প্রয়াত ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায় বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্বরা !

Last Updated:

প্রয়াত ঊষা গঙ্গোপাধ্যায় কে নিয়ে নিউজ ১৮ বাংলায় স্মৃতিচারণ করলেন বিভিন্ন নাট্য ব্যক্তিত্ব।

#কলকাতা: ১১৭ বিবেকানন্দ রোড থেকে ২০০ প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড । ১৯৭৬ থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন থিয়েটারের একনিষ্ঠ কর্মী। প্রয়াত ঊষা গঙ্গোপাধ্যায় কে নিয়ে নিউজ ১৮ বাংলায় স্মৃতিচারণ করলেন বিভিন্ন নাট্য ব্যক্তিত্ব।
বিভাস চক্রবর্তী : ' ঊষা হিন্দিতে থিয়েটার করতেন কিন্তু তিনি বাংলার শিল্পী, কারণ ভাষাটা বড় কথা নয়।  তাঁর শিল্প চেতনার মধ্যে, শিল্পী সত্তার মধ্যে যদি সবচেয়ে বেশি প্রভাব কিছু থেকে থাকে নাটক নির্বাচন থেকে শুরু করে প্রযোজনার ক্ষেত্রে সেটা কিন্তু বাংলা থিয়েটারেরই ঐতিহ্য বহন করে। ঊষা কে খুব অল্প বয়স থেকে দেখে আসছি।একইসঙ্গে সংস্কৃতি, রাজনীতি, সমাজ সব ব্যাপারে তাঁর একটা জীবন্ত উৎসাহ ছিল। তাঁর কাজের মধ্যে দিয়েও তার পরিচয় আমরা পাই। সাধারণ মানুষের কথা, নিম্ন বর্গের মানুষদের কথা, দলিতদের কথা এবং তাদের ওপর যে রাষ্ট্রীয় শোষণ, উচ্চবর্গের মানুষদের শোষণ, ধর্মীয় শোষণ নানা রকম ছবি উঠে এসেছে তাঁর নাটকে। যেটা আমাদের সমাজ বাস্তবতা বা রাজনৈতিক বাস্তবতা। ওর নাটকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মহিলাদের স্থান কোথায়, মেয়েরা কিভাবে নিগৃত হচ্ছে এই সমাজে তা ফুটে ওঠা। আবার মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথাও নাটকে তুলে ধরেছেন। ঊষা সর্বভারতীয় নাট্যব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছিল। শুধুমাত্র ভারত নয়, পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশে ও তাঁর পরিচিতি ছিল। ওঁর চলে যাওয়াটা শুধু নাটকের ক্ষতি নয়, ব্যক্তিগত ক্ষতিও।
advertisement
advertisement
দেবশংকর হালদার: ' আমরা যখন থিয়েটার করতে শুরু করেছি বা আমরা যখন শিক্ষানবিশি তখন থেকেই উষা দির থিয়েটার দেখছি। ঊষাদির দল রঙ্গ কর্মীর নির্মাণ হয়েছে ১৯৭৬ সালে। আমি সিরিয়াস ভাবে থিয়েটারে সর্বক্ষণের কর্মী হয়েছি ৮৬ সাল থেকে। ওই দশ বছরের যে  রঙ্গ কর্মী  তখন কিন্তু তার নিজস্ব ধরনের প্রযোজনা শুরু করে দিয়েছে। আমরা যে থিয়েটার তখন শিখছি তারই সঙ্গে সঙ্গে বলা যেতে পারে ঊষা দির প্রযোজনা বা থিয়েটার গুলি দেখতে দেখতে আরেক ধরনের পাঠ আমরা পেয়েছি। সেই সমস্ত  প্রযোজনা গুলি একটা অন্য নাট্য ভাষার কথা বলে।  থিয়েটারের যে নিজস্ব ভাষা বা ভঙ্গিমা যা আদতে বাংলা নয়, হিন্দি নয়, তামিল নয়, তেলেগু নয়, একেবারে নাট্যের ভাষা। সেই নাট্য ভাষা তৈরি করছিলেন ঊষাদি এবং আমরা সেইগুলো শিখছিলাম।  পরবর্তীকালে দেখেছিলাম ঊষা দি শুধুমাত্র একজন নির্দেশক নন অসাধারণ একজন সংগঠকও। প্রযোজনা গুলো বা দলকে মোবাইল রাখা বা পোর্টেবল রাখা এটা ঊষা দির কাছে শিক্ষণীয়। তিনি একইসঙ্গে এমন একজন মানুষ যিনি সমাজ সচেতন। থিয়েটার বা  নাট্যকর্ম সবসময় সমাজের যা কিছু প্রবণতা সেগুলোর সঙ্গে পথ হাঁটে এবং কখনো কখনো সেই প্রবণতাগুলো যদি ভয়ঙ্কর হয় তাকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে মানুষকে দেখায় ,দর্শককে দেখায় এবং এর থেকে পরিত্রাণের পথ ও দেখায়।  ঊষা দি এই কাজটা করে গেছেন অবিরত ভাবে। তিনি সেই ধরনের গল্প নির্বাচন করতেন যেখানে সমাজের অসুখ, অসূয়া গুলো আছে। শুধুমাত্র পরিচালক বা অভিনেত্রী নন, এমন একজন মানুষ যিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে মঞ্চ মায়া ভেঙে দিতে চাইছেন কখনো কখনো মঞ্চ থেকে নেমে আসছেন নিচে। আবেগপ্রবণ এক মানুষ ।  যা কিছু ধরাবাঁধা নিয়ম তার বাইরে আরেকটা অন্য কিছু বারবার তৈরি করছেন । ফলে আমরা ঊষাদিকে নানাভাবে চিনতে পেরেছি। ঊষাদি কে আমি মনেপ্রাণে বাঙালি মনে করি । উনি যখন হিন্দিতে থিয়েটার করেছেন কোনোদিন মনে হয়নি  যে উনি অন্য ভাষায় থিয়েটার করেন। ওনার মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাপার আমার যেটা মনে হয়েছে উনি যখন প্রশংসা করতেন এত আদর দিয়ে করতেন এত কাছে টেনে করতেন তাতে মনে হতো তিনি আমাকে দাম দিচ্ছেন । এরকম এক জন মানুষকে আজকের এই  বিপন্ন সময়ে আজকে চারপাশটা যেরকম তাতে আরো  বেশি করে দরকার ছিল আমাদের। সব মিলিয়ে ঊষাদি আমাদের এমন একজন সেনাপতি যিনি যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে ছিঁচকাঁদুনে হতে বারণ করতেন এবং নিজে লড়াই করতেন। এরকম একজন মানুষ চলে গেলেন প্রকৃত অর্থে আমরা একজন অভিভাবককে হারালাম। '
advertisement
মেঘনাদ ভট্টাচার্য: 'আমরা যখন ১৯৭০ সালে নাটক করা শুরু করেছি ঊষা ছিল তাদের মধ্যে উজ্জ্বল নক্ষত্র।হিন্দিতে নাটকগুলো হলেও বাংলায় জনপ্রিয় ছিল কিন্তু সর্বক্ষেত্রে ওর জনপ্রিয়তা আমাদের সবার থেকে অনেক বেশি ছিল। পোর্টেবল ছিল তাঁর  থিয়েটার। খুব কম আড়ম্বরে অসাধারণ অসাধারণ ডিজাইন তৈরি করতে পারতো মঞ্চে। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কাজ করার সুবাদে থিয়েটার একটা নিজস্ব প্যাটার্ন তৈরি করেছিলেন তিনি। তাঁর এই অসময়ে চলে যাওয়াটা আমাদের কষ্ট দিচ্ছে। '
advertisement
সোহিনী সেনগুপ্ত: ' ঊষা মাসির চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার শৈশবের অনেকটা চলে গেল। ১১৭ নম্বর বিবেকানন্দ রোডে ওরা  থাকতো আর আমরা ১১৯ এ । মা-বাবার যখন শো থাকত, আমাকে  মাসির কাছে রেখে  যেত। উষা মাসি আমাকে গুড়িয়া রানি, বিটিয়া রানি, ছোটি বিটিয়া এইসব নামে ডাকত। সেগুলো ডাকার কেউ আর থাকবে না। একসঙ্গে কাজ করার একটা কথা চলছিল সেটা আর হবে না। ঊষা গঙ্গোপাধ্যায় একজন লেজেন্ড। পাথ ব্রেকার । নাটক করার জন্যই তাঁর জন্ম হয়েছিল।  আমাদের বলে গিয়েছিলেন যাই হোক জীবনে হইহই করে বাঁচো। আসলে তো কিছুই চলে যায় না। আমার স্মৃতিতে, আমার কর্মে  ঊষা মাসি এভাবেই থাকবে। '
advertisement
DEBAPRIYA DUTTA MAJUMDAR
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
প্রয়াত ঊষা গঙ্গোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণায় বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্বরা !
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement