Interview: "আমার ফিল্মোগ্রাফিতে স্বনামধন্য সব পরিচালকের নাম, গলা শুনে চিনতে পারেন দর্শক, আর কী চাই!" অনন্যা চট্টোপাধ্যায়

Last Updated:

২৫টা বছর কাটিয়ে আজও অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বাংলা ছবির জগতে উজ্জ্বল নাম৷ জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত অভিনেত্রী আরও ভাল ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিন, সেই শুভেচ্ছা রইল৷ আপাতত সকলেই অপক্ষা করছেন তাঁর পরবর্তী ছবি সত্যি বলে সত্যিই কিছু নেই-এর দিকে৷

News18
News18
সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই, সৃজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নতুন ছবি৷ সেই ছবিতে রয়েছেন এক ডজন অভিনেতা৷ এক রুকা হুয়া ফ্যায়সলা ছবি এবং নাটকের উপর ভিত্তি করে এই ছবি৷ এই ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়৷ তাঁর চরিত্রের নাম রূপা৷ ছবি মুক্তি আগে অভিনেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে সাক্ষাৎকার নিলেন পূজা বসু দত্ত৷
প্রশ্ন- অনেকদিন পর আবার আপনাকে ছবিতে দেখা যায়? সিরিজে দেখা গেছে যদিও, তবে সিনেমার পর্দায় নয়৷ এই প্রশ্ন যা আপনাকে সকলেই করছে, আমিও বাদ গেলাম না৷
উত্তর- (একটু হেসে) এই প্রশ্নটা এলে মনে হয় কল ফরোয়ার্ড করে দেব! এটা ঠিক আমি বেছে বেছে কাজ করি৷ তবে কোন ছোট চরিত্র যদি থাকে, কিন্তু তাতে আমি অভিনেত্রী হিসেবে ক্রিয়েটিভ ইনপুট দিতে পারি, আমায় সেই চরিত্র চ্যালেঞ্জ করে, আমার থেকে নতুন কিছু বার করে আনতে পারে, তাহলে সেই চরিত্রে আমি অভিনয় করি৷ সেরকম চরিত্র আসছে না৷ যখন আসে তখন নিশ্চয়ই কাজ করি৷ মহিলা কেন্দ্রিক ছবিও তো কম হয়৷ আরও একটা কথা, ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক অভিনেত্রী রয়েছেন৷ ফলে কাজ তো ভাগ হয়ে যায়৷ আর আমার তো মনে হয় না কোনও অভিনেত্রী এখানে বছরে ৫-৬টা ছবি করেন৷
advertisement
advertisement
প্রশ্ন- নারী শক্তি, নারীর ক্ষমতা নিয়ে তো এত কথা হয় চারিদিকে, তাহলে সেরমভাবে মহিলাদের নিয়ে কাজ বা মহিলা চরিত্রে গুরুত্ব দিয়ে কাজ হচ্ছে না? এটা তো দুর্ভাগ্যজনক৷
উত্তর- কিছুটা তো বটেই৷ মহিলা চরিত্র সেভাবে তৈরি হচ্ছে না৷ এর একটা ব্যবসায়ীক দিকও নিশ্চয়ই আছে৷ মহিলা চরিত্র প্রধান হলে বাজার ভাল হবে না ৷ যে প্রযোজক টাকা লগ্নি করছেন, তিনি তো চাইবেন তাঁর ছবি ভাল ব্যবসা করুক৷ মহিলা চরিত্র নিয়ে কাজ করলে সেভাবে টাকা উঠে আসবে না বলে আমার মনে হয়৷ যদিও আমি এই ব্যবসার ব্যাপারটা একদম ভাল বুঝি না৷ এগুলো নিয়ে আমার একটু ধোঁয়াশা আছে…
advertisement
advertisement
প্রশ্ন- ধোঁয়াশা শব্দটা যেন আপনার ব্যক্তিগত চরিত্রের পরিপূরক৷ আপনাকে দেখে মনে হয় আপনি নিজেকে সবসময় ধোঁয়াশায় মুড়ে রাখেন৷ অনন্যা চক্রবর্তী কি সত্যিই এরকম? নাকি রিয়াল পার্সেন?
উত্তর- আমি খুবই রিয়াল, আমার ব্যক্তিগত পরিসরে৷ আমার মনে যা, মুখেও তাই৷ মানে স্পষ্ট কথা বলতে ভালবাসি৷ আর মোড়ক বলতে আমি কাজের বাইরে আমার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করতে পছন্দ করি না৷ আমি সেভাবে কোনও পোস্টও করি না৷ আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনটা একেবারে ব্যক্তিগতই রাখতে চাই৷ তবে কাজের কথা সবই তুলে ধরি ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে ৷ কাজের সব তথ্য প্রোমোট করি৷
advertisement
প্রশ্ন- সৃজিৎ মুখার্জির পরিচালনায় আপনি অভিনয় করলেন প্রায় ১০ বছর পর৷ কতটা বদলেছেন মানুষ সৃজিৎ? রসায়নে কোনও বদল ঘটেছে?
উত্তর- সৃজিতের সঙ্গে আমার কোনও রয়াসন তৈরিই হওয়ার সুযোগ আগে হয়নি৷ কারণ জাতিস্মরে আমার কাজটা খুবই ছোট ছিল৷ মানে একটা গানের অংশে আমি ছিলাম৷ একজন পরিচালকের সঙ্গে অভিনেত্রীর সক্ষতা তখন তৈরি হয় যখন অনেকটা সময় দু’জনে একসঙ্গে কাজের সুযোগ পান৷ এবার সেটা হয়েছে৷ তবে সৃজিত ভীষনভাবে ফোকাসড এবং আত্মবিশ্বাসী৷ খুব অ্যাগ্রেসিভ ওর কাজের ব্যাপারে৷ ওর ধারণা খুব স্পষ্ট৷ অভিনেতাদের কাজের ক্ষেত্রে খুব সুবিধা হয়৷
advertisement
প্রশ্ন- ঋতুপর্ণ ঘোষ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, অপর্ণা সেন, কৌশিক গাঙ্গুলি, কমলেশ্বর মুখার্জি, সুমন মুখোপাধ্যায়, সৃজিৎ মুখার্জি, সকলের সঙ্গে আপনি কাজ করেছেন৷ এদের ১-২ করে তালিকা বলা সম্ভব, আপনার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতার নিরিখে…
উত্তর- খুব সোজা কাজ নয়৷ কারণ এঁদের সকলের কাজের ধরন খুব আলাদা৷ তবে আমি প্রত্যেকের সঙ্গে কাজ করেই খুব আনন্দ পেয়েছি৷ ভাল ভাল রোল পেয়েছি এঁদের থেকে৷ এঁরা সকলে তাবড় তাবড় নাম৷ আর যেটা বলতে পারি যে আমার ফিল্মোগ্রাফিতে এঁদের উজ্জ্বল নাম থাকবে৷ আর এঁদের সকলের সঙ্গে আমার সম্পর্ক একেবারে আলাদা আলাদা৷ যেমন ঋতুদা একদম আলাদা একজন মানুষ ছিলেন৷ আমি হয়ত রাত জেগে শক্তি চট্টোপাধ্যায় পড়েছি৷ মন খুব ভারাক্রান্ত৷ সকালে উঠে কাজে যাব৷ তার আগে ঋতুদাকে ফোন করে বললাম, শক্তি পড়েছি, মন খুব খারাপ৷ কাজে বেরতে পারছি না৷ ঋতুদা আমায় আরও ৪টে কবিতা শুনিয়ে বলল, যা এবার কাজে বেরিয়ে যা৷
advertisement
বুদ্ধদা-বয়সে, কাজের ক্ষেত্রে এতটা বড়, তাও কতটা রেসপেক্ট দিতেন আমায়, অভিনেত্রী হিসেবে এবং মানুষ হিসেবেও৷ ছবির প্রোমোশনের সময় আমায় পাশে বসিয়ে বলেছেন যে অনন্যাকে অভিনেত্রী এবং মানুষ হিসেবে আমি সম্মান করি৷
রিনাদি আমায় যেন তুলোর মধ্যে করে রেখেছিলেন৷ খুবই যত্ন করতেন৷ সৃজিৎ আবার বন্ধু স্থানীয়৷
প্রশ্ন- এটা কী বিশ্বাস করেন যে, সত্যি বলে কী সত্যি কিছু নেই?
উত্তর- ঠিক, কারণ আজ যা সত্যি কাল তা নাও থাকতে পারে৷ আজকের সত্যি কাল মিথ্য হতে পারে না৷ হতেই পারে যে আজকের সত্যির রূপটা বদলে গেল৷ একসময় বিশ্বাস করা হত যে পৃথিবী আসলে গোল নয় সমতল ৷ পরে জানা গেল পৃথিবী গোল৷ ফলে যে বিশ্বাসটা ছিল সেটা তো মিথ্যে প্রমাণিত হল৷ আমি মুহূর্তের সত্যিতে বিশ্বাস করি৷ প্রেজেন্টটা বিশ্বাস করি৷
প্রশ্ন- খুব বেছে বেছে কাজ করলে কী কাজ পেতে সমস্যা হয়, যায় ফল বছরে ১ ছবি বা তার থেকেও কম স্ক্রিনে আপনাকে দেখতে পাওয়া…কাজ কম করলে অবসাদ হয়? নাকি উল্টোটা?
উত্তর- দুটো মিলিয়ে মিশিয়ে হয়৷ তবে আমার অবসাদ কম হয়৷ কারণ যে সময়টা পাই তা কিছু না কিছু কাজের মধ্যে কাটাই৷ বই পড়ি, ফিল্ম দেখি৷ যাতে অবসাদ ঘিরে না ধরে৷ এটা তো ঠিক কাজ না থাকার একটা যন্ত্রণা দেখা দেয়৷ আর অবসাদ এতটা খারাপ যে গ্রহণের মতো ঢেকে ফেলল৷ ফলে আমি নিজেকে সামলে নিতে শেখাই৷ ধৈর্য ধরে থাকি৷ আর এভাবে তো ইন্ডাস্ট্রিতে ২৫ বছর কটে গেল৷
প্রশ্ন- আপনার জীবনে সেরা কমপ্লিমেন্ট কী পেয়েছেন? অভিনেত্রী হিসেবে তো বটেই, সুন্দরী হিসেবেও….
উত্তর- সুন্দরী হিসেবে কোনও কমপ্লিমেন্ট ধরছি না৷ তবে অভিনেত্রী হিসেব বেশ কয়েকটি প্রশংসা মনে থেকে গেছে৷ সুবর্ণলতা দেখে কিছু বৃদ্ধা আমায় এসে খালি শিশি দিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন যে তোমার স্বামী প্রবোধ তোমায় এত দুঃখ দিচ্ছে৷ ওকে কাঁদতে হবে৷ এই শিশি দিলাম, ওর একদিন চোখের জল পড়বে, এতে ফেলতে বলো! এছাড়া একদিন আমি নিউমার্কেটে শপিং করছি৷ একজন আমার পিছন থেকে আমার নাম ডাকলেন৷ বললেন আপনার গলার স্বর শুনে আপনাকে চিনতে পেরেছি৷ এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে৷
২৫টা বছর কাটিয়ে আজও অনন্যা চট্টোপাধ্যায় বাংলা ছবির জগতে উজ্জ্বল নাম৷ জাতীয় পুরস্কারে সম্মানিত অভিনেত্রী আরও ভাল ছবি তিনি দর্শকদের উপহার দিন, সেই শুভেচ্ছা রইল৷ আপাতত সকলেই অপক্ষা করছেন তাঁর পরবর্তী ছবি সত্যি বলে সত্যিই কিছু নেই-এর দিকে৷
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Interview: "আমার ফিল্মোগ্রাফিতে স্বনামধন্য সব পরিচালকের নাম, গলা শুনে চিনতে পারেন দর্শক, আর কী চাই!" অনন্যা চট্টোপাধ্যায়
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement