফিক্সড ডিপোজিটে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না। এতে তাঁদের সঞ্চিত অর্থ থেকে আয় কম হচ্ছে তেমনই তার উপর ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। সেকারণে অনেকেই ঝুঁকছেন শেয়ার বাজারের উপর। ঝুঁকি থাকলেও একটু বুঝে বিনিয়োগ করলে অল্প সময়ে ভালো টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। তাই কী ভাবে বিনিয়োগ করা উচিত শেয়ার বাজারে? জেনে নেওয়া যাক…
শেয়ার বাজারে এখন পৌষ মাস। বম্বে স্টক মার্কেটে সেনসেক্স প্রায় ৬০ হাজার ছাড়িয়েছে। অন্য দিকে নিফটিও প্রায় ১৮ হাজারের গন্ডি পেরিয়ে গিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা প্রচুর উপায় করছেন। আর এর ফলে অনেক নতুন বিনিয়োগকারী স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করছেন। যাঁরা বিনিয়োগ করতেন অতীতে কিন্তু বর্তমানে আর স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেন না তাঁদের মধ্যে অনেকেই এখন অনুশোচনা করছেন। বর্তমান সময় তাঁরা টাকা বিনিয়োগ করলে মোটা অঙ্কের টাকা রিটার্ন পেতেন। গত কয়েক মাসে নতুন প্রায় ১.৫ কোটি বিনিয়োগকারী স্টক মার্কেটে যোগ দিয়েছেন।
advertisement
advertisement
অন্য দিকে বিগত মাসগুলিতে IPO তে আবেদনের সংখ্যা দেখলেও বোঝা যায় কত মানুষ শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করতে চাইছেন। যদি আপনিও স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক হন তাহলে এবিষয়ে অল্প কিছু জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। এবং কী ভাবে বিনিয়োগ করা হয় সে বিষয়েও তথ্য জানা দরকার। কারণ এই বিষয়গুলি না জানলে স্টক মার্কেটের গতিবিধি, কোন স্টক ভালো চলছে, কোনটি ভালো রিটার্ন দিচ্ছে ইত্যাদি বোঝা সম্ভব হয় না। পুরো বিষযটি সঠিক ভাবে জানা থাকলে স্টক মার্কেটে সঠিকভাবে বিনিয়োগ করা যায় এবং অর্থনৈতিক রিটার্নও ভালো আসে।
advertisement
যাই হোক, আপনি নিজেও স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অনলাইন এবং অফলাইন ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ করা হয়। যদি কারও কোনও অভিজ্ঞতা না থাকলে তাহলে তিনি কোনও ব্রোকারের মাধ্যমেও অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন।
স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে শেয়ার কেনা ও বেচার পক্রিয়াটিকে বলা হয় শেয়ার ট্রেডিং। যখন কোনও সংস্থা পাবলিক সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে তখন সেই সংস্থার শেয়ার কেনা ও বেচার জন্য শেয়ার মার্কেটে নথিভুক্ত হয়। যদিও স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা সবসময় ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বিনিয়োগের আগে যে বিষয়গুলি দেখা প্রয়োজন তা হল, বিনিয়োগকারী কি ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক? কারণ বেশি রিটার্ন পেতে গেলে ঝুঁকি নিতেই হবে। এবং স্টক মার্কেটের ক্ষেত্রে একটি কথা অত্যন্ত প্রচলিত, তা হল হাই রিস্ক হাই গেইন। তাই যে যত বেশি ঝুঁকি নিতে পারবে তিনি তাঁর বেশি লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা। যদি কেউ ঝুঁকি নিতে পারেন এবং প্রতি দিন বিনিয়োগ করার ইচ্ছা থাকে তাহলে তাঁর ক্ষেত্রে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ অবশ্যই ভালো বিনিয়োগের ক্ষেত্র।
advertisement
তবে স্টক মার্কেটে ঢোকার আগে আপনাকে প্রথমে নিজের লক্ষ্য স্থির করতে হবে। এবং সেই লক্ষ্য অনুযায়ী বিভিন্ন ক্ষেত্রে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। যদি কেউ বড় অর্থের মালিক হতে চান তাহলে তাঁকে নিয়মিত বিনিয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত টাকা বিনিয়োগ না করে, অল্প অল্প টাকা বিনিয়োগ করতে হবে।
advertisement
স্টক মার্কেট ব্যবসায় অন্যতম প্রতিষ্ঠিত নাম অ্যাঞ্জেল ব্রোকিং (Angel Broking)। তাদের বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই যেন স্বচ্ছ পরিকল্পনা থাকে। তাদের পরামর্শ, স্টক মার্কেটে ঢোকার আগে বকেয়া টাকা যেন মিটিয়ে ফেলা হয়। যদি কোনও ঋণ নেওয়া থাকে যেমন পার্সোনাল লোন, ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া বিল ইত্যাদি যেন মিটিয়ে দেওয়া হয়।
advertisement
পরিকল্পনা দরকার-
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। তাদের বক্তব্য, সব জায়গায় বিনিয়োগ করার পর এবং পরিবারের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করার পর মাসের শেষে যে পরিমাণ অর্থ পড়ে থাকে শুধুমাত্র সেই টাকা বিনিয়োগ করা উচিত। কখনই ধার করে টাকা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা উচিত নয়। এবং অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কোনও অর্থ থেকে স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। মাসের সমস্ত খরচ করে শুধুমাত্র অতিরিক্ত টাকা বিনিয়োগ করা উচিত। কারণ স্টক মার্কেটে যেহেতু লাভ বা লোকসানের কোনও নিশ্চয়তা নেই তাই প্রয়োজনীয় অর্থ কোনওভাবেই বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়। তাই জরুরি প্রয়োজনের জন্য কিছু টাকা রেখে দেওয়া দরকার। যদি সব টাকা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে দেওয়া হয় তাহলে জরুরি প্রয়োজনে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
advertisement
লক্ষ্য স্থির করা দরকার-
অ্যাঞ্জেল ব্রোকিং-এর পরামর্শ অনুযায়ী, বিনিয়োগ করার আগে বিনিয়োগকারীকে বুঝতে হবে তিনি ঠিক কী চাইছেন? এবং কী কারণের জন্য টাকা বিনিয়োগ করতে চাইছেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য টাকা বিনিয়োগ করতে চাইছেন নাকি স্বল্প সময়ের জন্য। পুরো বিষয়টি মনস্থির করার পরেই বিনিয়োগ করা উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিনিয়োগের প্ল্যান
কেন বিনিয়োগ করতে চাইছেন সে বিষয়ে মনস্থির করার পর সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোথায় বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগকারীর উপার্জন এবং খরচের উপর নির্ভর করে কোন প্ল্যানে বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে তা নির্বাচন করতে হবে। এবং এককালীন অর্থ সঞ্চয় করবেন না কি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অল্প অল্প করে বিনিয়োগ করবেন তা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আপডেট থাকা প্রয়োজন
প্রতি মুহূর্তে স্টক মার্কেট সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জেনে রাখা জরুরি। বাজারের অবস্থা নিয়ে নিয়মিত চর্চা করা দরকার। এবং যে সংস্থার স্টকে বিনিয়োগকারী বিনিয়োগ করেছেন সেই কোম্পানি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানা দরকার। এছাড়াও সেই কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট, অতীতের অবস্থাও জেনে রাখা দরকার।
বিনিয়োগের জন্য নিজের বাজেট করা দরকার
স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য নির্দিষ্ট বাজেট করা দরকার। কারণ অনেক সময় অতিরিক্ত অর্থ বিনিয়োগ করে ফেলেন অনেকে। যার ফলে সমস্যা তৈরি হয়। তাই সেই সমস্যা যাতে না হয় সেকারণে বাজেট করা খুবই দরকার।
কম্পানির ব্যবসার উপর তথ্য জানা দরকার
যে কম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা হচ্ছে সেই কম্পানির ব্যবসা সম্পর্কে জেনে রাখা দরকার। হয়তো বর্তমানে সেই ব্যবসার খুব একটা কদর না থাকলেও আগামী দিনে এর কদর বাড়বে। তাই ব্যবসার চরিত্রের উপর নির্ভর করে বিনিয়োগ করা সঠিক সিদ্ধান্ত।
Location :
First Published :
October 19, 2021 12:30 PM IST