Exclusive: ‘রাজ আর আমার ব্যাপারে লোকে যা বলার তা বলবেই, কিছু আটকাতে পারব না’

Last Updated:

পত্রলেখা পাল, অভিনয় ঘিরেই বাঁচেন। ওটিটিতে সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ছবি 'অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ', বয়ফ্রেন্ড রাজকুমার রাও- এই সবকিছু নিয়ে কথা বললেন নায়িকা।

কেরিয়ারের শুরুটা দারুণ হলেও, তারপরটা জমলো না। তবুও হাল ছাড়েননি তিনি। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পত্রলেখা পাল, অভিনয় ঘিরেই বাঁচেন। জীবন, অভিনয় জগতে আসা, ওটিটিতে সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত ছবি 'অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ', বয়ফ্রেন্ড রাজকুমার রাও- এই সবকিছু নিয়ে কথা বললেন নায়িকা। পত্রলেখার কথা শুনল নিউজ 18 বাংলা।
প্র: প্রথমেই জিজ্ঞেস করব পরিচালক প্রদীপ সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে বলি। হিন্দি , ইংরেজি মিশিয়ে প্রশ্ন না, করে বাংলাতেই করতে পারেন। আমার বাড়ি শিলংয়ে। আমি একেবারেই বাঙালি। আর প্রদীপদার সঙ্গে কাজ করা তো ভাগ্যের ব্যাপার। দাদার প্রযোজক আমাকে চিনতেন। তিনিই আমার কথা দাদাকে বলেন। বিশ্বাস করবেন কিনা, জানি না। চিত্রনাট্য, গল্প কিছুই শোনার আগে দাদার অফিস যাওয়ার রাস্তাতেই ঠিক করে নিয়েছিলাম এই ছবিটা আমি করব। সেটা কিন্তু একেবারেই পরিচালক প্রদীপ সরকারের সঙ্গে কাজ করব বলে।
advertisement
advertisement
প্র: 'পরিণীতা' থেকে 'মর্দানি', প্রদীপ সরকার নারী চরিত্র পর্দায় খুব ভাল খুঁটিয়ে তোলেন। আপনি একমত?
উ: একেবারে ঠিক বলেছেন। কিন্তু আমি বলব দাদা খুব ভাল গল্প বলতে পারেন। আর প্রদীপদার প্রত্যেকটা নারী চরিত্র খুব শক্তিশালী।  'অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ'-এর ক্ষেত্রেও তাই।
প্র: এই ছবিতে আপনি এমন একটা চরিত্র করছেন, যাঁর বিয়ে একজন সমকামী পুরুষের সঙ্গে হয়ে যায়। এরকম একটা পাত্রের আকার নিলেন কী করে?
উ: বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় অভিনেতাকে। চরিত্র ফুটিয়ে তোলাই আমাদের কাজ। আমি অল্প বয়স থেকে সমকামীতা দেখেছি। বিষয়টা আমার কাছে অন্য গ্রহের মতো কিছু নয়। আমি বোর্ডিং স্কুলে পড়েছি। এলজিবিটি-র সম্পর্কে আমার স্পষ্ট ধারণা রয়েছে। কিন্তু ছবিতে আমি যে চরিত্রে অভিনয় করছি, সে বড়ই ছা-পোষা। খুব সাধারণ। যেটা ব্যক্তি আমি বিশ্বাস করি, সেটা ছবিতে আমার চরিত্র বিশ্বাস করে না। এই দ্বন্দ্ব কাটিয়ে উঠে সাবলিল ভাবে অভিনয় করা, একটু কঠিন ছিল। আমি শুধুমাত্র দাদার কথা শুনে অভিনয় করে গিয়েছি। আর সবচেয়ে ভাল কী জানেন?
advertisement
আমি কলকাতায় এসে শ্যুটিং করতে পেরেছি। এটা কম আনন্দের, বলুন? আমার ঠাকুমার বাড়ি কলকাতায়। ছোটবেলা গরম ও শীতের ছুটিতে কলকাতায় চলে আসতাম। কত স্মৃতি আছে এই শহরের সঙ্গে। তা ছাড়াও সোমনাথ গুপ্তর সঙ্গে একটা বাংলা ছবি করেছি।
প্র: এই ছবিতে আপনি আলি ফয়জলের সঙ্গে কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা ছিল?
উ: দারুণ। আলি অসম্ভব ভাল অভিনেতা। এই কয়েক বছরে ওঁর ভীষণ গ্রো করেছে। আলি এখন গ্লোবাল স্টার। এই ছবিতেও সকলকে মুগ্ধ করার মতো কাজ করেছে। ওঁর অনেক সন্মান প্রাপ্য। আলির মধ্যে কোনও বাড়তি গাম্ভীর্য নেই। ও সেটে খুব কুল। একেবারে টিম প্লেয়ার।
advertisement
প্র: একটা অন্য কথা জানতে ইচ্ছে করছে। 'সিটি লাইটস'-এ আপনি অসাধারণ। তারপর ঠিক কী ভুল হল? মানে কেন আপনার ফিল্মোগ্রাফিতে হাতে গোনা ছবি ও মাত্র কয়েকটি সিরিজ?
উ: সেরকম ভুল কিছু হয়েছে বলবো না। আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম 'সিটি লাইটস'-এর মতো একটা ছবি করতে পেরেছি। ভাট সাহাবের কাছেও কৃতজ্ঞ, আমাকে 'লভ গেমস'-এ অভিনয় করার সুযোগ দেন। কিন্তু এই ছবি একেবারেই চলল না। হয়তো দর্শক আমাকে খল নায়িকার চরিত্রে মেনে নিতে পারেননি। তারপর ভাল কাজের প্রস্তাব কমই পেয়েছি।
advertisement
প্র: 'সিটি লাইট'-এর জন্য এত ভাল কমেন্টস, তারপর দর্শক যেন ছুড়ে ফেলে দিলেন, কষ্ট হয়েছিল?
উ: তখন আমার খুব কম বয়স। সত্যি মন ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু অনেক শিক্ষা দিয়েছে এই ব্যর্থতা। একজন অভিনেতার কী করা উচিত, আর কী করা উচিত না, সেই পাঠ পড়িয়েছে এই মুখ থুবড়ে পড়াটা। গত তিন চার বছর মনে হয় ঠিক পথে হাঁটছি। দেখি কী হয়।
advertisement
প্র: সাফল্য, ব্যর্থতা আসতে থাকে। আচ্ছা আপনার দিদা কবিতা লিখতেন। কিন্তু অভিনয়ের সঙ্গে পরিবারের কারও যোগ ছিল না। এই অনিশ্চয়তা বেছে নিলেন কেন?
উ: পরিবারের সঙ্গে ফিল্মি জগতের কোনও সম্পর্ক নেই। ছবি দেখা ওই টুকুই, যা যোগ। কিন্তু আমার বাবা- মা কখনোই কিছু চাপিয়ে দেননি। বাড়ির সহযোগিতা না পেলে এই পেশায় আসা সম্ভব ছিল না। তা ছাড়াও মুম্বাই-এ এসে আমি কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। তাই অডিশন দিতে সুবিধে হয়েছে। আমি খুব ফোকাসড ছিলাম। ক্লাস টুয়েলভে পড়ার সময় ঠিক করি অভিনয় করবো।
advertisement
প্র: আপনি বিজ্ঞাপনও তো করেছেন, তাই না?
উ: কলেজের থার্ড ইয়ার থেকে কমার্শিয়াল করা শুরু করি। তারপর রোজ অডিশন। ছবি না পাওয়া পর্যন্ত, এই ছিল জীবন। এক মাসে ১০০ টা অডিশন দিয়েছি মনে আছে।
প্র: সেখান থেকে ‘সিটি লাইটস’-এ একটি বাচ্চা মেয়ের মায়ের চরিত্রে সুযোগ পেলেন।
উ: ছবিটা পেলাম। জানতে পারলাম মায়ের চরিত্র। আমি কী করে রিলেট করব জানি না। অন্যদিকে নিজেকে প্রমাণ করার একমাত্র সুযোগ। অভিনয় করতেই তো এসেছিলাম। জান-প্রাণ লাগিয়ে চেষ্টা করেছিলাম।
প্র: তার ফলও পেয়েছেন। এখন তো ভালই আছেন বয়ফ্রেন্ড রাজের (রাজকুমার রাও) সঙ্গে। বেশ লকডাউন কাটালেন।
উ: কোভিড পরিস্থিতি বাদ দিলে আমি আর রাজ ভালই আছি। অনেকটা সময় একসঙ্গে কাটাতে পারলাম।
প্র: আচ্ছা একটু কঠিন প্রশ্ন করি। বয়ফ্রেন্ড বেশি সফল এই নিয়ে হয়তো কথা হয়। কিন্তু আপনার সাফল্যের ক্রেডিটও কি আপনাকে দেওয়া হয় না? মানে রাজকুমার রাও-এর গার্লফ্রেন্ড বলে পেয়ে যাচ্ছে, এটা শুনতে হয়?
উ: কী উত্তর দিই বলুন তো। স্বার্থপর বা ঔদ্ধত্য মনে যেন না হয়। কিন্তু আমি সত্যি পাত্তা দিই না। আমার ব্যক্তিগত জীবন ঠিক আছে। কাজের জায়গায়ও দিব্যি চলছে। ব্যালেন্স করে চলতে পারছি। বাকি লোকের যা বলার তা বলবেই। আমি, আপনি চেষ্টা করে কিছু আটকাতে পারবো না। তবে কারও ভাবনা আর বাস্তব এক নয়।
প্র: তবে সমালোচনায় ব্যক্তিগত জীবন প্রভাবিত হয় না?
উ: সেটা হয় না। কাজ করি তারপর বাড়ি ফিরে আসি। বাইরের পৃথিবীটা বাইরে রেখে আসি। জোর করে যে কিছু করতে হয়, এমনটা নয়। ওটা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই হয়।
প্র: আচ্ছা সব তো হল, গাঁটছড়া বাঁধছেন কবে?
উ: বিশ্বাস করুন হাতে প্রচুর কাজ। ছবি, সিরিজ। দু’জনেরই বিয়ে করার মতো সময় নেই এখন।
প্র: বেশ, গোটা সাক্ষাৎকার ঝরঝরে বাংলায় দিলেন। বাংলা ছবি করেন না কেন?
উ: আমি বাংলা ছবি করার প্রস্তাব পাই না। বাংলায় এত ভাল কাজ হচ্ছে এখন। বাংলা ছবি করতে চাই। আমি কেন প্রস্তাব পাই না, জানি না। আশা করি, আপনার সাক্ষাৎকারের পর বাংলা চলচ্চিত্র জগতের কেউ না কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। (হাসি)
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Exclusive: ‘রাজ আর আমার ব্যাপারে লোকে যা বলার তা বলবেই, কিছু আটকাতে পারব না’
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement