করোনা হিরো, ময়দানের মুখ, মধ্য কলকাতার মসিহা ইস্তিয়াক রাজু

Last Updated:

মধ্য কলকাতার দিন-আনা, দিন-খাওয়া মানুষগুলোর এখন মসিহা ১০/১ তালবাগান লেনের পার্ক ইন হোটেল।

#কলকাতা: মধ্য কলকাতার দিলখুশা স্ট্রিটের ইমতিয়াজ। পেশায় রং মিস্ত্রি। লকডাউনে কাজ বন্ধ। রোজগার শূন্য। মসিহা পার্ক সার্কাসের ১০/১ তালবাগান লেন। পার্ক সার্কাস রেলবস্তির সাবিনা বেগম। অন্যের বাড়িতে কাজ করে দিন গুজরান। লকডাউন শুরু হওয়ার পর ঘরবন্দি। রোজগার নেই। মাসিহা পার্কসার্কাসের ১০/১ তালবাগান লেন।
মধ্য কলকাতার দিন-আনা, দিন-খাওয়া মানুষগুলোর এখন মসিহা ১০/১ তালবাগান লেনের পার্ক ইন হোটেল। মহমেডান ক্লাবের সহ-সচিব ও এলাকার চেনা সমাজসেবী ইস্তিয়াক আহমেদ রাজুর ঠিকানা। করোনা বিপন্ন শহরে গরিবের ভরসা। গত ২৩ মার্চ থেকে এভাবেই নিজের সব ব্যস্ততা, সব কাজ ভুলে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর সেবায় নেমে পড়েছেন ময়দানের রাজু। মহমেডান ক্লাবের সহ-সচিব।
advertisement
বছরের অন্য সময়ের তুলনায় ব্যস্ততা এখন হাজার গুণ বেড়ে গেছে ফুটবলপাগল মানুষটার। সকালে ঘুম থেকে উঠেই বেরিয়ে পড়ছেন এলাকার মানুষের খোঁজ নিতে, পাশে থাকতে। পার্কসার্কাস  অঞ্চলে নিজের হোটেল পার্ক ইন-কে বদলে দিয়েছেন ত্রাণের দফতরে। হোটেলের মস্ত লবি এখন চাল, ডাল, আটার মজুতঘর। হোটেলের রুম ছেড়ে দেওয়া হয়েছে স্হানীয় ইসলামিয়া হাসপাতালের চিকিৎসকদের জন‍্য। হোটেলের কন্ট্রোলরুমে বসেই চলছে পাড়া ভিত্তিক অসহায় মানুষ গুলোর তালিকা তৈরীর কাজ। তারপর বেলা গড়াতেই ভ্যানগাড়িতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব।
advertisement
advertisement
পার্কসার্কাস ট্রাম ডিপোর কাছে নিজস্ব নাফিল রেস্তোরাঁ বন্ধ করে সেখানে চলছে রান্নার কাজ। প্রতিদিন দুপুরে সেই রান্না করা খাবার পৌঁছে যাচ্ছে মেহেন্দিবাগান, দরগা রোড, দিলখুশা স্ট্রিটের মতো মধ্য কলকাতার কোণায় কোণায়। থাকছে বাচ্চাদের জন‍্য দুধ। অসূস্হদের জন‍্য ওষুধ। পড়ন্ত বিকেলে ফুটবল মাঠের চেনামুখ রাজুকে যখন ধরা গেল, নিজের হোটেলে ত্রাণশিবিরে দপ্তরে বসে রাজু তখন পরের দিনের তালিকা তৈরীর কাজে ব্যস্ত। মাঠ ভুলে এখন কী তাহলে সারাদিন সমাজসেবা? ঠোঁটের কোণায় ঝুলতে থাকা চেনা হাসিটা ধরে রেখেই রাজুর উত্তর,"মাঠ তো সারাজীবন করব। ফুটবল তো আছেই! কিন্তু এই সময়টা অসহায় মানুষগুলোর পাশে না থাকলে বড় অপরাধী মনে হবে নিজেকে! জানেন, পার্কসার্কাস অঞ্চলের কত কত দরিদ্র পরিবার দুপুরবেলায় আমরা খাবার পৌঁছে দেবো, সেই অপেক্ষায় বসে থাকে! কতদিন পারব জানিনা! তবে যতটা সাধ্য, সবটা দিয়ে মানুষের পাশে থাকতে চাই।"কথা বলতে বলতেই মজুত  ত্রাণ সামগ্রীর হিসেবে লেগে পড়েন ময়দানে খাঁটি ভদ্রলোক বলে পরিচিত ইস্তিয়াক আহমেদ ওরফে রাজু।
advertisement
একটা সময় ছিল যখন ফুটবলে দলবদলের সময়ে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের সঙ্গে টক্কর নিতে মহমেডান সমর্থকরা তাকিয়ে থাকতেন ক্লাবের ফুটবল সচিব রাজুর দিকে। সময় বদলেছে। রাজু এখন মহমেডানের পাশাপাশি মধ্য কলকাতার অসহায় মুখগুলোর আশা-ভরসা-মসিহা।"মানবিক হয়ে ওঠার এই শিক্ষা তো মাঠ থেকেই পেয়েছি।" ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বেরিয়ে পড়েন রাজু। তার অপেক্ষায় যে দিলখুশা স্ট্রিট কড়েয়া রোডের হাজার হাজার নিরন্ন পরিবার। আমাদেরও এবার ফেরার পালা। মনের মধ্যে গুনগুনিয়ে উঠল শাহরুখের কেরিয়রের প্রথম দিকের হিট সিনেমার সুপারহিট গানটা। 'আপনা রাজু হিরো হ‍্যায় অর হাম রাজু কা ফ‍্যান...!'
advertisement
PARADIP GHOSH
view comments
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
করোনা হিরো, ময়দানের মুখ, মধ্য কলকাতার মসিহা ইস্তিয়াক রাজু
Next Article
advertisement
২০২৭ সালে জনগণনা! সমীক্ষা শুরু '২৬ থেকেই! মোবাইল অ্যাপ দিয়ে কী ভাবে করবেন? জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
২০২৭ সালে জনগণনা! সমীক্ষা শুরু '২৬ থেকেই! মোবাইল অ্যাপ দিয়ে কী ভাবে করবেন?
  • ২০২৭ সালের জনগণনা দুই দফায় হবে, মোবাইল অ্যাপ ও স্ব-অন্তর্ভুক্তিকরণ পদ্ধতিতে পরিচালিত হবে.

  • প্রথম ধাপ হাউস লিস্টিং ও হাউসিং সেনসাস, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৬-এর মধ্যে সম্পন্ন হবে.

  • দ্বিতীয় ধাপ পপুলেশন এনুমারেশন, ফেব্রুয়ারি ২০২৭-এ অনুষ্ঠিত হবে, জাতি ভিত্তিক গণনাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে.

VIEW MORE
advertisement
advertisement