আমেরিকার মাটিতে ভারতীয় নৃত্যকে গেঁথে দিয়েছেন শ্রীমতী রিঙ্কু ভট্টাচার্য দাস

Last Updated:

সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন মণিপুরী ও কত্থক ঘরানার নৃত্য শিল্পী রিঙ্কু ভট্টাচার্য দাস। বছরের বেশ কিছুটা সময় সুদূর আমেরিকা থেকে নিজের শহর কলকাতায় চলে আসেন তিনি শিল্পের টানে। নৃত্যের বন্ধনে।

#কলকাতা:  বিদেশ মানেই ভালো চাকরি, ডলার আর একটা অন্যরকম জীবন ! এমনটা সকলের চাওয়া থাকলেও নৃত্যশিল্পী শ্রীমতী রিঙ্কু ভট্টাচার্য দাসের কিন্তু নয়। দেশের মাটি, দেশের থেকে পাওয়া শিক্ষাকে ভুলে যাওয়া নয়, বরং বিদেশের মাটিতে কিভাবে নিজের ভালোবাসা, নিজের শিক্ষা ও শিল্পকে গেঁথে দেওয়া যায়, সেটাই তাঁর লক্ষ্য। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন মণিপুরী ও কত্থক ঘরানার নৃত্য শিল্পী রিঙ্কু ভট্টাচার্য দাস। বছরের বেশ কিছুটা সময় সুদূর আমেরিকা থেকে নিজের শহর কলকাতায় চলে আসেন তিনি শিল্পের টানে। নৃত্যের বন্ধনে।
কঠিন সময়। গোটা পৃথিবী কোভিড লড়াইয়ে শামিল। তার মধ্যেও তিনি আঁকড়ে ধরে রয়েছেন নিজের শিল্পকে।
কোথা থেকে পান এই টান?
নৃত্য আর আমি এক আত্মা। বিদেশে অর্থাৎ আমেরিকায় আমাকে চলে যেতে হয় অনেক দিন আগেই। কিন্তু সেখানে গিয়ে ভালো চাকরি করবো! অন্যরকম জীবন হবে, এটা আমি ভাবিনি। আমি নিজের শিল্পকে ওই দেশের মাটিতে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছি। তার জন্য লড়াইটাও কম ছিল না আমার।
advertisement
advertisement
কেমন ছিল লড়াই?
আমি গুরুজি বিপিন সিং এবং পদ্মশ্রী দর্শনা জাভেরির কাছে মণিপুরী ক্লাসিকাল নৃত্য শিখেছি ।  কত্থক শিখি গুরু পরভীন গঙ্গানি ও শ্রীমতী কেকা সিনহার কাছে। প্রায় ২৫ বছরের বেশি সময় ধরে নাচই আমার সব কিছু। গুরুজি মারা যাওয়ার আগে একটা ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর এই নৃত্যশিল্পকে যদি কেউ ধরে রাখে এবং দেশের বাইরে নিয়ে যায়। আমার মনের মধ্যে এই কথা সব সময় ঘুরত। আর তা থেকেই বিদেশ যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার পর আমি প্রথম থেকে শুধু নাচ নিয়েই ভাবি। প্রথমে নিজে বহু জায়গায় সোলো ডান্স করি। মানুষকে বোঝাতে শুরু করি মণিপুরী ও কত্থক নাচ আসলে কি ! তারা তো এসব কিছুই জানে না। কিন্তু নাচ দেখার পর আমারিকার বিভিন্ন ইউনিভার্সিটি, এবং ওখানকার মানুষ সহযোগীতা করেন। তারপরেই আমি সাহস পাই আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
advertisement
এর পরের জার্নিটাও নিশ্চয় সহজ ছিল না !
না, প্রথমটায় তো একেবারেই নয়। তবে সে লড়াই সামলে আমি 'নৃত্যজ্যোতি ডান্স অ্যাকাডেমি' খুলি। আমি নর্থ ক্যারোলিনাতে অনেক বছর ছিলাম। সেখান থেকেই যাত্রা শুরু। আমার স্কুলে আমারিকান  ছাত্রীরা  নাচ শিখতে শুরু করল। শুধু আমেরিকান না, চাইনিজ, ইউরোপিয়ান সহ অনেকেই এই নাচের প্রতি আগ্রহ দেখাতে শুরু করে। এবং তাঁরা ভালোবাসতে শুরু করে ভারতীয় নৃত্যকে । এরপর শুধু নাচ শেখানো নয়। আমি বছরে বেশ কয়েকবার ভারতে আসতে শুরু করলাম আমার মেয়েদের নিয়ে। ওরা এখানে এসে আমাদের দেশের নাচকে যখন তুলে ধরলো তখন সকলেই মুগ্ধ হয়। ২০১৮ সালে আমি এবং আমার নাচের গ্রুপ ভারতীয় নাচের জন্য আমন্ত্রণ পাই আমেরিকান কনসোলেটে পারফর্ম করার। সে সময় দুর্গাপুজোতেও পারফর্ম করি কলকাতায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বাদামতলা আষাঢ় সংঘে  আমি এবং আমার  গ্রুপ পারফর্ম করে। এবং সে এক দারুণ মুহূর্ত ছিল।
advertisement
ভবিষ্যতে কি ভাবনা আপনার?
দেখুন আমার প্রথম থেকেই ভাবনা ছিল বিদেশের সঙ্গে দেশের শিল্পের বিশেষ করে ভারতীয় নৃত্যের একটা যোগ গড়ে তোলা। তার জন্য আমি ওখানে ভারতীয় নৃত্যশিল্পীদের ওয়ার্কশপে আমাদের দেশের অনেককেই নিয়ে গিয়েছি। যেমন গুরু শ্রীমতী কেকা সিনহা,  সঞ্জীব ভট্টাচার্যের মতো অনেকেই গিয়েছেন। আবার ওখান থেকে আমার নাচের গ্রুপ এখানে এসে আইসিসিআর থেকে শুরু করে নানা জায়গায় পারফর্ম করেছে। আমি এই দেশ থেকে পোশাক থেকে বাদ্যযন্ত্র সব নিয়ে গিয়েছি মেয়েদের জন্য। এই যে যোগ এটাকেই ভবিষ্যতে আরও শক্ত করে তোলাই আমার কাজ।
advertisement
আমেরিকান মেয়েদের ভারতীয় নৃত্যের ভাষা বোঝানোও তো বেশ কঠিন?
হ্যাঁ কঠিন তো বটেই। ওখানেও বলিউডি গানের ঝলক বেশি দেখা যায়। বলিউডি নাচ বেশি খ্যাত। তার মাঝখান থেকে মণিপুরী ডান্স এবং কত্থককে তুলে ধরা একটা চ্যালেঞ্জ। আমার কাছে তো একটা ভারতীয় বাদ্যযন্ত্রও ছিল না। সব কিছু জোগাড় করেছি। এবং বাংলা গানের প্রতিটা মানে ছাত্রীদের বোঝাতে হয়। তারপরেই ওরা ভালোবেসে ফেলে আমার দেশের শিল্পকে।
advertisement
কলকাতা ও আমেরিকার সেতু তাহলে ভারতীয় নৃত্য?
অনেকটা তেমনই ভাবনা আমার। আমার গুরুজিদের ইচ্ছেকে আমি জীবিত রাখতে চাই। দুই দেশের মাটিতেই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। তার জন্য আমার স্বামী ডক্টর মৃণাল কে দাস আমায় অনেক সাহায্য করেন। উনি একজন সাইন্টিস্ট। ইন্ডিয়ান আমেরিকান। কিন্তু আমার শিল্পকে মন থেকে ভালোবাসেন। আমি একটা রিসার্চও করছি আমেরিকান ও ভারতীয় ডান্সের মধ্যে যে পার্থক্য আছে তা নিয়েই। ওদের নাচে পায়ের ব্যবহার বেশি, আর আমাদের হাতের মুদ্রা ও ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন। এই নিয়ে একটা ডকুমেন্টারিও হচ্ছে। পুরস্কার , অনুষ্ঠান অনেক হয়েছে। আমি চাই দুই দেশের মধ্যেই যেন বেঁচে থাকে এই নাচ। ব্যবসা হিসেবে নয় বা বলিউডি নাচের মতো করে নয়। ভারতের ঐতিহ্য বহন করে শিল্পের জায়গা ধরে রাখুক এই মণিপুরী ও কত্থক নৃত্য। অনেকটাই এগিয়েছি। ভবিষ্যতে আরও অনেক পথ যেতে হবে।
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
আমেরিকার মাটিতে ভারতীয় নৃত্যকে গেঁথে দিয়েছেন শ্রীমতী রিঙ্কু ভট্টাচার্য দাস
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement