তৈরি হয়েছিল বিশাল সেট, বৃষ্টিতে নিশ্চয়ই নষ্ট হচ্ছে? মন খারাপের কথা সুদীপের লেখায়...

Last Updated:

আমার মন খারাপ করে আমার কাজের সঙ্গীদের জন্য...এই বিচ্ছেদে বুঝতে পারি যে দিনের পর দিন একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে সিনেমার নেশায় পাগল এই একদল মানুষ আমার কতটা আপন!

চলছিল সঞ্জয়লীলা বনসালি পরিচালিত ছবি গঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ীর শ্যুটিং৷ প্রধান চরিত্রে আলিয়া ভাট৷ তবে আপাতত সব বন্ধ৷ সকলেই গৃহবন্দি৷ তাই সব থেকে বেশি মনে পড়ছে ছবি বিশাল সেটটার কথা, মুম্বই থেকে News18 বাংলার জন্য কলম ধরলেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রগ্রাহক সুদীপ চট্টোপাধ্যায়৷
সাত সকাল অ্যালমর্টা বেজে ওঠাতে হঠাৎ অনেকটা উত্তেজনা আর আনন্দ নিয়ে ঘুমটা ভাঙলো...একটা বাজে স্বপ্ন দেখছিলাম একটা ভাইরাস নাকি সারা পৃথিবীকে থমকে দিয়ে আমাদের সবাইকে ঘরবন্দি করে দিয়েছে যত আজগুবি দুঃস্বপ্ন! শ্যুটিং শিফট সকাল ৯ টায়...মোবাইলটা খুলে কলশিট দেখতে গেলাম, আজকে আলিয়া ভাটের ইনট্রোডাকশনে শ্যুট আছে...কিন্তু কোথায় কলশিট...বাস্তবিকতা হজম করতে কয়েক মুহূর্ত লাগলো৷ দুঃস্বপ্ন ও সত্যি হয় তাহলে?
advertisement
তবে অ্যালর্মটা কেন? মনে পড়লো আজ আমার চা বানানোর পালা৷ আমাদের সোস্যাইটির স্টাফদের জন্য৷ ওদের এখানেই থাকার ব্যবস্থা হয়েছে যাতে বাইরের সংক্রমণ আমাদের বাড়িতে ঢুকতে না পারে৷ পালা করে ওদের চা আর খাওয়া দাওয়ার দায়িত্ব পড়ে অ্যাপার্টমেন্টের এক একটি পরিবারের ওপর৷
advertisement
খানিক বাদে এক স্বনামধন্য অভিনেত্রীর ফোন৷ একটা ইন্টারভিউ রয়েছে তার এবং সেটা তাকে নিজের মোবাইল ফোনে নিজেকেই শ্যুট করতে হবে৷ আমি যদি একটু বলে দিই যে ফোনটাকে ঠিক কেমন করে ধরলে তাকে সেই স্বপ্নসুন্দরীর মত দেখাবে!
advertisement
গোরেগাঁও ফিল্মসিটির সুনীল ময়দানে পড়ে আছে আমাদের সেটটা৷ তার জন্য ভারি মনখারাপ করে...অতদিনের মেহনতে অতগুলো মানুষের ক্লান্তিহীন পরিশ্রম...অনেকগুলো স্বপ্ন, অনেক আশা, অনেক আনন্দ, সব মিলেমিশে আছে ওই সেটটার প্রতিটি ইঁট-কাঠ-পাথরে৷
আমার মন খারাপ করে আমার কাজের সঙ্গীদের জন্য...এই বিচ্ছেদে বুঝতে পারি যে দিনের পর দিন একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ দিয়ে সিনেমার নেশায় পাগল এই একদল মানুষ আমার কতটা আপন! যে ছবিটা আমরা বানাচ্ছি তার নাম গাঙ্গুবাই কাঠিয়াওয়াড়ী৷ পরিচালক সঞ্জয় লীলা বনসালি ৷ আরও প্রায় পঁয়ত্রিশ দিনের শ্যুটিং বাকি আছে৷ আবার কবে শ্যুটিং করা যায়, বর্ষার মধ্যে সেটটাকে কেমনভাবে বাঁচানো যায় ইত্যাদি নানান ব্যাপারে সারাদিনে বেশ কবার কথা হয় ফোনে সঞ্জয়ের সঙ্গে৷
advertisement
ইদানিং দিনের অনেকটা সময় কাটছে বিভূতিভূষণের সঙ্গে৷ ওর লেখার বর্ণনাতে আমার মনে এই বন্দিদশা ছেড়ে ছুটে চলে যায় প্রকৃতির মাঝখানে৷ এছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, সত্যজিৎ রায়, মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ, পরশুরাম, বনফুল, বুদ্ধদেব বসু, এনারা না থাকলে আমাদের এই বন্দিদশায় আমরা করতাম কী?
বইপড়া ছাড়া আছে সিনেমা দেখা, গান শোনা, রান্না করা, পালা করে ঘর পরিষ্কার, বাসন মাজা আর ছেলে মেয়ে আর আমার স্ত্রীর মৌমিতার সঙ্গে বিরামহীন আড্ডা আর মাঝেমধ্যে ঝগড়াঝাটি৷ মুম্বইতে আমার বাড়ির পশ্চিমদিক খোলা৷ আমি বিকেলটা বারান্দায় বসে চা খাই৷ সূর্যটা আস্তে আস্তে তলিয়ে যায় অদূরে আরব্য সাগরে৷ মনটা কেমন একটা সুপ্তিতে ভরে ওঠে সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে...কিছু ঘণ্টা বাদে সূর্যদয় অনিবার্য৷
advertisement
তারপর চোখ চলে যায় নিচের দিকে খানিক দূরে৷ সদ্য গজিয়ে ওঠা একটা টিনের শেড দেওয়া ঘরগুলির দিকে৷ কাছেই আরেকটা টাওয়ার উঠছে৷ তার মজুরদের জন্য বানানো হয়েছে এই ঘরগুলো৷ অসামাজিক দূরত্বে বসে গল্প করে দেখি কিছু মানুষ৷ আমার বাড়ি অনেক উঁচু তলায় তাই ঠাওর হয়না পরিষ্কার করে৷ কেমন আছে ওরা? ওদের মধ্যে ক’জন কি গিয়েছিল সেদিন বান্দ্রা স্টেশনে বাড়ি ফেরার আশায়?
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
তৈরি হয়েছিল বিশাল সেট, বৃষ্টিতে নিশ্চয়ই নষ্ট হচ্ছে? মন খারাপের কথা সুদীপের লেখায়...
Next Article
advertisement
আচমকা পদত্যাগ হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের! ফিরহাদকে পাঠালেন পদত্যাগপত্র, নেপথ্যে কী কারণ? যা জানালেন সুজয় চক্রবর্তী
আচমকা পদত্যাগ হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যানের! ফিরহাদকে পাঠালেন পদত্যাগপত্র, নেপথ্যে কী কারণ?
  • হাওড়া পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের জন্য আবেদন জানিয়ে পদত্যাগ পত্র পাঠালেন সুজয় চক্রবর্তী। ২৫ তারিখ পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগের জন্য চেয়ারম্যানের তরফে একটি পদত্যাগ পত্র পাঠানো হয়েছে

VIEW MORE
advertisement
advertisement