হায়দরাবাদ ধর্ষণ কাণ্ড: প্রথম রাতে জেলে ধর্ষকদের খাওয়ানো হল মটন কারি-ফ্রায়েড রাইস !
Last Updated:
ধর্ষকদের নিয়ে নয়া তথ্য সামনে আসতেই সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আগুনে পড়ল ঘি ৷
#হায়দরাবাদ: হায়দরাবাদে তরুণী চিকিৎসককে গণধর্ষণ, খুনের পর দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় দেশ জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়। ক্ষোভে ফুঁসছে কলকাতা থেকে কেরল। কেউ চাইছেন দোষীদের ফাঁসি। এক অভিযুক্তের মা চেয়েছেন, তার ছেলেকেও পুড়িয়ে মারা হোক। এরই মাঝে ধর্ষকদের নিয়ে নয়া তথ্য সামনে আসতেই সাধারণ মানুষের ক্ষোভের আগুনে পড়ল ঘি ৷
তরুণী চিকিৎসককে পাশবিক গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে মারায় অভিযুক্ত ৪ যুবকের ১৪ দিনের জেল হেফাজত দিয়েছে আদালত । নৃশংস এই ধর্ষণের কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিক্ষোভে উত্তাল গোটা দেশ ৷ সংসদ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া সব জায়গাতেই দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি ৷ আদালতের নির্দেশের পর পশুচিকিৎসককে ধর্ষণে অভিযুক্ত চার জনকেই রাখা হয়েছে তেলেঙ্গনার চেরাপল্লীর সেন্ট্রাল জেলে ৷ শ্রীঘরে প্রথমদিনই ধর্ষণে অভিযুক্তদের জন্য এল মাটন কারি আর ফ্রায়েড রাইস ৷ এই তথ্য সংবাদমাধ্যম সামনে আনতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ৷ এমন পাশবিক, নৃশংস অপরাধ ঘটানোর পর যখন অভিযুক্তদের পিটিয়ে মারার দাবি উঠছে, তখন জেলে ধর্ষকদের রাজার হালে রেখে অতিথির মতো যত্ন করে খাওয়া দাওয়া করানো হচ্ছে কেন? প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ মানুষ ৷
advertisement
সোশ্যাল মিডিয়ায় এর বিরুদ্ধে চলছে তীব্র প্রতিবাদ ৷ কেউ বলছেন, ‘এ কেমন দেশ, যেখানে দেশের নাগরিকদের একটা বড় অংশ ঠিক করে খেতে পায় না ৷ খালি পেটে, খালি গায়েই রাস্তায় শুয়ে থাকেন ৷ সেখানে এমন পৈশাচিক অপরাধে যুক্ত অপরাধীদের জেলে বিশেষ নিরাপত্তা দিয়ে মাটন কারি-ফ্রায়েড রাইস খাওয়ানো হচ্ছে ৷’ এই প্রসঙ্গে অনেকে ২৬/১১ মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসবাদী আজমল কাসভের প্রসঙ্গও টেনে আনেন ৷ পুরো বিচারকাজ চলাকালীন জেলের খাবার খেতে না পারার কারণে কাসভকে মাটন বিরিয়ানি খাওয়ানো হত ৷
advertisement
advertisement
তবে এই সমস্ত সমালোচনার মাঝেই জেল কর্তৃপক্ষের তরফে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তা হল, জেলে কোনদিন কী খাবার দেওয়া হবে সেই মেনু আগে থেকেই ঠিক থাকে ৷ সেই মতোই জেলে প্রথমরাতে ধর্ষকেরা পাতে পান মটন কারি-ফ্রায়েড রাইস ৷ তবে প্রাতরাশ, দুপুরের খাবার, রাতের খাবারে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কোনও একঘেয়ে মেনু নন, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খাওয়ার পাচ্ছেন ধর্ষকেরা ৷
advertisement
ক্লিনিক থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্কুটি খারাপ হয়ে যায়। টোলপ্লাজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন পশুচিকিৎসক তরুণী। পাশের দোকানে সাহায্য চাইতেও যান । পরে সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে মিলেছে তরুণীর অর্ধদগ্ধ দেহ। ধর্ষণ করে খুনের পর তরুণীর দেহ পুড়িয়ে ফেলে অভিযুক্তরা।
গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত লরি চালক মহম্মদ আরিফ, জুল্লু নবীন, জল্লু শিবা এবং চিন্তাকুনটা চেন্নাকেশাভুলু। তদন্তে নেমেই চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ জেরাতেই উঠে আসে পাশবিক ধর্ষণকাণ্ডের নৃশংসতার এক একটি তথ্য ৷ জেরায় অভিযুক্তেরা জানিয়েছে, ধর্ষণ চলাকালীন নির্যাতিতা চিকিৎসকের আর্তনাদ বন্ধ করতে মূল অভিযুক্ত জুল্লু নবীন তাঁর মুখে মদ ঢেলে দেয় ৷ সঙ্গে সঙ্গে চেপে ধরা হয় মুখও ৷ তরুণী নিথর হয়ে যাওয়ার পর ট্রাকে করেই মৃতদেহ হায়দরাবাদের অদূরে চাতানপল্লির কাছে একটি কালভার্টের নীচে নিয়ে গিয়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ৷ দেহ পোড়াতে ওই চিকিৎসক তরুণীর স্কুটি থেকেও বের করে নিয়ে আসা হয়েছিল ডিজেল ৷
advertisement
এক প্রত্যক্ষদর্শী দাবি, তরুণীর সঙ্গে দুজন যুবক এসে স্কুটিটি নিয়ে যায়। তরুণীও তাদের সঙ্গেই ছিলেন। সম্ভবত তাঁরা স্কুটি সারিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। স্কুটি সারাতে পাশের একটি দোকানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলেও বোনকে জানান ওই তরুণী। তারপরেই তাঁর মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।
তন্দুপল্লী টোলপ্লাজা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে শাদনগরে তরুণীর অর্ধদগ্ধ মৃতদেহ মেলে। ঘটনায় অভিযুক্ত ২ ট্রাকচালক সহ ৪ জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
advertisement
খোদ সাইবারবাদ টোলপ্লাজার কাছে এই নৃশংস ঘটনা। যা প্রকাশ্যে আসতেই চাপে পড়ে কেসিআর প্রশাসন। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, ওই তরুণী নিজের বোনের পরিবর্তে ১০০ নম্বরে ফোন করলে এই ঘটনা এড়ানো যেত।
হায়দরাবাদে ধর্ষণকাণ্ডের দোষীদের জনসমক্ষে এনে পিটিয়ে মারা উচিত। রাজ্যসভায় সোমবার বিস্ফোরক দাবি তোলেন জয়া বচ্চনের। যা ঘিরে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক।
advertisement
Location :
First Published :
December 02, 2019 7:27 PM IST