করোনা যুদ্ধে সর্বদা ছিলেন সামনে, এ বার নিজেই আক্রান্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মন খারাপ বর্ধমানের

Last Updated:

দিনে রাতে কখনও টোটোয় চড়ে, কখনও পায় হেঁটে এলাকায় এলাকায় ঘুরে হাতে মাইক নিয়ে বাসিন্দাদের মাস্ক পরার ব্যাপারে সচেতন করেছেন তিনি।

Saradindu Ghosh
#বর্ধমান: মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মন খারাপ পূর্বস্থলীসহ পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দাদের। করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চললেও তাতে দমে যাননি পূর্ব বর্ধমান জেলার বাসিন্দা প্রবীণ এই মন্ত্রী। বরং করোনার মাঝেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নানা কর্মকান্ডে তিনি নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। ইদানিং পূর্বস্থলীর একটি অনাথ আশ্রমে আবাসিক শিশুদের সঙ্গে থাকছিলেন তিনি। সেই আশ্রমের উন্নতির জন্য নানান কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে গত কয়েক দিনে যোগ দিয়েছিলেন ক্ষুদ্র কুটির শিল্প ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতিও তিনি। তাই দলীয় নানান কর্মসূচিতে যোগ দিতে হচ্ছিল। সম্প্রতি তাঁর এক ঘনিষ্ঠ করোনা আক্রান্ত হন। তাঁর সংস্পর্শে আসার কারণেই মন্ত্রী করোনা পজিটিভ হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
advertisement
মার্চ মাসের শেষ। অন্ধকার রাতে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে যেন এক ভিনগ্রহের মানুষ। আপাদমস্তক সাদা পোশাকে ঢাকা। হাতে টর্চ। চোখে চশমা। বর্ধমানের রাস্তায় যেন নেমে এসেছে এলিয়েন। কাছে গিয়ে বাসিন্দারা দেখেন, তিনি আর কেউ নন, জেলার প্রবীণ মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। দিনে রাতে কখনও টোটোয় চড়ে, কখনও পায় হেঁটে এলাকায় এলাকায় ঘুরে হাতে মাইক নিয়ে বাসিন্দাদের মাস্ক পরার ব্যাপারে সচেতন করেছেন তিনি।
advertisement
advertisement
লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন অনেকেই। তেমনি এক কাজ হারানো মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারককে অনাথ আশ্রমে  ডেকে নিয়ে গিয়ে সেখানে রাজভোগ তৈরি করাচ্ছিলেন তিনি। সেই মিষ্টি অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের মুখে তো পড়ছিলই, হাঁড়িতে ভরে সেই রাজভোগ বিক্রি করছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে ঘুরে। সরকারি আধিকারিক থেকে দলের কর্মসূচি সব জায়গাতেই দেদার রাজভোগ বেচেছেন তিনি। উদ্দেশ্য একটাই, মিষ্টান্ন বিক্রির লভ্যাংশে অনাথ আশ্রমের উন্নয়ন।
advertisement
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ আর্সেনিক কবলিত পূর্বস্থলী এলাকার খাল বিল-সহ ভূপৃষ্ঠের জল বাঁচানোর আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।  গত মাসেই তিনি ফতুয়া পরে মাথায় গামছা বেঁধে জলাশয় থেকে কাটা মাটি মাথায় করে বয়েছেন। বাঁশদহ বিলে সকলের সঙ্গে কোমর সমান জলে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে পানা পরিষ্কার করেছেন। কলকাতা বর্ধমান যাওয়ার পথে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের মুখে মাস্ক বেঁধে দিয়েছেন। কখনও জেলাশাসকের অফিসে অংশ নিয়েছেন উন্নয়ন বৈঠকে, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ ভবনে গিয়ে পঞ্চায়েতে পড়ে থাকা উন্নয়নের টাকা কিভাবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে খরচ করতে হবে সে ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন। মোটকথা, করোনার সংক্রমণের আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে অনেক নেতাই ঘরে থাকলেও নিজেকে গৃহবন্দি করে রাখেননি কোনওদিনই।
advertisement
সেজন্যই তাঁকে করোনা আক্রান্ত হতে হল বলেই মনে করছেন তাঁর কাছের মানুষরা। তাঁরা বলছেন, ব্লাড সুগারের সমস্যা মন্ত্রীকে ইদানিং বারেবারেই ভোগায়। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আগেও তাঁকে কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। তাই বাড়তি সাবধানতা প্রয়োজন বলে বারেবারেই তাঁকে সাবধান করেছেন ঘনিষ্ঠরা। কিন্তু বয়সে প্রবীণ হলে কী হবে  মনে যে তারুণ্য ষোল আনা। তাই চার দেওয়ালের মধ্যে নিজেকে আটকে রাখেননি কোনওদিন। পাইলট কার আসেনি, তাই পুলিশ ভ্যানে চড়ে ঘর ছেড়েছেন এমনটাও ঘটেছে অনেকবার।
advertisement
সোমবার তিনি কলকাতায় করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা জমা দেন। ওই দিন রাতেই তিনি করোনা পজিটিভ বলে রিপোর্ট আসে। মঙ্গলবার সকালে কলকাতার ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে তাঁকে বেলেঘাটা আইডিতে স্থানান্তরিত করা হয়। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানান, স্বপ বাবু ভাল আছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
করোনা যুদ্ধে সর্বদা ছিলেন সামনে, এ বার নিজেই আক্রান্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মন খারাপ বর্ধমানের
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement