দিন দিন বাড়ছে গার্হস্থ্য হিংসা, জেনে নিন আইনি মোকাবিলার খুঁটিনাটি দিক
Last Updated:
কী এই গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স? এই অপরাধের আইনি বিধান কী? এ নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রাচী মিশ্র (Prachi Mishra)
#নয়াদিল্লি: গার্হস্থ্য হিংসা। লকডাউনের সময়ে এই বিষয়টি নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল। তাছাড়া ভারতে এই ধরনের অপরাধ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এক্ষেত্রে বহু মামলা পুলিশ স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছায় না। অনেকে আবার আইনি জটিলতার ফাঁদে ক্লান্ত হয়ে বিচার পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু কী এই গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স? এই অপরাধের আইনি বিধান কী? এ নিয়ে বিশদে আলোচনা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রাচী মিশ্র (Prachi Mishra)
কী এই গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স?
কোনও অভিসন্ধি বা স্বার্থ চরিতার্থ করতে গিয়ে কিংবা কোনও অপরাধ প্রবণতাকে তৃপ্ত করতে গিয়ে কেউ যদি কারও উপরে শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ভাবে অত্যাচার চালান, কেউ যদি কোনও রকম যৌনহিংসার শিকার হন অথবা তাঁর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁকে কোনও অপরাধমূলক কাজে লাগানো হয়, তাহলে এই ধরনের অপরাধ প্রবণতাকে গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স হিসেবে গণ্য করা হয়।
advertisement
দেশে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রক্রিয়া
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মহিলারাই গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হন। এক্ষেত্রে স্থানীয় মহিলা কোর্ট বা ফার্স্ট-ক্লাস ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে গিয়ে মামলা দায়ের করা যেতে পারে। সিভিল বা ক্রিমিনাল দুই ধরনের মামলাই দায়ের করা যায়। অনেক আবার প্রথমে শুধু FIR দায়ের করেন।
advertisement
ইনসিডেন্ট রিপোর্ট কী ?
কোনও গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর কমিশন অফ ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের (Commission of Domestic Violence) প্রোটেকশন অফিসার এই ইনসিডেন্ট রিপোর্ট তৈরি করেন। এক্ষেত্রে পুরো ঘটনার তদন্ত করে একটি রিপোর্ট তৈরি করা হয়।
advertisement
কখনও কোনও মহিলার উপরে কি আর এক মহিলা গার্হস্থ্য হিংসা চালাতে পারেন? তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যেতে পারে?
হ্যাঁ। এর আগেই সুপ্রিম কোর্টের একাধিক বিচারে এই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এক্ষেত্রে কোনও মহিলার উপরে গার্হস্থ্য হিংসা চালানোর অভিযোগে অন্য এক মহিলা দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন।
গার্হস্থ্য হিংসা থেকে মহিলাদের বাঁচানোর জন্য কী কী আইন রয়েছে?
মহিলাদের রক্ষা করতে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট (Domestic Violence Act,2005) রয়েছে। এক্ষেত্রে আইনের ৪৯৮ A, ৪০৬, ৩২৩ ও ৩৫৪ ধারায় এই ধরনের অপরাধের বিচার করা হয়।
advertisement
লিভ-ইন রিলেশনশিপে থাকা মহিলারাও কি এই আইনের হাত ধরে বিচার পেতে পারেন?
হ্যাঁ। এক্ষেত্রে ঘটনা ও মামলার বিষয়বস্তু অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় কোন ধরনের আইনি নথি কাজে লাগে?
প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ (Testimony of Eyewitness), ডকুমেন্টারি প্রুফ (Documentary Proof), সেকেন্ডারি এভিডেন্স (Secondary Evidence) অর্থাৎ অডিও, ভিডিও বা অন্য নথি কাজে লাগে।
৪৯৮ A ও ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের মামলার মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
শুধুমাত্র পণ নয়, অন্য যে কোনও কারণে যদি মানসিক, শারীরিক বা অর্থনৈতিক কারণে অত্যাচার চালানো হয়, তাহলে তা গার্হস্থ্য হিংসা বা ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স হিসেবে গণ্য করা হবে। কিন্তু ৪৯৮ A ধারায় মূলত পণ সংক্রান্ত মামলার বিচার করা হয়।
advertisement
যদি কোনও পুরুষ গার্হ্যস্থ্য হিংসার শিকার হন, তাহলে কী করতে হবে?
স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে জানাতে হবে। প্রয়োজনে FIR দায়ের করতে হবে। এক্ষেত্রে MLC-সহ একাধিক নথি জমা দিতে হবে।
LGBT-দের জন্য কি লাগু হয় এই আইন?
হ্যাঁ। সবার জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য এই আইন।
Prachi Mishra
view commentsLocation :
First Published :
March 09, 2021 4:49 PM IST