Ustad Rashid Khan Obituary: শৈশবে অপছন্দ গানবাজনা, অজান্তেই সুরলোকের বরপুত্র মিয়াঁ তানসেনের এই উত্তরসাধক

Last Updated:

Ustad Rashid Khan Obituary: একদিন যেন তাঁর নিজের অজান্তেই উঠে এল আলাপ। ধীরে ধীরে সঙ্গীতে সম্পৃক্ত হলেন তিনি। সপ্তসুরের অ‍ঞ্চলছায়া ঘিরে রেখেছিল এই মিয়াঁ তানসেনের ৩১ তম প্রজন্মের এই উত্তরসাধককে

পূর্বপুরুষদের উপাসনার ফসলই তাঁর কণ্ঠ। মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন রাশিদ খান। আলাপচারিতায় সব সময় অকুণ্ঠে বলতেন, শৈশবে সঙ্গীতচর্চায় কোনও আকর্ষণই বোধ করতেন না। উস্তাদ নিসার হুসেন খান এবং উস্তাদ গুলাম মুস্তাফা খান যাঁর পরিবারের পূর্ববর্তী প্রজন্ম, সেই রাশিদ খান ছোটবেলায় পাড়াশোনার মতোই মুখ ঘুরিয়ে থাকতেন গানবাজনা থেকেও।
কিন্তু বেশিদিন পারেননি সঙ্গীতের অমোঘ টানকে উপেক্ষা করে থাকতে। যে বাড়িতে ব্রহ্ম মুহূর্ত থেকে রেওয়াজ শুরু হয়, সেই বাড়ির সন্তান রাশিদের কণ্ঠে একদিন যেন তাঁর নিজের অজান্তেই উঠে এল আলাপ। ধীরে ধীরে সঙ্গীতে সম্পৃক্ত হলেন তিনি। সপ্তসুরের অ‍ঞ্চলছায়া ঘিরে রেখেছিল এই মিয়াঁ তানসেনের ৩১ তম প্রজন্মের এই উত্তরসাধককে।
তাঁর জন্ম ১৯৬৮ সালের ১ জুলাই, উত্তরপ্রদেশের বদায়ুঁতে। কয়েক বছর পর চলে যান বম্বে, আজকের মুম্বই-এ। সেখানেই প্রাথমিক গানের তালিম শুরু কাকা উস্তাদ নিসার হুসেন খানের কাছে৷ ভর্তি হয়েছিলেন স্কুলেও৷ কিন্তু ভাল লাগত না স্কুলের পাঠ৷ এভাবে পথ চলত চলতেই ১৯৭৮-এ মাত্র ১০ বছর বয়সে দিল্লিতে প্রথম কনসার্টে পারফর্ম করেন তিনি। আটের দশকের চলে আসেন কলকাতায়। তাঁর কাকা উস্তাদ নিসার হুসেন খান সে সময় সঙ্গীত রিসার্চ অ্যাকাডেমিতে যুক্ত হন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে এই প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন রাশিদ খানও। ১৯৯৪ সালে অ্যাকাডেমি-র সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে খ্যাত হন তিনি।
advertisement
advertisement
সেই যে কৈশোর থেকে তিলোত্তমায় নাড়া বেঁধেছিলেন রাশিদ, সেই গাঁটছড়া অবিচ্ছেদ্য। কলকাতার দিনযাপনে জড়িয়ে আছে রাশিদের সরগম।১৯৯৭ সালে কলকাতার এক বিখ্যাত সঙ্গীত সম্মেলনে মঞ্চের পাশে বসে পণ্ডিত ভীমসেন জোশীর গান শুনতে চেয়েছিলেন রাশিদ৷ কিন্তু অনুমতি দেননি উদ্যোক্তারা৷ ঘটনার অভিঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিল হৃদয়৷ ঠিক করেছিলেন একদিন তিনিও প্রত্যাখ্যান করবেন৷ করেছিলেন৷ প্যারিসে কনসার্টের জন্য ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ওই বিশেষ সম্মেলনের উদ্যোক্তাদের৷
advertisement
তবে শুধু এই প্রত্যাখ্যানে নয়৷ পরবর্তীতে অন্য খাতে প্রশমিত হয়েছে সেই আঘাত৷ পণ্ডিত ভীমসেন জোশীর সামনে দীর্ঘ ঘরোয়া মজলিশে একের পর এক গান শুনিয়েছেন রাশিদ খান৷ ‘নজরানা’ পেয়েছিলেন ১০ হাজার টাকা৷ শিখেছিলেন, কখনও বিনা পারিশ্রমিকে গান শোনাবে না কাউকে৷ উস্তাদ নিসার হুসেন খানের পাশাপাশি পণ্ডিত ভীমসেন জোশীকে নিজের গুরু বলে মেনে এসেছেন জীবনভর৷ নিজের স্বীকৃতির নেপথ্যে বার বার কুর্নিশ জানিয়েছেন উস্তাদ বিলায়েৎ খান, পণ্ডিত রবিশঙ্কর, উস্তাদ আলি আকবর খাঁ, সেতারবিদ নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে পাওয়া আশীর্বাদকে৷ তাঁদের সকলের পরামর্শ ছিল, রেওয়াজ করে যাওয়া৷ জীবনভর সেই শিক্ষা লালনপালন করেছেন তিনি৷ ঐতিহ্যর বুনোটে রামপুর সহসওয়ান ঘরানার খিলানে যোগ করেছেন নিত্যনতুন অলঙ্কার৷
advertisement
অগণিত অলঙ্কারে ভূষিত রাশিদ খান পরম নিষ্ঠায় আগলে রেখেছিলেন শিল্পীজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ বিনয়কে৷ জীবনের পড়ন্ত বেলাতেও বলেছেন ‘‘কী করে শিল্পী হয়ে গেলাম, নিজেই জানি না৷ সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের করুণা এবং গুরুজনদের আশীর্বাদ ছাড়া সম্ভব হত না৷’’
আরও পড়ুন : সঙ্গীত জগতে ইন্দ্রপতন! পৃথিবী ছেড়ে অন্য সুরলোকে উস্তাদ রাশিদ খান, ৫৫-তেই সব শেষ
ধ্রুপদী সঙ্গীতের সাধক হলেও কোনও ছুঁতমার্গ ছিল না৷ সুরের সব অলিন্দে ছিল অনায়াস গতি৷ তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে ‘আওগে জব তুম সজনা’, ‘আল্লাহ কী রহেম’, ‘কাঁহে উজাড়ি মোরি নিদঁ’, ‘দীওয়ানা কর রহা হ্যায়ঁ’-এর মতো গান৷ উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতসাধক রাশিদ বলিউডি সিনেমার গানের জগতেও নিজের জঁরে ছিলেন অন্যতম একচ্ছত্র৷ রাশিদ খানের গাওয়া ছায়ানট রাগের ‘ঝনক ঝনক ঝন নন নন নন বাজে বিছুয়া’ বন্দিশটির গম্ভীর মন্দ্রতা সূচনায় এক সতেজ সুরদীপ্তি দেয়৷ চিরস্মরণীয় হয়ে আছে উস্তাদ শাহিদ পারভেজের সেতারের সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দির রেকর্ড৷ তাঁর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত বহুলপ্রচলিত না হলেও এক কথায় অনন্য৷ সুরকৌশল ও অলঙ্করণ প্রয়োগ ছাড়া, কোনও অতিরিক্ত স্বরপ্রয়োগ না করেই কবির বাণীতে অবগাহন করে তাঁর কণ্ঠশৈলী৷
advertisement
তাঁর কণ্ঠজাদুর অনুরণন অবিরল৷ ফুরায় যা তা ফুরায় শুধু চোখে৷ অন্ধকার পেরিয়ে যে আলোকে দুয়ার যায়, সেখানে জীবনকে জীবনবল্লভে রাখে রাশিদ খানের বন্দিশ৷ সেই আলিঙ্গন প্রাণমনে, নিবিড় আনন্দবন্ধনে৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Ustad Rashid Khan Obituary: শৈশবে অপছন্দ গানবাজনা, অজান্তেই সুরলোকের বরপুত্র মিয়াঁ তানসেনের এই উত্তরসাধক
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement