Edible Oil Price: ক্রমশই বেড়ে চলেছে ভোজ্য তেলের দাম, পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের ব্যর্থতার কারণ কী?
- Published by:Siddhartha Sarkar
Last Updated:
উপার্জন বৃদ্ধি এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের উপরে ভিত্তি করে দেশে ভোজ্য তেলের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে।
#নয়াদিল্লি: সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই! গ্রাউন্ডনাট, মাস্টার্ড, বনস্পতি, সয়া, সানফ্লাওয়ার আর পাম- এই ৬ রকমেরই ভোজ্য তেলের দাম সম্প্রতি হু-হু করে বেড়ে গিয়েছে। লকডাউনের কালে যেখানে উপার্জনে টান পড়েছে নাগরিকদের, সেখানে এই ভোজ্য তেলের দাম গত এক বছরের মধ্যেই বেড়ে গিয়েছে ২০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ, এই তথ্য পেশ করেছে ডিপার্টমেন্ট অফ কনজিউমার অ্যাফেয়ার্স। দেশের ঘরে ঘরে সব চেয়ে বেশি যা ব্যবহৃত হয়, সেই মাস্টার্ড বা সর্ষের তেলের দাম গত বছরে এই সময়ে ছিল ১১৮ টাকা/কেজি, এখন তা এসে দাঁড়িয়েছে ১৭১ টাকা/কেজিতে। গ্রামাঞ্চলে সর্ষের তেলের চাহিদা বেশি হলেও শহরাঞ্চলে সয়া আর সানফ্লাওয়ার অয়েল বেশি ব্যবহৃত হয়, সেটাও বেড়েছে ৫০ শতাংশ/কেজি হিসাবে।
দেশে কী পরিমাণে ভোজ্য তেল দরকার হয়?
উপার্জন বৃদ্ধি এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের উপরে ভিত্তি করে দেশে ভোজ্য তেলের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। ১৯৯৩-৯৪ এবং ২০০৪-০৫ সালের মধ্যে গ্রামাঞ্চলে চাহিদা বেড়েছে ০.৩৭ কেজি-০.৪৮ কেজি; অন্য দিকে শহরাঞ্চলে সেই পরিসংখ্যান ০.৫৬-০.৬৬ কেজি। ২০১১-১২ সালের মধ্যে তা বেড়ে গিয়ে হয়েছে ০.৬৭-০.৮৫ কেজি শহরাঞ্চলে। এর পর আর পরিসংখ্যান মেলেনি। তবে মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফারমার ওয়েলফেয়ারের দাবি- বিগত ৫ বছরে সারা দেশে তা খুব কম করে হলেও ১৯,১০- ১৯.৮০ কেজিতে পৌঁছে গিয়েছে।
advertisement
advertisement
দেশে কতটা ভোজ্য তেল উৎপাদিত হয় আর কতটা আমদানি করা হয়?
মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফারমার ওয়েলফেয়ারের তথ্য বলছে যে ২০১৫-১৬ এবং ২০১৯-২০ সালের মধ্যে দেশে ভোজ্য তেল দরকার হয়েছে ২৩.৪৮-২৫.৯২ মিলিয়ন টন। সেই তুলনায় দেশে উৎপাদিত হয়েছে মাত্র ৮.৬৩-১০.৬৫ মিলিয়ন টন। ২০১৯-২০ সালে দরকার ছিল ২৪ মিলিয়ন টন; এর মধ্যে প্রধান উৎস অর্থাৎ সর্ষে, গ্রাউন্ডনাট আর গৌণ উৎস অর্থাৎ কোকোনাট, পাম, রাইস ব্র্যান- সব মিলিয়ে পাওয়া গিয়েছে ১০.৬৫ মিলিয়ন টন। বাকি আমদানি করতে হয়েছে- পাম অয়েল ৭ মিলিয়ন টন, সয়া অয়েল ৩.৫ মিলিয়ন টন, সানফ্লাওয়ার অয়েল ২.৫ মিলিয়ন টন। মূলত আর্জেন্তিনা আর ব্রাজিল থেকে আসে সয়া অয়েল, ইন্দোনেশিয়া আর মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল এবং ইউক্রেন আর আর্জেন্তিনা থেকে সানফ্লাওয়ার অয়েল।
advertisement
আমদানির কারণে কী ভাবে দাম বাড়ছে?
দেশের চাহিদার ৫৬ শতাংশ ভোজ্য তেল আমদানি করতে হচ্ছে। মালয়েশিয়ায় গত এক বছরের মধ্যে ক্রুড পাম অয়েলের দাম ২,২৮১ রিঙ্গিট থেকে দাঁড়িয়েছে ৩,৮৯০ রিঙ্গিটে। শিকাগো বোর্ড অফ ট্রেড এবারে সয়া তেলের দাম নিয়েছে ৫৫৯.৫১ ডলার/লিটার, গত বছরে এই সময়ে দাম ছিল ৩০.১৬ ডলার। এখানেই শেষ নয়, ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাইস বোর্ডেও দেখা গিয়েছে মৃল্যবৃদ্ধি- ২০১৪-১৬ সালে তা ছিল ১০০-তে আর এখন এসে ঠেকেছে ১৬২-তে। গত বছরের এপ্রিলেও সংখ্যাটা ছিল ৮১! এতটা বাড়তি দাম দিতে হচ্ছে বলে দেশেও বিক্রির সময়ে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ছে।
advertisement
বিদেশে কেন দাম বাড়ছে?
সলভেন্ট একস্ট্র্যাক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার একজিকিউটিভ ডিরেক্টর বি ভি মেহতা বলছেন যে ওই সব দেশে এখন ভোজ্য তেলের উৎস জ্বালানি তেল উৎপাদনের উৎস হিসাবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই উৎপাদনের কারণে বিদেশের বাজারেও করোনাকালে ভোজ্য তেলের চাহিদা বেড়েছে, ফলে দাম বেড়েছে। এছাড়া আছে উৎসমূলের ক্ষয়ক্ষতি। যেমন, মালয়েশিয়ার শ্রমিক সমস্যা, লা নিনায় সয়া এবং পাম উৎপাদনের হ্রাস তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
advertisement
আমদানি শুল্ক কমালে কি তেলের দাম কমবে না?
সলভেন্ট একস্ট্র্যাক্টর অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া বলছে যে সেস কর অনেকাংশে বাড়িয়ে দেওয়ায় পাম অয়েলে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৫৯.৪০ শতাংশ, ক্রুড-সয়া-সানফ্লাওয়ার অয়েলে ৩৮.৫০-৪৯.৫০ শতাংশ। তাই সংগঠনের দাবি, যদি ক্রুড অয়েল শুল্কমুক্ত এবং অন্য অয়েল সীমিত শুল্কের অধীনে নিয়ে আসা হয়, তবে দেশে দাম অবশ্যই কমবে। যদিও অনেকেই এই মন সমর্থন করছেন না। তাঁদের দাবি, বিদেশের বাজারে দাম বাড়ছে বলে শুল্ক কমালেও খুব একটা হেরফের হবে না, বরং দেশ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে।
view commentsLocation :
First Published :
May 29, 2021 2:05 PM IST