নেগেটিভ চরিত্র করেও যে এত ভালবাসা পাওয়া যায়, সেটা ‘পদ্মমণি’ না করলে বুঝতামই না: দিয়া

Last Updated:

‘‘আমাদের মা, মানে দিতিপ্রিয়া আমাদের থেকে এত ছোট, যে ওঁকে বোনের মতোই ট্রিট করি আমরা । তবে আমি পদ্মমণির মতো জেদি ।’’

স্বীকার করলেন রাসমণি’র বড় খুকি, অর্থাৎ পদ্মমণির মতোই তিনিও একটু জেদি । কিন্তু আড্ডা দিতে বসে মিষ্টি মেয়ে দিয়া চক্রবর্তী ভুলেই গেলেন তাঁর তারকা সুলভ গাম্ভীর্য্য । ভিতরের প্রাণচ্ছ্বল, হাসিখুশি মেয়েটা মন খুলল সিমলি রাহার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ।
প্র: শুরুটা তো অনেক ছোটবেলায় হয়েছিল, কি করে পুরোটা সামাল দিতে...মানে পড়াশোনা, অভিনয় সবটা একসঙ্গে কী করে সামলাতে?
উ: একদমই । ক্লাস সেভেন থেকে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু আমার । কিন্তু দেখো, ছোটবেলায় যখন কোনও কিছুর জন্য আমরা স্ট্রাগল করি, তখন অতটাও আমাদের সেই বিষয়টার বোধ জন্মায় না । আমিও খুব স্বাভাবিকভাবেই এটা করেছিলাম । আর সে সময় মা-বাবা এমন ভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল, আমি তাই খুব সাবলীলভাবেই সময়টা উতরে গিয়েছিলাম । বাধা এসেছিল অনেক, কিন্তু দৃঢ় স্তম্ভের মতো বাবা-মা সবসময় আমার সঙ্গে ছিলেন । এভাবেই ১০ বছর যে কোথা দিয়ে কেটে গেল বুঝতেই পারিনি ।
advertisement
advertisement
প্র: এখন তো পড়াশোনা শেষ, এ বার কি পুরোপুরি অভিনয়ে মন দেওয়া?
উ: হ্যাঁ, পড়াশোনা মোটামুটি শেষ। আমি ড্রামা নিয়ে রবীন্দ্রভারতী থেকে পাশ করেছি । কিন্তু আমি আসলে পড়তে খুব ভালবাসি । লকডাউনে দেখছিলাম ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে কিছু পড়া যায় কিনা । একটু সুযোগ পেলেই আবার নতুন করে কোনও একটা বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করব ভাবছি।
advertisement
প্র: কিভাবে এই পেশায় এলে?
উ: আসলে কোনও প্ল্যান ছিল না । হঠাৎই খবর পেলাম, নতুন মুখের জন্য অডিশন হচ্ছিল একটা । মা সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন । ওখানেই সিলেক্ট হয়ে যাই । তারপর ধীরে ধীরে কাজ শুরু করি । তখন ছোট বলে বাচ্চা মেয়েদের চরিত্র করতাম । ১৫-২০ দিনের কাজ থাকত । আবার বসে থাকতাম । আবার ডাক পেলে যেতাম । তখন এরকমই ছিল । কাজটা করতে খুব ভাললাগত আমার । আস্তে আস্তে এটাই প্যাশন হয়ে গেল।
advertisement
 ‘সুবর্ণলতা’ ধারাবাহিকে ।
‘সুবর্ণলতা’ ধারাবাহিকে ।
প্র: অনেকদিন ধরে রাসমণি’তে বড় খুকির চরিত্রে অভিনয় করছো, পরে অন্য কোনও চরিত্রে যখন মানুষ তোমাকে দেখবেন, মানিয়ে নিতে অসুবিধা হবে না তো?
উ: হ্যাঁ অনেক দিন হল । দু’বছর । কিন্তু রাসমণি’তে পদ্মমণীর এই চরিত্রটা না করলে বুঝতেই পারতাম না যে, নেগেটিভ চরিত্র করেও মানুষের এত ভালবাসা পাওয়া যায় । দর্শকদের কাছে এ জন্য আমি কৃতজ্ঞ । তবে পরের চরিত্র যাই করি না কেন, সকলের যাতে সেটাও খুব ভাল লাগে তার চেষ্টা সবসময় করব ।
advertisement
প্র: এই বয়সে এরকম বয়স্ক একজন মহিলার চরিত্রে রয়েছে তুমি, হ্যাঁ বলেছিলে কেন?
উ: আসলে যখন দু’বছর আগে রাসমণি’তে আমি অভিনয় শুরু করি, তখন কিন্তু চরিত্রটার বয়স বেশি ছিল না । সে কিশোরী মেয়ে ছিল । তারপর ধীরে ধীরে তার বয়স বাড়ে । এটা এমন একটা চরিত্র, যেখানে সমস্ত বয়সের শেডটা ধরতে পেরেছি আমি । শুধু আমি নয়, আমরা সকলেই । এটা কিন্তু অনেক বড়ো একটা পাওয়া। তবে হ্যাঁ, এটা আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জের মতো । এত কম বয়সে এত বয়ষ্ক একটা চরিত্র’কে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা মুখের কথা নয় ।
advertisement
প্র: দিয়ার সঙ্গে কি পদ্মমণির কোনও মিল আছে, নাকি দিয়া আর পদ্মমণি সম্পূর্ণ আলাদা?
উ: হ্যাঁ, একটা মিল আছে । পদ্মমণির মতো আমিও ভীষণ জেদি আর একগুঁয়ে । তবে আপাতত দৃষ্টিতে সিরিয়ালটা দেখে যদি মনে হয়, পদ্মই প্রধান ভিলেন, তা কিন্তু নয় । ও সত্যি কথাটা বলে দেয়, কিছু ক্ষেত্রে ও হয়তো বঞ্চিত । সে জন্য ঝামেলা-অশান্তি করে। সেই জায়গা থেকে বলতে গেলে, আমরা সবাই তো নিজেদের প্রাপ্য মর্যাদা চাই । হ্যাঁ, হয়তো সে ক্ষেত্রে পদ্ম’র সঙ্গে আমার চরিত্র খানিকটা মেলে ।
advertisement
প্র: সেটে তো অনেক ঝগড়া করতে হয়, আর ব্যক্তিগত জীবনে সব থেকে ঝগড়া কার সঙ্গে?
উ: না, ব্যক্তিগত জীবনে খুব বেশি ঝগড়া কারও সঙ্গে নেই । তবে মায়ের সঙ্গে খুটিনাটি নিয়ে লেগেই থাকে । সব মা-মেয়ের মধ্যেই বোধহয় এটা হয় ।
প্র: বড় খুকি তো সামাজিক অনুশাসনের ব্যাপারে ভীষণ কঠোর, কিন্তু দিয়া কতটা?
উ: হ্যাঁ, পদ্ম তো ভীষণ কঠোর । কিন্তু আমি দিয়া, একেবারেই কঠোর নই । আমার মনে হয়, প্রত্যেকের নিজের জীবন, নিজের মতো করেই বাঁচা উচিত । আসল কথা হল, জীবনটাকে উপভোগ করা । যে ভাবে তুমি খুশি থাকবে, সেটাই করা উচিত ।
প্র: দিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব বেশি অ্যাক্টিভ নয়, এটা কেন?
উ: এটা ঠিক (হাসি) । আসলে নিজে, নিজের মধ্যেই থাকতে আমি একটু ভালবাসি । খুব কম সংখ্যক বন্ধু আছে আমার । আর যাঁরা আছে, তাঁদের সঙ্গেই শুধু আমি হ্যাং আউট করি । এ ছাড়া খুব একটা ব্যক্তিগত জীবন সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরতে ভালবাসি না আমি ।
প্র: পর্দায় তোমার মা তো তোমার থেকে আসলে অনেকটাই ছোট...দিতিপ্রিয়ার সঙ্গে দিয়ার কি রকম সম্পর্ক?
উ: আসলে রাসমণি’র সবকিছুই উল্টো । যাঁরা যাঁর থেকে বড়, তাঁরা বয়সে ছোট’র রোলে । যেমন দিতিপ্রিয়া আমাদের থেকে সবথেকে ছোট, কিন্তু ও আমাদের মায়ের চরিত্র করে । আবার মথুরবাবু আমাদের থেকে বড়, আমাকে বড়দি বলে ডাকে। দিতিপ্রিয়া আমাদের থেকে এত ছোট, যে ওঁকে বোনের মতোই ট্রিট করি আমরা । ও ভীষণ ছটফটে । আমরা সবাই সেটে দারুণ মজা করি । আর দিতিপ্রিয়া ৩ বছর ধরে রাসমণি করছে । আমরা তার এক বছর পর এসেছি । কিন্তু কখনও এরকম ফিলও হয়নি । আমরা একদম একটা পরিবারেরই মতো ।
প্র: রানী রাসমণি- পরবর্তী পরিকল্পনা গুলো কী কী? কী করতে চাও এরপরে?
উ: আপাতত রাসমণি নিয়েই আছি । এটা শেষ হলে আরও ভাল কোনও চরিত্রের অপেক্ষা তো অবশ্যই করব। তার উপর অন্য কোনও প্লাটফর্মে কাজ করারও ইচ্ছা রয়েছে । ওয়েব বা সিনেমা । তবে সবকিছু তো আমাদের হাতে থাকে না, দেখা যাক কী হয় ।
প্র: দিয়ার জীবনে স্পেশ্যাল কেউ কবে আসবে?
উ: জীবনে স্পেশ্যাল কেউ আসার জন্য, ভাগ্যের খুব দরকার হয় । এটা আমি বিশ্বাস করি । মনে হয়, গত এক বছর ধরে আমি খুব লাকি । হয়তো যাঁরা বোঝার তাঁরা এতেই বুঝে যাবেন। (হাসি)
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
নেগেটিভ চরিত্র করেও যে এত ভালবাসা পাওয়া যায়, সেটা ‘পদ্মমণি’ না করলে বুঝতামই না: দিয়া
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement