Explained: Union Budget 2022: সবুজ নয়, কৃষির জন্য প্রয়োজন চিরসবুজ বিপ্লব, আসন্ন বাজেটে চোখ কোন দিকে

Last Updated:

Explained: Union Budget 2022: বাজেটে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ নিশ্চিত করার সময় এসেছে।

budget 2022: not green indian agriculture needs evergreen revolution research needs booster shot- Photo- File
budget 2022: not green indian agriculture needs evergreen revolution research needs booster shot- Photo- File
#কলকাতা: ২০২২ সালের বাজেটের আগে কৃষি ক্ষেত্রে সংস্কার (Agricultural Reforms) শুধুমাত্র রাজনীতিবিদদের নয়, নীতিনির্ধারকদেরও মনের কেন্দ্রবিন্দুতে স্থান করে নিয়েছে। নিজেদের আয় বাড়ানোর জন্য কৃষকদের কাছে অবশ্যই সর্বশেষ গবেষণা ও উন্নয়নের (Research And Development) অ্যাকসেস থাকতে হবে। করোনাভাইরাস (Coronavirus) অতিমারীর জেরে মন্দার মধ্যেও গত বছর রেকর্ড পরিমাণ রবি ফসল উৎপাদন (Rabi Production) হয়েছে। যা কৃষি খাতে (Agriculture Sector) প্রফুল্লতা এনেছে। যাই হোক, স্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য একটি সুষম খাদ্যের তাৎপর্য বিবেচনা করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের (Ministry of Agriculture and Farmers Welfare) জন্য বাজেটে (Budget) বরাদ্দের তুলনায় কৃষি খাতে সরকারি সহায়তা বেশি প্রয়োজনীয়। গবেষণা যে আধুনিক কৃষি উন্নয়নের ভিত্তিপ্রস্তর তা বলাই বাহুল্য। তাই বাজেটে কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল বরাদ্দ নিশ্চিত করার সময় এসেছে।
কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় বাজেটে বরাদ্দ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৮ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা,যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ৭ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা ছিল। যার প্রায় ৮৫ শতাংশ বেতন এবং অন্যান্য প্রশাসনিক/প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয়ের জন্য যায়, গবেষণার জন্য সামান্য অবশিষ্ট থাকে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ (ICAR)-র তথ্য অনুসারে, ২০১৮-১৯ সালে ২ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের মধ্যে ১ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা বেতনের জন্য ব্যয় করা হয়েছিল। গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হওয়া রাজ্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও একই কারণে ধুঁকছে।
advertisement
অর্থনৈতিক সমীক্ষা (Economic Survey) অনুসারে, ভারতের কৃষি জিডিপি (Agricultural GDP)-তে মোট গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যয় গত দুই দশকে ০.৩ শতাংশ-০.৫ শতাংশে স্থবির হয়ে পড়েছে। এই হার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (২.৮ শতাংশ), চিন (২.১ শতাংশ), দক্ষিণ কোরিয়া (৪.৩ শতাংশ) এবং ইজরায়েলের (৪.২ শতাংশ) থেকে অনেক কম। নবম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৯৭-২০০২) থেকে কৃষি গবেষণার ক্ষেত্রে কিছুটা নজর দেওয়া হয়েছিল।
advertisement
advertisement
ভারতে গবেষণা ও উন্নয়নে এই ধরনের ক্ষুদ্র বিনিয়োগ কৃষি ক্ষেত্রে একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণাকে বাধাগ্রস্ত করে। ফসলের ফলনের ব্যবধান, ভোক্তাদের পছন্দের পরিবর্তন, সম্পদের ক্ষমতা হ্রাস, ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব, গত কয়েক দশক ধরেই এই রকম নানা সমস্যার মুখোমুখি কৃষকরা।
advertisement
মজার বিষয় হল, ভারতের বৃহত্তম কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যবস্থা রয়েছে। যাতে রয়েছে ২৭ হাজার ৫০০ জন বিজ্ঞানী এবং এক লক্ষেরও বেশি সহায়ক কর্মী। এছাড়াও এই সেক্টরের বেশ কয়েকটি সংস্থা এবং সেগুলি চালানোর জন্য ব্যয়ের বিষয়টিও রয়েছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ সরাসরি ১১৮টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধান করে, যার মধ্যে ৩টি কেন্দ্রীয় এবং ৪টি ডিমড বিশ্ববিদ্যালয়,৬৪টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, ১৭টি জাতীয় গবেষণা কেন্দ্র, ৬টি জাতীয় ব্যুরো এবং ২৫টি প্রকল্প অধিদফতর রয়েছে। ICAR-এর অধীনে স্থাপিত দেশব্যাপী এই প্রতিষ্ঠানগুলি ছাড়াও ৬৩টি রাষ্ট্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এত বৃহৎ কৃষি গবেষণা নেটওয়ার্ক (Agricultural Research Network) থাকা সত্ত্বেও ভারত তার কৃষি খাতের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলির মোকাবিলা করতে পারেনি। তা সে শস্য উৎপাদন, উৎপাদনশীলতা, জলের ঘাটতি, বিপণন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, যাই হোক না কেন।
advertisement
আজ দেশে কৃষির সামনে চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভয়ঙ্কর। ২০১৪ সালের মে মাস ICAR-র অধীনে জাতীয় কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা (NARS) ফসলের ১ হাজার ৪০৬টি জাত প্রকাশ করেছে এবং বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। তবে এর বাইরেও আমাদের একটি ‘চিরসবুজ বিপ্লব’ দরকার। উত্তর-পশ্চিম সমভূমি জুড়ে সবুজ বিপ্লব (Evergreen Revolution) ছড়িয়ে পড়ার কয়েক বছরের মধ্যে এই উপলব্ধি শুরু হয়েছিল যে সবুজ বিপ্লবের ফলে আসা প্রযুক্তিগুলির প্রভাব আছে। বৃষ্টিনির্ভর এলাকা, দরিদ্র কৃষক এবং ভূমিহীন শ্রমিক অনেকাংশেই কমেছে। তাই, এখন সারাদেশে ধূসর এলাকার সবুজায়নের জন্য গবেষণার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
advertisement
যদিও কৃষি গবেষণা ও উন্নয়নকে এখনও অনেক দূর যেতে হবে। এটির জন্য কৌশলগত প্যাকেজের দরকার। নির্দিষ্ট অঞ্চলে নির্দিষ্ট ফসল এবং কৃষি-বাস্তুসংস্থানের প্রয়োজন অনুসারে এটি তৈরি করতে হবে। এর জন্য বৈজ্ঞানিক ভাবনাকে আরও জোরাল করার, সমস্যা সমাধানের দিকে মনোনিবেশ করার প্রয়োজন।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৃষকদের অবদানের গুরুত্বকে খর্ব করা যাবে না। 'জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান' স্লোগানটি 'আত্মনির্ভর ভারত' (Atmanirbhar Bharat)-র লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় থাকতে হলে কৃষি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জন্য সমর্থন জোরদার করার প্রয়োজনীয়তা আছে। এটা জোর দিতে হবে যে কৃষক কল্যাণের জন্য 'কৃষক-প্রথম', এই ভাবনাকে মনে মনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
advertisement
কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য ভারতীয় কৃষিকে বিশ শতকের উৎপাদন-কেন্দ্রিক ব্যবস্থা থেকে একুশ শতকের সামগ্রিক কৃষি-খাদ্য ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করা প্রয়োজন। দরিদ্র কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য, এমন প্রযুক্তির প্রয়োজন যা খরচ কম করে এবং কৃষি স্থিতিস্থাপকতা তৈরি করে। কৃষির পাশাপাশি জলাশয় ব্যবস্থাপনা (Watershed management,), কৃষি বনায়ন (Agroforestry), চারণ ক্ষেত্র ইত্যাদি গুরুত্ব পেয়েছে। উদ্যানপালন (Horticulture), ডাল, তৈলবীজ, মসলা, ঔষধি গাছ, পশুখাদ্য, দুগ্ধজাত (Dairying), পশুপালন (Animal husbandry), জলজ প্রাণী পালন এবং মৌমাছি পালন (Beekeeping), মাশরুম চাষ (Mushroom Cultivation), ভার্মি কম্পোস্টিং (Vermicomposting), হাঁস-মুরগি, শূকর পালন ইত্যাদি কার্যক্রম গবেষকদের কাছ থেকে অগ্রাধিকার পাচ্ছে এবং তা হওয়াই উচিত।
সবুজ বিপ্লবের দ্বিতীয় প্রজন্মের সমস্যাগুলির প্রতিকূল পরিবেশগত প্রভাব, যেমন ভূমির অবক্ষয় এবং এর ফলে মাটির উর্বরতা হ্রাস, ভূগর্ভস্থ জলের স্তর হ্রাস, উৎপাদনশীলতা হ্রাস এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি ইত্যাদি মোকাবিলার জন্য কৃষি সংরক্ষণ, জৈব কৃষিকাজ (Organic Farming), মাইক্রো-সেচ এবং পুষ্টি-ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে একটি দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তন প্রয়োজন। 'প্রতি ফোঁটায় আরও ফসল’ হয়ে উঠেছে নতুন মন্ত্র। জিরো-টিলেজ, ড্রিপ সেচ, খরা, বন্যা, তাপ, ঠান্ডা এবং কীটপতঙ্গ প্রতিরোধী ফসলের জাতগুলি বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। সমন্বিত কীটপতঙ্গ ও পুষ্টি ব্যবস্থাপনা, জৈব পদার্থের পুনর্ব্যবহার, জৈবসার (Biofertilisers) এবং জৈব কীটনাশকের (Biopesticides) ব্যবহার নিয়ে নানা বিষয় এখন মধ্যবর্তী পর্যায়ে রয়েছে।
হাইব্রিড প্রযুক্তি, জৈবপ্রযুক্তি, সুরক্ষিত চাষ, নির্ভুল চাষ, জৈব শক্তি, ফসলের বায়োফোর্টিফিকেশন, রিমোট সেন্সিং, তথ্য ও প্রযুক্তি, ড্রোন, সেন্সর, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ইত্যাদির মতো উদ্ভাবনগুলির ব্যবহার জরুরিভাবে বাড়াতে হবে। কৃষি-খাদ্য উৎপাদন, উৎপাদন-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা এবং কৃষি প্রক্রিয়াকরণে দক্ষতা উন্নত করার সম্ভাবনা আছে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার পরিকল্পনা করেছেন। এই প্রচেষ্টায় কমপক্ষে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের অবদান রাখতে কৃষি খাতের লক্ষ্য থাকা উচিত। এই লক্ষ্যে কৃষি গবেষণায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। মোট কথা কৃষি গবেষণা একটি বুস্টার ডোজ প্রয়োজন। কৃষিতে গবেষণা ও উন্নয়নে ব্যয় বৃদ্ধি শুধুমাত্র জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য একটি অত্যাবশ্যক প্রয়োজনই নয়, আর্থ-সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন বাজেটে কৃষি খাতে গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য বিশেষ আর্থিক বরাদ্দ বাড়ানোর দায়িত্ব এখন কেন্দ্রীয় সরকারের ঘাড়ে।
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained: Union Budget 2022: সবুজ নয়, কৃষির জন্য প্রয়োজন চিরসবুজ বিপ্লব, আসন্ন বাজেটে চোখ কোন দিকে
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা ! উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগ চলবে
দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা ! উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগ চলবে
  • দক্ষিণের সব জেলায় ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা !

  • উত্তরবঙ্গেও দুর্যোগ চলবে

  • জেনে নিন আবহাওয়ার আপডেট

VIEW MORE
advertisement
advertisement