কিংবদন্তি ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির রাজ্যপাল থেকে সাধারণ মানুষ
- Published by:Piya Banerjee
Last Updated:
সুস্থ হয়ে আর ঘরে ফেরা হলো না কিংবদন্তি ফুটবলার তথা কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার দুপুর ২টো ৮ মিনিটে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেলেন ময়দানের সবার প্রিয় পিকে ব্যানার্জি।
#কলকাতা: সুস্থ হয়ে আর ঘরে ফেরা হলো না কিংবদন্তি ফুটবলার তথা কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। শুক্রবার দুপুর ২টো ৮ মিনিটে বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে মারা গেলেন ময়দানের সবার প্রিয় পিকে ব্যানার্জি। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য বিশেষ ঘরের ব্যবস্থা করেছিলেন তার পরিবারের লোকজন। যে ঘরে রাখা ছিল বিশেষ শয্যা। সাধারণত যেগুলো হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে থাকে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে সুবিধের জন্য। পুরো ঘর দূষণমুক্ত ও জীবাণুমুক্ত করে রাখা ছিল। ঘরের বাতাস পরিশুদ্ধ করার জন্য বিশেষ যন্ত্র বসানো হয়েছিল। আর দেয়ালজুড়ে ছিল অসংখ্য ছবি। এক দিকের ছবিতে স্ত্রী আরতির সঙ্গে তোলা বিশেষ মুহূর্তগুলো। দুই মেয়ে সঙ্গে তোলা ছবি। পারিবারিক ছবির কোলাজ করে দেয়াল জুড়ে টাঙানো হয়েছিল। অন্য দেয়ালে ছিল ফুটবলার ও কোচ পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের সেরা স্মৃতিগুলো ছবি। ফুটবল জীবনে চুনী গোস্বামী, বলরামের সঙ্গে তোলা ছবি। ফুটবল সম্রাট পেলের সঙ্গে তোলা ছবি। সচিন ও সৌরভের সঙ্গে ছবিও জায়গা পেয়েছে দেওয়ালে। ফুটবলার হিসেবে দেশের জার্সিতে তোলা ছবি। বিদেশ সফরে তোলা কিছু ছবি। আর রয়েছে কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেরা মুহূর্ত গুলো। সব ছবিগুলো নিয়ে কোলাজ করে দেয়ালে টাঙানো হয়েছিল। আসলে উদ্দেশ্য ছিল বাড়িতে ফিরলে এই ঘরে শুয়ে অতীতের মুহূর্তগুলোকে ছবির মাধ্যমে আরেকবার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তুলে ধরার। কিন্তু পরিবারের সেই ইচ্ছে শেষ পর্যন্ত পূরণ হলো না। তবে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এলেন সেই ঘরে। তবে সজ্ঞানে নয়, প্রিয় ছাত্র দের কাঁধে চেপে মরদেহ হয়ে।

জিডি ২৭৩ সল্টলেক সেক্টর ৩ । প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঠিকানা। গেটে অলিম্পিকের লোগো। বাড়ির বাইরে থেকে দেখলেই বোঝা যেত এই বাড়ি কোনও অলিম্পিয়ানের। শুক্রবার সেখানেই করোনা আতঙ্ক কে উপেক্ষা করে উপস্থিত হয়েছিলেন ময়দান কাঁপানো একাধিক ফুটবলার। উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাবের কর্তারা। করোনা আতঙ্কের জেরে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মরদেহ দুই প্রধান ও রেলের তাঁবুতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। সল্টলেকের বাড়িতেই সবাই শেষ শ্রদ্ধা জানান। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। মরদে মাল্যদান করার পর তিনি বলেন," ফুটবলার প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম একে অপরের পরিপূরক। তাঁর মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান হলো।" কিছুটা দূরে এক জায়গায় বসে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাত্ররা স্মৃতিচারণ করছিলেন অতীতের দিনগুলো। অন্যতম প্রিয় ছাত্র সুভাষ ভৌমিক বলেন," জীবনে ফুটবলার হিসেবে যা কিছু পেয়েছি একমাত্র প্রদীপ স্যারের জন্য। ময়দানে আমার ডাকনাম ভোম্বল। সেই নামকরণও প্রদীপ ব্যানার্জি করেছিলেন।" হাত দিয়ে দূরে সেই সময় দাঁড়িয়ে চোখের জল আটকাতে পারছিলেন না শ্যাম থাপা। কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান অস্ত্র ছিল ভোকাল টনিক। ম্যাচ শুরুর আগে কীভাবে ফুটপাতে তাতাতেন দেন প্রদীপ স্যার, সেই কথাগুলি ঘুরেফিরে আলোচনা করছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্য্য, সুরজিৎ সেনগুপ্ত ,বিদেশ বসুরা।
advertisement
advertisement

প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। হাসপাতাল থেকে শ্মশান পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও সুজিত বসু। বাড়ি থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা মহাশ্মশানে। সেখানে গান স্যালুট এর মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে টুইট করে শ্রদ্ধা জানান সচিন, সৌরভ থেকে বলিউড অভিনেতা অজয় দেবগন। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান কর্তাদের মতে করোনা আতঙ্কের জেরে রাজকীয় শেষ বিদায় জানানো সম্ভব হলো না পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে অনেক মানুষ এসেছিলেন শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। পরে দুই প্রধানে আলাদা করে স্মরণ সভা করা হবে। আজ থেকে ১৭ বছর আগে ২০০৩ সালের ২০ মার্চ প্রয়াত হয়েছিলেন ফুটবলার কৃষানু দে। সেই প্রিয় ছাত্রের মৃত্যুর তারিখেই চলে গুরু প্রদীপ স্যার।
advertisement
ERON ROY BURMAN
view commentsLocation :
First Published :
March 20, 2020 9:49 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
কিংবদন্তি ফুটবলার পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির রাজ্যপাল থেকে সাধারণ মানুষ