Anjana Bhowmick Obituary: নায়িকাজীবনের মধ্যগগনেই অন্তরালে, অঞ্জনার অভিনয় ও হাসিতে মিষ্টি হয়ে উঠত যে কোনও আটপৌরে সকাল
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- news18 bangla
Last Updated:
Anjana Bhowmick Obituary: আরতি থেকে হয়ে যান অঞ্জনা। টালিগঞ্জ পেয়ে যায় তার নতুন নায়িকা অঞ্জনা ভৌমিককে।
কলকাতা : বাঙালি সৌন্দর্যের ব্যাকরণের বিপরীতে গিয়েই তিনি ছিলেন আকর্ষণীয়া। পর্দায় ঋজু মরালীর মতো উপস্থিতির যোগ্য সঙ্গত ছিল সাবলীল অভিনয়। সমসাময়িক নায়িকাদের তুলনায় অনেক কম ছবি করেও দর্শকদের স্মৃতিতে স্বমহিমায় উজ্জ্বল অঞ্জনা ভৌমিক।
১৯৪৪ সালে কোচবিহারে জন্ম। তখন অবশ্য অঞ্জনা নয়, তাঁর নাম ছিল আরতি। সুনীতি অ্যাকাডেমি স্কুলের মেধাবী ছাত্রী আরতির সমান আকর্ষণ ও আগ্রহ ছিল খেলাধূলাতেও। বাবার আদরের বাবলি উত্তরবঙ্গে স্কুলের পাট চুকিয়ে চলে আসেন কলকাতায়। ভর্তি হন সরোজিনী নায়ডু কলেজে।

advertisement
advertisement
ছকভাঙা সুন্দরী হিসেবে পরিচিত মহলে প্রশংসিত হলেও আরতি কোনওদিন ভাবেননি সিনেমায় অভিনয় হবে তাঁর পেশা। কিন্তু ভাবনার বাইরে যা ছিল, হল সেটাই। ২০ বছর বয়সে পীযূষ বসুর ছবি ‘অনুষ্টুপ ছন্দ’-তে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি। অভিনয় জীবন শুরুর আগে পাল্টে যায় নামও। আরতি থেকে হয়ে যান অঞ্জনা। টালিগঞ্জ পেয়ে যায় তার নতুন নায়িকা অঞ্জনা ভৌমিককে।
advertisement

উত্তমকুমারের নায়িকা হিসেবে দাপটের সঙ্গে অঞ্জনা অভিনয় করেছেন বাংলা ছবিতে। মহানায়কের বিপরীতে ‘চৌরঙ্গী’, ‘নায়িকা সংবাদ’, ‘কখনও মেঘ’, ‘রৌদ্র ছায়া’, ‘রাজদ্রোহী’-তে অঞ্জনার অভিনয় রয়ে গিয়েছে দর্শকদের মনের মণিকোঠায়।
একসময় গুঞ্জন ওঠে, উত্তমকুমারের নায়িকা হওয়াই অঞ্জনার সাফল্যের একমাত্র মাইলফলক। পরবর্তীতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘মহাশ্বেতা’ ছবিতে অঞ্জনার অভিনয় ভুল প্রমাণিত করে এই ধারণাকে। তাঁর অভিনীত ‘নিশিবাসর’, ‘সুখে থাকো’, ‘দিবারাত্রির কাব্য’, ‘শুক সারি’ ছবির সাফল্যের অন্যতম বুনিয়াদ ছিল অঞ্জনার দৃপ্ত অভিনয়। ‘থানা থেকে আসছি’ ছবিতে অসূয়া জর্জরিত ধনীকন্যার অভিনয়ে তাঁর অভিব্যক্তি অতুলনীয়।
advertisement

কেরিয়ারের মধ্যগগনে থাকতে থাকতেই অঞ্জনা বিয়ে করেন নৌসেনা অফিসার অনিল শর্মাকে। তার পর ধীরে ধীরে কমিয়ে দেন অভিনয়। আটের দশক থেকে তাঁকে আর কার্যত দেখাই যায়নি বড় পর্দায়।

advertisement
শেষ দিকে অঞ্জনা চলে গিয়েছিলেন অন্তরালেই। দুই মেয়ে নীলাঞ্জনা এবং চন্দনা অভিনয় জগতে এসেছিলেন। তবে কেউই তাঁদের কেরিয়ার দীর্ঘ করেননি। নীলাঞ্জনা এখন টলিউডের নামী ও ব্যস্ত প্রযোজক। জামাই যিশু সেনগুপ্তর সঙ্গে অঞ্জনার সম্পর্কও ছিল সুমধুর। জীবনের পড়ন্ত বেলায় দুই মেয়ে, জামাই, নাতি নাতনিদের ঘেরাটোপেই নিখাদ পারিবারিক জীবন উপভোগ করতেন অঞ্জনা।
advertisement


সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘উমা’-য় নাতনি সারার অভিনয় দেখে অঞ্জনার বলিরেখাময় মুখে ছড়িয়ে পড়েছিল তৃপ্তির হাসি। সেই মুক্তোঝরা হাসি, যা এক সময় হিল্লোল তুলত অগণিত হৃদয়ে। মিষ্টি করে তুলত যে কোনও আটপৌরে সকাল। যে হাসি দেখে মনে পড়ে চড়ুইভাতিতে আধশোয়া উত্তমকুমারের মুখোমুখি বসে চুলে আলগোছে বনফুল গোঁজা নায়িকা গাইছেন ‘এই কথাটি মনে রেখো, তোমাদের এই হাসিখেলায়/ আমি যে গান গেয়েছিলেম জীর্ণ পাতা ঝরার বেলায়।’
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 17, 2024 2:24 PM IST