বর-কনের মুখে মাস্ক, অসুস্থ বাবার কথা রাখতে চারহাত এক হল লকডাউন উঠতেই
- Published by:Arka Deb
Last Updated:
দেবব্রতর বাবা নারায়ণ দাস অসুস্থ, ছেলের বৌয়ের মুখ দেখে যেতে চান তিনি। তাই লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই সংক্রমণ প্রতিরোধের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে মঙ্গলবার রাতে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হল ত্রিজা আর দেবব্রতর।
রায়গঞ্জ: লকডাউন জারি হয়েছিল করোনার বিরুদ্ধে লড়তে। বন্ধ হয়েছিল অনুষ্ঠান, সভা সমাবেশ। ১ জুন থেএকে ওয়ান চালু হতে শুরু বিয়ের সামাজিক অনুষ্ঠান। তাই ওঁরা বাধা পড়লেন দাম্পত্যের বন্ধনে। তবে সরকারি নির্দেশ মেনেই মুখে মাস্ক, রয়েছে সামাজিক দূরত্ব, আবার ছাদনাতলাকে লাল ফিতে দিয়ে ব্যারিকেড করে করোনা আবহে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন নবদম্পতি।
পাত্র পক্ষের ১৫ জন ও পাত্রী পক্ষের ১০ জন এই মোট নিমন্ত্রিত অতিথি আত্মীয়স্বজন নিয়ে রায়গঞ্জ শহরের একটি ভবনে শুভ পরিণয়ের আসর বসল। মন খারাপ পাত্রীর মায়ের, একমাত্র মেয়ের বিয়ে এভাবেই সারতে হল। তবে করোনা আবহে নিজে সুস্থ থেকে অন্যদের সুস্থ রাখাই ছিল দুই পরিবারের একমাত্র লক্ষ্য। মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাল ফিতের ঘেরাটোপে বসে বিয়ে করতে বসার এক নতুন অভিজ্ঞতা বলে মন্তব্য নবদম্পতির।
advertisement
মালা বদল থেকে শুভদৃষ্টি, হাতবন্ধন থেকে সাতপাকে বাঁধা সবই হয়েছে নিয়ম মেনে। কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল করোনা বিধি মানা। আর তাই বর কনে থেকে দুপক্ষের মোট মাত্র ২৫ জন নিমন্ত্রিত সকলের মুখেই ছিল মাস্ক। বর কনের পাশাপাশি পুরোহিত মশাইও বিবাহের মন্ত্রোপাঠ করিয়েছেন মাস্ক মুখে পড়েই।
advertisement
গত ফাল্গুন মাসেই বিয়ের দিন ধার্য হয়েছিল রায়গঞ্জের উদয়পুরের বাসিন্দা স্বাস্থ্যকর্মী দেবব্রত দেবনাথের সাথে বীরনগরের গোলপুকুরের বাসিন্দা ত্রিজা দাসের। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে শুরু হয়ে গেল লকডাউন। আটকে গেল দেবব্রত আর ত্রিজার নতুনভাবে জীবন গড়ার প্রবেশদ্বার। এদিকে পাত্র দেবব্রতর বাবা নারায়ণ দাস অসুস্থ, ছেলের বৌয়ের মুখ দেখে যেতে চান তিনি। তাই লকডাউন কিছুটা শিথিল হতেই সংক্রমণ প্রতিরোধের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে মঙ্গলবার রাতে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হল ত্রিজা আর দেবব্রতর।
advertisement
পাত্রীর মা শর্মিষ্ঠা দেবীর আক্ষেপ একমাত্র মেয়ের বিয়ে খুব ধূমধাম করে দেবেন বলেই গত ফাল্গুন মাসে বিয়ের দিন স্থির ছিল। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব পাড়া প্রতিবেশী মিলে প্রায় পাঁচশো জনকে নেমন্তন্নও করা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভয়াবহ এই করোনা তাঁর সমস্ত সাধ ও স্বপ্নে বাধা হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে পড়েছে। এভাবে মেয়ের বিয়ে দিতে মন খারাপ লাগছে ঠিকই তবে এই পরিস্থিতিতে নিজেরা সুস্থ থেকে অন্যদের সুস্থ রাখাটাই তাঁর কাছে বড় কর্তব্য বলে মনে হয়েছে।
Location :
First Published :
June 17, 2020 6:45 PM IST