#নয়াদিল্লি: লকডাউনের মধ্যেই দেশে কাজ হারিয়েছেন প্রায় ১৪ কোটি মানুষ। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি বা CMIE-এর সম্প্রতি সমিক্ষায় উঠে এসেছে এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য। লকডাউনের জেরে দেশের অর্থনীতির চাকা থমকে। দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের টাকা ফুরোচ্ছে। ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চিত চাকরিজীবীরাও। এরই মধ্যে CMIE-এর সমীক্ষা, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ছুঁয়েছে প্রায় ২৬. ২ শতাংশ।
ফেব্রুয়ারিতে কর্মসংস্থান ৪০ শতাংশ থেকে এক ধাক্কায় এপ্রিলে নেমে হয়েছে ২৬ শতাংশ। করোনা সংকটে লকডাউন ঘোষণার পরই চাকরি ছাঁটাই ও বেতন না কাটার আবেদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু, তারপরও যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ হারানোর ঘটনা ঘটছে তা এই তথ্যেই পরিস্কার। গ্রামে বেকারত্ব বেড়ে হয়েছে ২৬.৭ শতাংশ। তবে শহরাঞ্চলে কাজ হারানোর হার গ্রামের তুলনায় কিছুটা কম, প্রায় ২৫.১ শতাংশ। CMIE জানিয়েছে, ২০১৬-তে নোটবাতিলের পর এবারই প্রথম দেশে বেকারত্বের হার সীমা ছাড়াল। ভবিষ্যত আরও কঠিন সময় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
- লকডাউনে দেশে কাজহারা ১৪ কোটি মানুষ - এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৬.২% - দেশে কর্মসংস্থান কমে হয়েছে ২৬.১% - গ্রামে বেকারত্ব বেড়ে ২৬.৭% - শহরাঞ্চলে কর্মহীন ২৫.১%
লকডাউন পর্বে কাজ হারালেন ১৪ কোটি মানুষ, জানাল সমীক্ষা ৷ আশঙ্কার পারদ চড়ছিল। নাড়ির গতি বাড়ছিল এটা ভেবে যে, অর্থনীতির ঝিমুনির জেরে আগেই মাথা তোলা বেকারত্বকে আর্থিক কাজ-কারবার থমকে থাকার ধাক্কা আরও কতটা উপরে ঠেলে দেবে! নিশ্চিহ্ন হবে আরও কত চাকরি। এই অবস্থায় উপদেষ্টা সংস্থা CMIE-র সমীক্ষা জানাল, গত ১৯ এপ্রিল শেষ হওয়া এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ছুঁয়ে ফেলেছে ২৬.২%। কর্মসংস্থান ফেব্রুয়ারির ৪০% থেকে এক ধাক্কায় নেমেছে ২৬ শতাংশে। CMIE-র দাবি, এপ্রিলের এই ক’দিনে কর্মসংস্থানের হার ১৪ শতাংশ বিন্দু কমা অভূতপূর্ব ঘটনা। যার অর্থ, লকডাউনে দেশের ১৪ কোটি মানুষ কাজ খুইয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, করোনার সঙ্গে লড়াই করতে লকডাউন ছাড়া পথ নেই। কিন্তু সকলেরই চিন্তা, লকডাউনের চার সপ্তাহ কাটতে না-কাটতেই কাজের বাজারের ছবিটা যে রকম ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে, এই পর্ব শেষ হওয়ার পরে না-জানি তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে! গ্রাম এবং শহর, কর্মহীনতা বেড়েছে সর্বত্র। তবে বেকারত্বের কামড় গ্রামে বেশি তীব্র।
করোনা-সঙ্কট যোঝার এই কঠিন সময়ে কাউকে ছাঁটাই না-করার আর্জি জানিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন বেতন ছাঁটাই না-করার কথাও। এ বিষয়ে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের আওতায় নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। তবে প্রায় সবক’টি সর্ব ভারতীয় ট্রেড ইউনিয়নের দাবি, লকডাউন শুরুর পর থেকেই কর্মী ছাঁটাইয়ের বিপুল সংখ্যক অভিযোগ আসছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী, শ্রমমন্ত্রীর পরে এ বার বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীকে চিঠি দিয়েছে তারা।
• দেশে বেকারত্বের হার এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে বেড়ে ২৬.২% • কর্মসংস্থান কমে ২৬.১%। লকডাউনে এখনও পর্যন্ত খোয়া গিয়েছে ১৪ কোটি মানুষের কাজ • গ্রামে বেকারত্ব বেড়ে ২৬.৭% • শহরাঞ্চলে কর্মহীনতার হার গ্রামের থেকে একটু কম, ২৫.১%
চিঠিতে চেন্নাই বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজ সামলানো এক সংস্থায় কর্মীদের ঠিকঠাক বেতন না-পাওয়া নিয়ে সরব হয়েছে এআইটিইউসি। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরের অভিযোগ, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পুরোদমে কর্মী ছাঁটছে বহু সংস্থা। সিটুর প্রশ্ন, সরকার নির্দেশিকা জারির পরে কেন তা কার্যকর করছে না? ছাঁটাইয়ের কথা মেনেছে সঙ্ঘের কর্মী সংগঠন বিএমএস-ও।
যদিও শিল্প, বিশেষত ছোট-মাঝারি শিল্পের প্রশ্ন, সরকার কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে না-হাঁটার কথা বলেছে ঠিকই। কিন্তু এই প্রবল সঙ্কটে ছোট শিল্প কোন রসদে বেঁচে থাকবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। লকডাউনে মাস গড়িয়ে যাওয়ার পরেও ত্রাণ প্রকল্প এখনও অধরা।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।