Coronavirus: ভিজে কাশি না শুকনো কাশি? কোভিডের সঙ্গে এর সম্পর্ক কী? আগেভাগেই জেনে সতর্ক হন
Last Updated:
ভিজে কাশির (Wet Cough) সঙ্গে কফ বেরোনো লং কোভিডের (Long Covid) লক্ষণ হিসাবে দেখা গিয়েছে।
#নয়াদিল্লি: ২০২০ সালে হানা দিয়েছিল। মাঝে কেটে গিয়েছে দু বছর। কিন্তু এখনো এদেশ থেকে করোনা কাঁটা যায়নি। কোভিড-১৯-এর তিনটি ঢেউয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু এখনো পুরোপুরি মারণ ভাইরাস থেকে রেহাই মেলেনি। ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশে চতুর্থ ঢেউয়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ভারতে করোনা গ্রাফ কিছুটা নিম্নগামী হলেও একেবারে চিন্তামুক্ত হয়েনি ভারতবাসী। আর গত দুই বছর ধরে সারা বিশ্বে করোনা আতঙ্ক শুধু আমাদের শরীর এবং মন নয়, একইসঙ্গে আমাদের সমগ্র জীবনধারাকে প্রভাবিত করছে। তবে কোভিড-১৯ থেকে সেরে উঠলেই কি আমরা বিপদমুক্ত? টেস্টে নেগেটিভ রিপোর্ট আসলেই কি কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াই শেষ হয়ে যায়? বিগত দিনে এই ধরনের একাধিক প্রশ্নই বারে বারে ঘুরে ফিরে আসছিল। কারণ বেশ কিছু কোভিড রোগীর শরীরে অসুস্থ হওয়ার দীর্ঘদিন পরেও করোনার বেশ কিছু লক্ষণ থেকে যেতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু কীভাবে দীর্ঘ কোভিড উপসর্গ চিহ্নিত করা যায়, সেবিষয়েও বিশেষজ্ঞরা চিন্তায় ছিলেন। দেখা গিয়েছে, অন্যান্য উপসর্গের সঙ্গে কাশি করোনার একটি অন্যতম প্রধান উপসর্গ। বিশেষ করে ভিজে কাশির (Wet Cough) সঙ্গে কফ বেরোনো লং কোভিডের (Long Covid) লক্ষণ হিসাবে দেখা গিয়েছে। তাহলে দেখা যাক লং কোভিডের সঙ্গে ভিজে কাশির কতটা সম্পর্ক রয়েছে।
লং কোভিড এবং ভিজে কাশি কতটা সম্পর্কযুক্ত?
গত দু'বছরে অনেকেই লং কোভিডের লক্ষণ অনুভব করছেন। এমনকী বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি অনেকেই। সেক্ষেত্রে কোভিডের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল কাশি। এছাড়া কোভিড-১৯-এর এক একটি ভ্যারিয়েন্টে রোগীর শরীরে এক এক রকম লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে যেমন রয়েছে স্বাদ ও গন্ধ চলে যাওয়া, জ্বর, দুর্বলতা ইত্যাদিও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সার্স-কোভ-২ সংক্রমণের পরে কয়েক সপ্তাহ কিংবা মাস কাশি থাকতে পারে। আসলে কাশি হল ফুসফুসকে রক্ষা করে যা ফুসফুস ভালো রাখার স্বাভাবিক এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ভেজা কাশিতে রোগীর কাশির সঙ্গে শ্লেষ্মা বা কফ বের হয়। এবিষয়ে ব্রিটেনের এনএইচএস জানিয়েছে যে কোভিড সংক্রমণে রোগীদের বুকে কফ জমতে শুরু করে। সেক্ষেত্রে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময়ে রোগীর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি শব্দ হতে পারে এবং বুকের সংক্রমণের জন্যে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। আবার কাশির সঙ্গে কফযুক্ত থুতু বের হওয়ার জন্যে শারীরিক কষ্ট বেশি হয়।
advertisement
advertisement
নিয়ন্ত্রণের উপায় কী?
কফ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে। নিয়মিত এই ধরনের ব্যায়াম অভ্যাস করতে বেশ উপকার পাওয়া যায়। তবে জোর করে কখনওই কফ বের করা উচিত নয় এবং শরীর কোনও রকম চাপ না দিয়ে সঠিকভাবে বিশ্রাম নেওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে সারাদিন পর্যান্ত জল খেয়ে হাইড্রেটেড থাকা জরুরি। সেক্ষেত্রে জল ছাড়াও গরম কোনও খাবার তরল যেমন স্যুপ, ঝোল খেলেও উপকার পাওয়া যায়। ফুসফুসে জমে থাকা কফ বের করতে অন্তত দুই বা তিনবার স্টিম নিলেও উপকার হবে।
advertisement
আবার কাশি হলে নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করা দরকার, কারণ মুখ দিয়ে শ্বাস নিলে কাশি আরও বাড়তে পারে। পাশাপাশি চিৎ হয়ে না শুয়ে বাম কিংবা ডান দিকে যতটা সম্ভব সোজা শোয়ার চেষ্টা করতে হবে। এতে কফ দ্রুত বের হতে পারে। বেশি কাশি হতে পারে এমন বিষয় যেমন ধূমপান, ধোঁয়াটে বাতাস, এয়ার ফ্রেশনার, তীব্র গন্ধযুক্ত মোমবাতি বা পারফিউম এবং ডিওডোরেন্ট ইত্যাদি ব্যবহার না করাই উচিত। এছাড়াও নিয়মিত যেখানে থুতু ফেলা হবে, সেই সিঙ্কটি যেন পরিষ্কার থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
advertisement
কখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া দরকার?
যদি দীর্ঘদিন ধরে কাশির সমস্যা চলে এবং কাশির জন্যে রাতের ঘুমেরও বিঘ্ন ঘটে তাহলে দেরি না করে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আবার কাশির ধরনের পরিবর্তন হচ্ছে কি না, যেমন কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া বা কফ নোংরা হয়ে যাওয়া ইত্যাদিও খেয়াল রাখতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি শ্বাসকষ্ট না কমে এবং সম্ভাব্য লং কোভিড উপসর্গ থাকে, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি।
advertisement
লং কোভিডের অন্যান্য লক্ষণ কী কী?
যদিও ভিজে কাশি লং কোভিডের প্রধান লক্ষণ, এছাড়াও লং কোভিডের কারণে স্মৃতিতে সমস্যা, জয়েন্টে ব্যথা, বুকে ব্যথা, ক্লান্তিভাব, পেশিতে ব্যথা, মাথাব্যথা, হৃদস্পন্দনের হারের হেরফের, বিষণ্ণতা কিংবা উদ্বেগ, দাঁড়িয়ে থাকলে মাথা ঘোরা, শারীরিক বা মানসিক চাপ আরও খারাপ হওয়া, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকতে পারে।
Location :
First Published :
June 02, 2022 3:08 PM IST