ফেলুদা হবেন, তা স্বপ্নেও কখনও ভাবেননি সৌমিত্র! নিজেই স্বীকার করেছিলেন সে কথা
- Published by:Simli Raha
- news18 bangla
Last Updated:
ফেলুদার অনেক বইয়ের কভারেও সৌমিত্রর মুখের আদল বসানো। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজেও একপ্রকার স্বীকার করেছেন সেই কথা।
#কলকাতা: তিনি বেশি ফেলুদা, নাকি বেশি অপু । এই তর্ক হয়তো কোনওদিন শেষ হবে না । হয়তো সংখ্যার বিচারে দেখতে গেলে তিনি একটু বেশি অপুর দিকেই ঝুঁকে । কিন্তু ফেলুদা তো মোটে একটা ছবিতে । ‘সোনার কেল্লা’ আর ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ ছাড়া সত্যজিতের হাতে আর কোনও ফেলুদা ৭৫ মিমি পর্দায় স্থান পাওয়ার সুযোগ পায়নি । অপু আর ফেলুদা, পর্দায় দু’টো চরিত্রই সত্যজিতের সৃষ্টি । আর দু’টিতেই অনবদ্য, অপ্রতিরোধ্য সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ।
ফেলুদা হওয়ার আগেই ফেলুদার অসম্ভব ভক্ত ছিলেন সৌমিত্র । কিন্তু তাঁকে যে সেই চরিত্রের জন্যই কাস্ট করবেন সত্যজিৎ, তা স্বপ্নেও ভাবেননি অভিনেতা । নিজেই বলেছিলেন, ‘‘আমি কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি যে একদিন আমিই এই চরিত্রে অভিনয় করব। যে দিন মানিক দা আমাকে প্রথম ডেকে বললেন যে, আমি ‘সোনার কেল্লা’ ছবিতে প্রদোষ চন্দ্র মিত্র ওরফে ‘ফেলু মিত্তির’ চরিত্রে অভিনয় করব কি না, শুনেই আমি রোমাঞ্চিত হয়ে পড়েছিলাম।’ এরপর তো তৈরি হল সেই কাল্ট ছবি । ১৯৭৪ সালে সৌমিত্র অভিনয় করলেন সত্যজিৎ রায়ের ‘সোনার কেল্লা’ ছবিতে।
advertisement

advertisement
সত্যজিতের নিজের হাতে তৈরি ফেলুদা । ছেলে সন্দীপের কথায় ছোটদের জন্য তৈরি করেছিলেন বাঙালির সবচেয়ে পছন্দের গোয়েন্দা চরিত্রকে । ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।
advertisement
আর পর্দার ফেলুদারূপী সৌমিত্র যেন একেবারে বইয়ের পাতা থেকে উঠে এসেছিল । সত্যজিতের হাতে আঁকা স্কেচের সঙ্গেও যেন সৌমিত্রের হুবহু মিল । যেন সৌমিত্রকে ভেবেই ফেলুদা এঁকেছিলেন মাণিক । পর্দায় সেই ফেলুদা যখন চারমিনার ধরায়, লালমোহন বাবুর সঙ্গে খুনসুটি করে, দুষ্টু লোকেদের সঙ্গে ফাইট করে, আর অবলীলায় সব সমস্যার সমাধান করে....তখন এমন ঘরের ছেলে গোয়েন্দাকে পছন্দ না করে উপায় থাকে না বাঙালি দর্শকদের ।
advertisement
ফেলুদার অনেক বইয়ের কভারেও সৌমিত্রর মুখের আদল বসানো। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় নিজেও একপ্রকার স্বীকার করেছেন সেই কথা। তবে সত্যজিতের শুরুর দিককার স্কেচে সেই ব্যাপার ছিল না, পরে এসেছিল। নিজের জীবনে দু’টি ফেলুদার ছবিতে অভিনয় করলেও, তাতেই চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে গিয়েছেন সৌমিত্র। তাঁর মতে, “ফেলুদা, আমি আর সত্যজিৎ রায় ছিলাম একটি সুখী ত্রিভূজীয় প্রেমকাহিনির তিনটি চরিত্র।” শুধু কি ফেলুদা? ‘হীরক রাজার দেশে’-র উদয়ন পণ্ডিত, ‘ঘরে বাইরে’-র সন্দীপ, ‘চারুলতা’-র অমল, ‘অশনি সংকেত’-র গঙ্গাচরণ— একের পর এক রূপে তাঁকে পেয়েছি আমরা। আজও সেই দৌড় থামেনি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। পর্দায়, মঞ্চে সমান তালে দাপিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দ্রুত সুস্থ হয়ে আরও অনেক বছর এমনভাবেই তাঁকে ছুটে বেরাতে হবে... এই শুভকামনাই রইল।
Location :
First Published :
October 10, 2020 9:25 AM IST