Expalined: Coronavirus -র থেকেও ভয়াবহ ক্ষতি করবে Climate change! এখন থেকেই সচেতন থাকতে হবে
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
Climate Change: মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস (Bill Gates) এক বার বলেছিলেন, “কোভিড ১৯ (coronavirus) অত্যন্ত চিন্তার বিষয়, কিন্তু তার থেকেও খারাপ হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে, তা কোভিড ১৯ এর থেকে আরও মারাত্মক হতে পারে। আর দীর্ঘ সময় ধরে সেই ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।”
#নয়াদিল্লি: দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও কোভিডের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি কখনও ভালো, তো কখনও আবার খারাপ। প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে সংক্রমণের পরিসংখ্যান। কেরলের পরিস্থিতি এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। করোনা পরিস্থিতির জেরে যে শুধু শারীরিক সমস্যা হচ্ছে, এমনটা নয়। মানসিক ভাবেও অনেকে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন অনেকে। এ ছাড়াও আরও বড় একটি সমস্যা তৈরি হয়েছে। আসলে, ক্লাইমেট চেঞ্জ বা জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) ক্ষেত্রে বিরাট প্রভাব ফেলছে করোনা ভাইরাস (Coronavirus)। এমনই বেশ কিছু তথ্য উঠে এসেছে।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস (Bill Gates) এক বার বলেছিলেন, “কোভিড ১৯ (coronavirus) অত্যন্ত চিন্তার বিষয়, কিন্তু তার থেকেও খারাপ হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন।” কেন তিনি এ কথা বলছেন, সেটাও বিশ্লেষণ করে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, “ক্লাইমেট চেঞ্জ বা জলবায়ু পরিবর্তনের (Climate Change) ফলে বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হবে, তা কোভিড ১৯ এর থেকে আরও মারাত্মক হতে পারে। আর দীর্ঘ সময় ধরে সেই ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।” এখানেই থেমে থাকেননি মাইক্রোসফট প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে আগামী দিনের পরিস্থিতিরও তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক প্রাণহানি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে গোটা বিশ্বকে। কিন্তু প্রতিদিন গোটা বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ কার্বন নির্গত হচ্ছে, তা যদি নিয়ন্ত্রণ না-করা যায়, তা হলে এই পরিমাণ প্রাণহানি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি আগামী দিনে প্রতিনিয়ত দেখতে হবে। অন্য দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organization)-র তরফে বলা হয়েছে, “যদি আমরা নিজেদের সুরক্ষিত না-রাখি, তা হলে কিন্তু আমাদের মধ্যে কেউই সুরক্ষিত থাকবে না।” একই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন সিঙ্গাপুরের অর্থমন্ত্রী লওরেন্স ওয়াং (Lawrence Wong)। তিনিও এ বিষয়ে আশঙ্কার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এই অতিমারি পরিস্থিতি চলে যেতে পারে, কিন্তু আবার জলবায়ু সমস্যা চলে আসতে পারে।”
advertisement
advertisement
কোভিড ১৯ কী ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের উপলব্ধিকে পরিবর্তন করেছে?
বর্তমানে কোভিড ১৯ অতিমারি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে জলবায়ু নিয়ে সমস্যা আসতেই পারে। আর অনেকেই মনে করছেন যে, কোভিড ১৯ জলবায়ু পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়ে গেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের মধ্যে যে ফাঁক-ফোকর রয়েছে, কোভিড ১৯ তা অত্যন্ত সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, কোন দেশ ধনী আর কোন দেশ গরিব। প্রিভিলেজড এবং আন-প্রিভিলেজড সমাজের যে বৈষম্য, তা-ও প্রকট করে দিয়েছে। সমাজের বেশ কিছু কমিউনিটি এক প্রকার বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। সেটা অতিমারি পরিস্থিতির জন্যও হতে পারে, আবার জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেও হতে পারে।
advertisement
বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট করে কোনও সময়সীমা উল্লেখ না-করলেও তাঁরা মনে করেন, কোনও এক সময় অতিমারি পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভাবে কেটে যাবে এবং তার পর সাধারণ মানুষ পরিবেশ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে মূলত পরিবেশ রক্ষায় কী কী কর্তব্য, তা নিয়ে আলোচনা করবে। এ বিষয়ে বিশ্বের আটটি দেশের প্রায় তিন হাজার মানুষের উপর একটি সমীক্ষা করেছিল BCG। ওই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৩০০০ জনের মধ্যে অধিকাংশ জনই বর্তমানে নিজেদের চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে। তারা কোনও বিষয়ের উপর স্থায়ী সমাধান পছন্দ করে। তারা জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি কেটে গেলে জলবায়ু রক্ষা নিয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ করবে এবং সাধারণ মানুষের ব্যবহার জলবায়ুর কতটা ক্ষতি করে, তা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও করবে।
advertisement
ওই সমীক্ষা রিপোর্ট থেকে আর কী কী জানা গিয়েছে?
ওই সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি, আগামী দিনে সাধারণ মানুষ তাদের শরীর নিয়ে যতটা না-উদ্বিগ্ন হবে, তার থেকে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন হবে জলবায়ু নিয়ে। কারণ যত দিন এগোচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন তত বেশি চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এমনকী কোভিডের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কী কী প্রভাব পড়েছে, সেই বিষয়েও অনেক তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ওই রিপোর্টে।
advertisement
তবে করোনার জেরে বেশি পরিমাণে গ্রিন হাউজ গ্যাস ও কার্বন নির্গমন অনেকটাই কমেছে। কোভিডের জেরে একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছিল বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতি। একাধিক কলকারখানা সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনও বন্ধ ছিল। পাশপাশি লকডাউনের জেরে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষজনই বেরিয়েছেন, ফলে বেশির ভাগ যান চলাচল বন্ধ ছিল। এর ফলে কার্বন নির্গমনও কম হয়েছে।
advertisement
চলতি বছরে জাতিসংঘের বার্ষিক সম্মেলনে করোনা ভাইরাস, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকটি দেশের নেতারা রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই সমস্যা সমাধানে গোটা বিশ্বকে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, “আমরা যে ভাবে নিজেদের ক্ষতি করছি, তার দায়ভার আমাদেরই নিতে হবে।”
advertisement
এ দিকে সম্প্রতি একটি রিপোর্টে প্রকাশ হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে পশ্চিমবঙ্গ এবং বিহারে। এমনকী, এই দুটি রাজ্যের বাসিন্দারা সব থেকে বেশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে পারেন। পাশাপাশি, ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, ভারতের গড় তাপমাত্রা এক ডিগ্রি বাড়লেই তা ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। তবে শুধু এই দুটি রাজ্য নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়বে সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। তাই এখন থেকেই সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোঁজার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতের অর্থনীতি মূলত কৃষি নির্ভর তাই জলবায়ু পরিবর্তন ব্যাপক ভাবে কৃষির উপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। যে হেতু পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার কৃষিনির্ভর রাজ্য, তাই এই দুই রাজ্যে প্রভাব থাকবে সব থেকে বেশি।
করোনা শুধু জলবায়ু পরিবর্তনের উপর প্রভাব ফেলছে না, শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি করোনার জেরে একাধিক মানসিক সমস্যাও তৈরি হয়েছে। কয়েক দিন আগে এ বিষয়ে একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তাতে দেখা যায়, করোনার জেরে সাধারণ মানুষের মানসিক সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। প্রভাব পড়ছে স্বাভাবিক যৌন জীবনে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রেও জোর দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
করোনা কবে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল হবে, সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে তাঁরা জানিয়েছেন, করোনা থেকে মুক্তি পেতে আরও কিছুটা সময় হয় তো অপেক্ষা করতে হবে। তাই নিউ নর্ম্যালের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার উপর পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। পাশাপাশি, কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও জোর দেওয়া হচ্ছে। কারণ, এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে। আর করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনাও অনেকটাই কমবে।
Location :
First Published :
October 10, 2021 1:20 PM IST