হোম /খবর /বিনোদন /
"আমার অনুষ্ঠানের ধরন আর রূপঙ্করের ধরন এক না!" নাম জড়ানো কেন? প্রতিবাদে রূপম

Rupam Islam| Rupankar Bagchi: "আমার অনুষ্ঠানের ধরন আর রূপঙ্করের ধরন এক নয়! অনুমতি ছাড়া নাম জড়ান কেন?" প্রতিবাদে রূপম ইসলাম

Rupam Islam| Rupankar Bagchi: প্রচুর শোয়ের পর অসুস্থ হয়েছেন রূপম ইসলাম। কিন্তু গান শেষ না করে মঞ্চ ছাড়েননি! তারপরেও কেন রূপঙ্করের সঙ্গে তাঁর তুলনা? তীব্র প্রতিবাদ করলেন রূপম ইসলাম! জানুন

  • Last Updated :
  • Share this:

#কলকাতা: কে জানত এমন ঘটনা ঘটতে পারে! নজরুল মঞ্চে উপস্থিত সেদিনের সেই সাত-আট হাজার শ্রোতারাও জানতেন না। যে মানুষটা এখন 'ইয়াদ আয়েঙ্গে কাল' গাইছেন, তাঁকে সত্যিই কাল মনে করে চোখের জল ফেলতে হবে! জানলে সবটাই হয়ত আটকে দিত ওই অগুণতি ভক্তরা! কিন্তু তা হয়নি। গান শেষ করার কিছু পরেই প্রয়াত হন কেকে! এই খবরটা বিশ্বাস করতে সময় লেগেছিল সকলের। আজ তাঁর শেষকৃত্য সম্পর্ণ হয়েছে মুম্বইতে। গান স্যালুটে শ্রদ্ধাও জানানো হয় শিল্পীকে। কিন্তু তাতে কি আর বাঁধ মানবে চোখের জল! ৯০-এর দশকের শেষের দিক থেকে মানুষের মনে যে ভালবাসার জায়গা কেকে করেছেন তাঁর গান দিয়ে, তা যে এত সহজে মুছে যাওয়ার নয়। কিন্তু কেকের মৃত্যুর পর থেকেই কলকাতার টলিউডের পরিবেশে এক অন্য হাওয়া বইছে। তার কারণ অবশ্যই রূপঙ্কর বাগচী।

কেকে-র শোয়ের দিনই রূপঙ্কর নিজের ফেসবুক লাইভে বলেন, ' হু ইজ কেকে ম্যান? আমরা কেকে-র থেকে অনেক ভাল গান গাই! আমাদের নিয়ে উত্তেজনা নেই কেন আপনাদের?" বেশ কয়েকজন বাংলার শিল্পীর নাম তিনি নিজের সঙ্গে জুড়ে দেন। ইমন, সোমলতাও আছেন সেই নামের তালিকায়। যা নিয়ে ইতিমধ্যে ইমন আপত্তি জানিয়েছেন। রূপঙ্কর বলেন, 'কে এই কেকে? কি এমন গান করে সে?" এর পরেই ঘটে যায় চরম অঘটন। প্রয়াত হন কেকে। সবটাই কাকতালীয়। কিন্তু এর পর থেকে সোশ্যাল মাধ্যমে তেড়ে চলতে থাকে দোষারোপ। বেশির ভাগ মানুষ রূপঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। একজন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গায়কের থেকে এই ধরণের মন্তব্য বাংলা আশা করে না। তা রূপঙ্কর বাগচী ইতিমধ্যেই বুঝে গিয়েছেন। এবং নিজের ওই ভিডিওটি ডিলিটও করেছেন। আবার সংবাদ মাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, "তিনি কেকে-কে ছোট করতে চাননি। তিনি নাকি চেনেই না ভদ্রলোককে।" সেই সঙ্গে আবার এও বলছেন, "আমি কেকের গানের ভক্ত।" নিজের কথাতেই অসংগতি থাকছে। হ্যাঁ কেকে-র মৃত্যুর সঙ্গে রূপঙ্করের ওই বক্তব্যের কোনও যোগ নেই। কাকতালীয়। কিন্তু মৃত্যুর পিছনে নজরুল মঞ্চের অব্যবস্থা নিশ্চয় দায়ী। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।

ঠিক এই বিষয় নিয়েই এবার নিজের ফেসবুকে লেখেন পরিচালক সুব্রত সেন। তিনি যা লিখেছেন তা একেবারে যুক্তি-যুক্ত! তিনি তাঁর লেখায় বলেন, 'রূপঙ্কর ফালতু ট্রোলড হচ্ছে।' যা সত্যি কিছুটা হলেও। অন্যদিকে সুব্রত সেন প্রশ্ন তোলেন, "রূপঙ্করকে সকলে ফালতু দোষ দিচ্ছেন। তিনি কেকের গান পছন্দ করেন না। আমার বাবাও কিশোরকুমারের গান পছন্দ করতেন না। আমি করতাম। কিশোরকুমার কলকাতায় মারা যান। শোনা যায় তিনি সে সময়ে কলকাতায় এসেছিলেন সত্যজিতের ”হীরক রাজার দেশে” গান গাইতে। সমাপতন বিষয়টা ফালতু। ঝড়ে কাক মরে টাইপের বিষয়। এ ক্ষেত্রে রূপঙ্কর ফালতু ট্রোল্ড হচ্ছে। বরং নজরুল মঞ্চ নিয়ে চাড্ডি কথা বলা দরকার। একবার এখানে শিলাজিতের গানের প্রোগ্রামে আমি বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম কারণ শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। এসি চলছিল না। আমি তো শ্রোতা মাত্র। একটা জায়গা। যেখানে ২০০০ লোকের বদলে ৭০০০ লোক ঢুকে পড়েছে, সেখানে স্রেফ টাকার বনিবনার কারণে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এসি চালাবে না কেন? বিশেষত গায়ক

কেকে যখন বলছেন তাঁর কষ্ট হচ্ছে? আমার ধারণা ছিল নজরুল মঞ্চের তত্ত্বাবধানে সরকার।তাঁরাই বা পরিস্থিতি বুঝে এসি কেন চালাননি? এইটুকু বোধবুদ্ধি নেই? আর পুলিশের পক্ষ থেকে আজ গান স্যালুট দেওয়া হল। এটাই কি শিল্পীর প্রতি সম্মান? ২৫০০ ক্যাপাসিটির হলে ৭০০০ মানুষ ঢুকছেন, পুলিশ কিছু বলবে না? স্ট্যাম্পিড হলে কে দেখত? আরও একটা কথা। গুরুদাস কলেজ/মহাবিদ্যালয়ে ৭০০০ ছাত্র আছেন? কলেজের প্রোগ্রাম, নিজেদের জন্য। এখানে এত লোক কেন? ইউনিয়নের ক্ষমতা দেখানোর জন্য? তাই যদি হয়, ফুলবাগানের গুরুদাস কলেজের ক্যাম্পাসে এত বড় মাঠ তো পড়ে আছে। খোলা মাঠে দারুণ প্রোগ্রাম হয়। কারও শ্বাসকষ্ট হয় না। উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণে এসে নিজেদের বিরাট প্রমাণ করার দায় কলেজ ইউনিয়নের না ইভেন্ট ম্যানেজারদের? কে কে বলেই অসুস্থ বোধ করার পরেও অতগুলো গান গেয়েছেন। রূপঙ্কর, রূপম গাইতেন না। গাওয়া উচিতও না। রূপঙ্কর কী বলেছেন তা নিয়ে চর্চা করতে গিয়ে আমরা আসল বিষয়গুলো ভুলে যাচ্ছি।"

আরও পড়ুন: "হায় মর জায়ু এহি পে"! গান গাইতে গাইতে বলেছিলেন কেকে! মুখের কথা এভাবে সত্যি হল! ভাইরাল ভিডিও

আর এই পোস্টে সুব্রত সেন একটি জায়গায় রূপঙ্কর এবং রূপমের নাম নেন। বলেন, "কে কে বলেই অসুস্থ বোধ করার পরেও অতগুলো গান গেয়েছেন।রূপঙ্কর, রূপম গাইতেন না। গাওয়া উচিতও না।" আর এই পোস্ট দেখেই নড়েচড়ে বসেন রূপম ইসলাম। কলকাতায় রকস্টার রূপমের শোয়ের উত্তেজনা চরমে থাকে। কোনও অংশে বলিউডের থেকে কম নয়। অরিজিৎ সিং লুকিয়ে রূপমের শো দেখতে যান, ভিড়ে মিশে। শুধু মাত্র গানের উত্তেজনা অনুভব করবেন বলে। রূপম হাজার অসুবিধা থাকলেও কখনও গান গাইতে উঠে নেমে যাননি। আর এখানেই আপত্তি রূপমের। তিনি লেখেন, "আমার নামের উল্লেখ না করলে খুশি হতাম। আমি কী করতাম, কী করি— আপনার জানবার কথা নয়। মনে হয় না আপনি আমার অনুষ্ঠান দেখেন। অন্য শিল্পীর অনুষ্ঠানের সঙ্গে আমার অনুষ্ঠান তুলনীয় নয়।"

সঙ্গে সঙ্গে নেটিজেনরা একমত হতে থাকেন রূপম ইসলামের সঙ্গে। তিনি এক নেটিজেনের কমেন্টেও উত্তর দেন, "আমি গাইতাম। গাই। গাওয়া উচিতও বলে মনে করি। তার জন্য অনুশীলনও করি। অনুষ্ঠানে গিয়ে বলা যায় না আমি গাইব না। পাশাপাশি আমার অনুষ্ঠানের ধরন এবং রূপঙ্করের ধরন এক নয়। সেই কথাটুকু বলে দেওয়া দরকার ছিল উপরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। আমার সঙ্গে আলোচনা না করে এটা লেখা যায় কি যে আমি গাইতাম না? সারা জীবন কীভাবে গেয়ে এলাম? আর কীভাবে প্রচুর শো এর পর অসুস্থ হলাম? রিকভারও করলাম? সব কিছুরই কারণ এবং পদ্ধতি আছে। এটুকুই বলেছি।"

কেকে যেখানে ছিলেন সেখানেই আছেন।  তাঁর মৃত্যু কোনও দিন ভুলবে না কলকাতা! ভুলবে না দেশ! এ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু কেকে-র চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলার শিল্পীদের মধ্যে শুরু হয়েছে এক অন্য তরজা! এর শেষ কোথায়! ট্রোলড, সমালোচনা, এসবে গানটাই হারিয়ে যাবে না তো? প্রশ্ন নেটিজেনদের!

Published by:Piya Banerjee
First published:

Tags: KK, Rupam islam, Rupankar Bagchi