Explained: Bigg Boss-র ঘরে Shamita Shetty-র জন্য প্রচারের আলোয় এসেছে গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
সম্প্রতি বিগ বস ওটিটি-তে (Bigg Boss OTT) দেখা গিয়েছে বলিউড (Bollywood) অভিনেত্রী শমিতা শেঠিকে (Shamita Shetty)।
#কলকাতা: সম্প্রতি বিগ বস ওটিটি-তে (Bigg Boss OTT) দেখা গিয়েছে বলিউড (Bollywood) অভিনেত্রী শমিতা শেঠিকে (Shamita Shetty)। বিতর্কিত এই শো-এ নানান রকম বিতর্ক এবং ওঠা-পড়ার মধ্যে দিয়ে গিয়ে তিনি অবশেষে ফাইনালিস্টদের তালিকায় নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছেন এবং বিগ বস ১৫-তেও তাঁকে দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন রকম সেলিব্রিটি সংক্রান্ত গুঞ্জন থেকে শুরু করে বিতর্ক এ সব তো এমনিতেই বিগ বস শো-এর অঙ্গ। কিন্তু বিগ বস ওটিটি-তে (Bigg Boss OTT) এ বার একটা বিষয় আলাদা করে নজর কেড়েছে। এই শো-এ মানসিক স্বাস্থ্য এবং সেলফ কেয়ার সংক্রান্ত কথাবার্তা বা আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তার সঙ্গে যে বিষয়টা নেটিজেনদের বিশেষ ভাবে নজর কেড়েছে, সেটা হল- খাবার নিয়ে শমিতা শেঠির (Shamita Shetty) বক্তব্য। তিনি বিগ বসের ঘরের বাকবিতণ্ডার সময় বারবার নিজের খাবারের প্রসঙ্গে কথা বলেছেন এবং একটি নির্দিষ্ট ডায়েট মেনে চলার ব্যাপারেও তিনি বারবার জোর দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু কী এমন ডায়েট? আর সেটা নিয়েই নেটিজেনদের মধ্যে শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
advertisement
“সাধারণ খাবার খেতে পারি না”, বলেছেন শমিতা শেঠি:
advertisement
বিগ বস ওটিটি-র একটা এপিসোডে দেখা গিয়েছে, ভোজপুরি অভিনেত্রী অক্ষরা সিং-এর (Akshara Singh) সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন শমিতা শেঠি। ঝামেলার মূল কারণ হল- গ্লুটেন-ফ্রি গ্র্যানিউলস। শমিতার বক্তব্য ছিল, তাঁর এবং নেহা ভাসিনের (Neha Bhasin) জন্যই বিশেষ ভাবে ওই খাবার পাঠানো হয়েছিল। ঝামেলা এতটাই দূর এগিয়েছিল যে, তাতে রীতিমতো মেজাজ হারান শমিতা। সেই সময়ই তাঁকে নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বলতে শোনা গিয়েছিল। শমিতা জানিয়েছিলেন যে, তিনি বহু বছর ধরে এমন শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে যুঝে আসছেন, তাই সাধারণ খাবার তিনি খেতে পারেন না।
advertisement
আসলে শমিতা কোলাইটিস রোগে আক্রান্ত। এই কোলাইটিস (Colitis) আসলে ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ বা আইবিডি (IBD)। এই রোগের কারণে আমাদের পরিপাক তন্ত্রে প্রদাহ হয় এবং তা থেকে ক্ষতও তৈরি হয়। শুধু তা-ই নয়, মলাশয় (Colon) অথবা বৃহদান্ত্রের (Large Intestine) ভিতরের প্রাচীরে জ্বালা করতে থাকে। এই রোগের উপসর্গের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- পেট ব্যথা, ক্র্যাম্পিং, জ্বর, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, ডায়েরিয়ার সঙ্গে রক্ত পড়া-সহ আরও অনেক কিছু।
advertisement
আরও পড়ুন - Bengali Sweets: শীতের আমেজ আসছে,নলেন গুড়ের এই মিষ্টিগুলির অপেক্ষায় বাঙালি খাদ্যপ্রেমীরা
গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট (Gluten-free Diet) শমিতার জন্য বেস্ট!
এই রোগের কারণে শমিতা গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যাঁরা আলসারেটিভ কোলাইটিসে ভুগছেন, তাঁদের গ্লুটেন সংবেদনশীলতা (Gluten Sensitivity) থাকে। আর এই অবস্থা ক্রমশ বাড়ছে। সাম্প্রতিক কয়েক বছরে বেশির ভাগ মানুষকেই হজমের সমস্যা সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হতে দেখা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তাঁরা গ্লুকোজ ইনটলারেন্সেও ভুগছেন বলে জানিয়েছেন। এমনকী গ্লুটেন জাতীয় খাবার খাওয়া হলে কোনও সেলিয়্যাক রোগের (Celiac Disease) লক্ষণ ছাড়াই অটোইমিউন রোগ হতে পারে।
advertisement
ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজেস নামক জার্নালে একটি গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছে, যে সব আইবিডি রোগী গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলেছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ রোগীই গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল উপসর্গ থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
advertisement
কিন্তু এই গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট কী? আর কাদেরই বা এই ডায়েট মেনে চলা উচিত?
বেঙ্গালুরুর অ্যাস্টার সিএমআই হসপিটালের সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান এডুইনা রাজ জানাচ্ছেন, এটা এক ধরনের প্রোটিন। যা গম, বার্লি, রাইয়ের মতো শস্যের মধ্যে থাকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই নানা ধরনের রুটি-পাঁউরুটি, ফুলকা/চাপাটি, পাস্তা, কেক, বিস্কুট, রাই, বার্লি, স্যুপ বেস, বিয়ার, ক্যান্ডি প্রভৃতি খাবারের মধ্যেও পাওয়া যাবে গ্লুটেন। তিনি আরও জানান যে, অনেকেই নিজেদের খাদ্যতালিকা থেকে গ্লুটেন বাদ দিচ্ছেন, অথচ গমের সঠিক বিকল্প সম্পর্কে তাঁদের সে রকম ধারণাই নেই। নিজেদের অবস্থা অনুযায়ী গমের কোন বিকল্পের উপর নির্ভর করা উচিত, সেই বিষয়ে নিউট্রিশনিস্টের সঙ্গেও আলোচনা করেন না। ফলে অবস্থা আরও জটিল হয়ে ওঠে।
advertisement
এই প্রসঙ্গে তাঁর পরামর্শ, প্রথমে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের কাছে গিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে হবে। তাতে গ্লুটেন সংবেদনশীলতা, সেলিয়্যাক রোগ প্রভৃতি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে। এর থেকেই নিউট্রিশনিস্ট বুঝতে পারবেন, ওই রোগীর গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েটের প্রয়োজন আছে কি না।
গুরুগ্রামের মণিপাল হসপিটালের বিভাগীয় প্রধান ডায়েটিশিয়ান ডা. শালিনী গারউইন ব্লিস জানান, যাঁদের সেলিয়্যাক রোগ রয়েছে এবং যাঁরা গ্লুটেন ইনটলারেন্ট (Gluten Intolerant), তাঁদেরকেই সাধারণত গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে, যাতে এই রোগ সংক্রান্ত সমস্ত রকম উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
তাঁর মতে, সেলিয়্যাক রোগে আক্রান্ত রোগীদের জন্যই এই ধরনের ডায়েট বানানো হয়েছে। কারণ এই ধরনের রোগীদের সাধারণত গ্লুটেন জাতীয় খাবারে অ্যালার্জি থাকে। এমনকী যাঁদের আলসারেটিভ কোলাইটিস রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও যদি উপসর্গ না-কমে, তা হলে সেই অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে গ্লুটেন জাতীয় উপাদানে রাশ টানতে বলা হয়। তবে সেটা খুবই স্বল্প সময়ের জন্য।
এটা কতটা নিরাপদ?
ডা. গারউইন ব্লিসের পরামর্শ, সেলিয়্যাক রোগের উপসর্গ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েটের উপর নির্ভর করা উচিত। তাই এটা নিয়ন্ত্রণকারী ডায়েট হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এ ক্ষেত্রে গম ও গমজাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে বলা হয়। ফলে যে সব রোগীকে গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে মাল্টিপল ভিটামিন, মিনারেলস-এর ঘাটতি থেকে যায়। শুধু তা-ই নয়, গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েটের মধ্যে ফাইবারের অভাব রয়েছে। আর হজমের জন্য ফাইবার হল অন্যতম প্রধান নিউট্রিয়েন্ট।
গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট কি আলসারেটিভ কোলাইটিসের মতো ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম?
সিনিয়র ডায়েটিশিয়ান এডুইনা রাজ জানাচ্ছেন যে, ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজে আক্রান্ত সব রোগীদেরই যে গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলতে হবে, তার কোনও মানে নেই। তবে ওই রোগীদের মধ্যে যাঁদের ক্ষেত্রে সেলিয়্যাক রোগ অথবা গ্লুটেন সংবেদনশীলতা ধরা পড়বে, তাঁদেরকেই সাধারণত গ্লুটেন-ফ্রি ডায়েট মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।
তাঁর মতে, এই রোগ কতটা গুরুতর আকার ধারণ করেছে, সবার প্রথমে সেটা বুঝে নিতে হবে। এডুইনা বলেন, আইবিডি-র ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনও সর্বব্যাপী ডায়েট সংক্রান্ত পরামর্শ থাকে না। সে ক্ষেত্রে তাই মেডিক্যাল এবং নিউট্রিশন এক্সপার্টদের পরামর্শ নিতে হবে। তবে যাঁদের সেলিয়্যাক রোগ অথবা গ্লুটেন সংবেদনশীলতা থাকে, তাঁদের গ্লুটেন এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ গ্লুটেন ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্ষতি করে এবং এর জেরে প্রদাহের সৃষ্টি হয়। আর তার ইমিউন রেসপন্স হিসেবে ডায়েরিয়া, ব্লোটিং, কোষ্ঠকাঠিন্য, গা গোলানো, বমি এবং ওজন কমে যাওয়া-সহ নানা রকম উপসর্গ দেখা দিতে থাকে।
Location :
First Published :
November 22, 2021 9:16 PM IST