নতুন বছরে ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছে? রইল কিছু জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার সুলুকসন্ধান

Last Updated:

একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে ফ্র্যাঞ্চাইজি এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে যে কোনও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অধিকার প্রাপ্ত হতে পারেন যে কেউ।

জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার সুলুকসন্ধান (প্রতীকী ছবি)
জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার সুলুকসন্ধান (প্রতীকী ছবি)
#কলকাতা: বিভিন্ন সংস্থা ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেল খুবই পছন্দ করে। আসলে নিজেদের ব্যবসা স্থানীয় ভাবে চালানোর জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর ফ্র্যাঞ্চাইজি নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগও তৈরি করে। কিছু নিয়ম-কানুনের আওতায় কেউ একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে ফ্র্যাঞ্চাইজি এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে যে কোনও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অধিকার প্রাপ্ত হতে পারেন যে কেউ। তবে সব কিছুরই তো ভাল-খারাপ দিক রয়েছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার সুবিধা
মার্কেটিং করার তেমন ঝামেলা নেই। কারণ পেরেন্ট কোম্পানিই সেটা করে দেবে। সাফল্যের সম্ভাবনা দুর্দান্ত। ব্যর্থতার ঝুঁকি প্রায় নেই বললেই চলে। অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় বিনিয়োগের পরিমাণটাও বেশ কম। জিনিসপত্র এবং কাঁচামালের সরবরাহ চাহিদা অনুযায়ী হয়।
advertisement
advertisement
ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসা কোন কোন জায়গায় সীমাবদ্ধ
পেরেন্ট কোম্পানি ব্যবসাটাকে মজবুত ভাবে ধরে রাখে। অর্থাৎ কী থাকবে আর কী থাকবে না, সেই সিদ্ধান্তটাও তাঁদেরই। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে কোনও রিটেল স্টোর চালালে সেখানে কোনও ব্র্যান্ডকে যোগ করতে পারা যাবে না। আবার ব্যবসা থেকে পাওয়া লাভের অংশ খানিকটা দিতে হয় মূল সংস্থা বা পেরেন্ট কোম্পানিকে।
advertisement
আমূল:
ভারতে সব থেকে সফল এবং পরিচিত সংস্থা হল আমূল। এটা আসলে একটা কো-অপারেটিভ সোসাইটি, যা তৈরি হয়েছিল সেই ১৯৪৬ সালে ত্রিভুবনদাস প্যাটলের হাত ধরে। এর সদর দফতর রয়েছে গুজরাতের আনন্দে। আর এই সংস্থার সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ। আমূল নানা ধরনের খাদ্য দ্রব্য বিক্রি করে। যার মধ্যে অন্যতম হল দুধ, মাখন, ঘি, চিজ, আইসক্রিম, চকোলেট ইত্যাদি। নিজস্ব ব্র্যান্ডের আওতায় এরা খাদ্য দ্রব্য বিক্রয় করে থাকে। যা বাজারের সঙ্গে ভাল ভাবে যুক্ত। সারা দেশ জুড়েই এই সংস্থা নিজেদের ব্যবসা বাড়াতে ফ্র্যাঞ্চাইজি নেটওয়ার্ক খুলতে চাইছে।
advertisement
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৫ - ১০ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৩০০ - ৭০০ বর্গফুট
ডমিনোজ পিৎজা:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পিৎজার দোকানের চেন হল ডমিনোজ পিৎজা। যা প্রথম তৈরি হয়েছিল ১৯৬০ সালে মিশিগানের অ্যান আর্বারে। প্রায় ৭০টি দেশে পাঁচ হাজারেরও বেশি ডমিনোজ পিৎজা আউটলেট রয়েছে। ১৯৯৬ সাল থেকে এরা ভারতে প্রথম ব্যবসা শুরু করে। আর বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি আউটলেট রয়েছে গোটা দেশ জুড়ে। সেই ব্যবসা ফ্রাঞ্চাইজির মাধ্যমেই আরও সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে ওই সংস্থা।
advertisement
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ১০ - ১২ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৫০০ - ৮০০ বর্গফুট
কেএফসি:
লোভনীয় ও সুস্বাদু ক্রিস্পি ফ্রায়েড চিকেনই এখানকার মূল আকর্ষণ। ১৯৩০ সালে মার্কিন মুলুকে প্রথম ফাস্ট-ফুড রেস্তোরাঁ চেন শুরু করে কেএফসি। কেনটাকির ল্যুইভিলে রয়েছে শুরু হয় প্রথম ব্যবসা। এর পরে তা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ১৪০টি দেশে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি অংশে ছড়িয়ে গিয়েছে কেএফসি-র ব্যবসা। আর ভারতে ১৯৯৫ সালে ব্যবসা শুরু করার পর থেকে এখনও পর্যন্ত চারশোরও বেশি স্টোর খুলেছে সংস্থাটি। এমনকী তারা ফ্র্যাঞ্চাইজিও বাড়াতে চাইছে এই দেশে।
advertisement
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ১৫ - ১৮ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৫০০ - ১২০০ বর্গফুট
ভদিলাল আইসক্রিম:
ভারতীয় আইসক্রিম প্রস্তুতকারী এই সংস্থা ১৯০৭ সালে পথ চলা শুরু করেছিল গুজরাত থেকে। আর আজকের দিনে দাঁড়িয়ে দেশের প্রধান শহরগুলিতে ছড়িয়ে পড়েছে এদের আউটলেট। রয়েছে ৫০০ ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটর। ভদিলালে গ্রাহকরা পাবেন প্রায় ২০০ ধরনের আইসক্রিমের মধ্যে থেকে নিজেদের পছন্দসই আইসক্রিম বেছে নেওয়ার সুযোগ। সুপারমার্কেটই হোক কিংবা ফ্রি-স্ট্যান্ডিং স্টোর - সব জায়গাতেই পাওয়া যায় এই সংস্থার আইসক্রিম। ভদিলালের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে শহরে গড়ে তোলা যেতে পারে আইসক্রিম পার্লার। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি হতে হবে ব্যস্ত এলাকায়। যোগ্য কর্মী রাখতে হবে। প্রাথমিক তিন বছর পরে ফ্রাঞ্চাইজি চুক্তি রিনিউ করা হবে। এর সদর দফতর গুজরাতের আহমেদাবাদে।
advertisement
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৫ - ১০ লক্ষ টাকা
পতঞ্জলি:
আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে আয়ুর্বেদ বিজ্ঞানও। তার জন্যই বাবা রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণের হাত ধরে শুরু হয়েছিল ভারতীয় এফএমসিজি ফার্ম পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ লিমিটেড। মোট ৪৫টি ক্যাটাগরিতে রয়েছে প্রায় ৫০০ ধরনের প্রোডাক্ট। পাঁচশোরও বেশি আয়ুর্বেদিক ফার্মেসি, ১০ হাজারেরও বেশি কৃষক এবং ৬ হাজার আয়ুর্বেদ চিকিৎসক এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এমনকী সারা বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশেও নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে পতঞ্জলি। সেই সঙ্গে দেশেও ফ্র্যাঞ্চাইজি নেটওয়ার্কও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এদের।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৫ - ৭ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৫০০ - ৭০০ বর্গফুট
জাভেদ হাবিব হেয়ার অ্যান্ড বিউটি ফ্র্যাঞ্চাইজি:
দেশে প্রায় সাতশোটিরও বেশি জায়গায় হেয়ার অ্যান্ড বিউটি সালঁ চেন গড়ে তুলেছে এই সংস্থাটি। ১৯৯৬ সালে যা শুরু করেছিলেন জাভেদ হাবিব। নেল, স্কিন এবং হেয়ার কেয়ার-সহ নানা পরিষেবা প্রদান করা হয় এখানে। ফলে এরা দেশ জুড়ে আরও ফ্র্যাঞ্চাইজি বাড়াতে চাইছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ১০ - ১২ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৮০০ - ১০০০ বর্গফুট
ডেলিভারি:
২০১১ সালে ব্যবসা শুরু করেছিল এই সংস্থা। এক দশকের মধ্যেই লজিস্টিক লিডার ব্লুডার্ট এবং গতি লিমিটেডের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে ডেলিভারি। গ্রাহকদের মধ্যে ভালই জনপ্রিয় এই সংস্থা। এই ফ্র্যাঞ্জাইজি শুরু করার জন্য খুবই স্বল্প পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হয়।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ২ - ৫ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৪০০ - ৫০০ বর্গফুট
ল্যাকমে:
ভারতের অন্যতম সেরা বিউটি ব্র্যান্ড হল ল্যাকমে। এই সংস্থার ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া যায়। ল্যাকমে সালঁ নিরাপদ এবং দারুণ মাধ্যম। সংস্থার ব্যবসায়িক নীতির সঙ্গে সহমত পোষণ করলে ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার জন্য আবেদন জমা করা যেতে পারে। এই ব্যবসায় দারুন উন্নতির সুযোগও রয়েছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৫০ - ৬০ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৯০০ বর্গফুট
কল্যাণ জুয়েলার্স:
টি.এস. কল্যাণারমনের রয়েছে ৪৫ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা। ১৯৯৩ সালে তিনি কল্যাণ জুয়েলার্স প্রতিষ্ঠা করেন। কোম্পানির বিশেষত্ব হল সোনা এবং হিরে খচিত সোনার গয়না প্রস্তুত করা। ২১টি ভারতীয় রাজ্যে রয়েছে এঁদের গহনা বিপণী। এখানেই শেষ নয়, পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতেও রয়েছে কল্যাণ জুয়েলার্সের ৩০টি শো-রুম। ২০২১ অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে এই গহনা প্রস্তুতকারী সংস্থার মুনাফা বেড়ে হয়েছিল ৫৪.০৫ শতাংশ। যার ফলে বোঝাই যাচ্ছে যে, এই সংস্থার একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি নিলে বেশ ভাল ভাবেই ব্যবসা চালানো যাবে। তবে হ্যাঁ কল্যাণ জুয়েলার্সের শো-রুম কেনার জন্য প্রয়োজন মজবুত আর্থিক অবস্থা এবং ১০ বছর ধরে ব্যবসা করার অভিজ্ঞতাও।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৫০ লক্ষ - ১ কোটি টাকা
জায়গা: ১০০ - ১৫০০ বর্গফুট
ডা. লাল পাথল্যাবস:
প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতের ডায়াগনস্টিক হেলথকেয়ার চেন চালাচ্ছে ডা. লাল পাথল্যাবস। এখানে অঙ্কোলজি, নিউট্রিশন, জেনেটিক্স, বায়োফিজিক্স, ফ্লো সাইটোমেট্রি এবং সাইটোজেনেটিকস ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত ১৬৫০ ধরনের টেস্ট করানোর সুযোগ রয়েছে। টেস্ট এবং রিপোর্ট সব কিছুই হয় এখানে। এর ফ্র্যাঞ্চাইজি নিতে গেলে প্রয়োজন হবে গ্রাউন্ড ফ্লোরের কোনও ঘর। ফ্রাঞ্চাইজিকে রয়্যালটি অথবা কমিশনের ২৫ - ৩০ শতাংশ প্রদান করতে হবে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ৩ - ৫ লক্ষ টাকা
জায়গা: ৩৫০০+ বর্গফুট
ফার্স্ট ক্রাই:
সদ্যোজাত এবং কচিকাঁচাদের জন্য অনলাইনে কম্পিটিটিভ দামে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করে এই সংস্থাটি। ২০১০ সালে মাহিন্দ্রা গ্রুপ অফ কোম্পানিজ ফার্স্ট ক্রাই প্রতিষ্ঠা করে। অবশ্য এর এক বছর পর থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি বিতরণ শুরু করে এরা। বর্তমানে এশিয়ার সব থেকে বড় বাচ্চাদের সামগ্রীর বিক্রেতা সংস্থা এরা। ফার্স্ট ক্রাইয়ের আওতায় রয়েছে ২ হাজারেরও বেশি নামীদামি ব্র্যান্ড। এই স্টোর অপারেট করার জন্য থাকতে হবে দুর্দান্ত দক্ষতা। ফ্র্যাঞ্চাইজির স্টোরগুলোয় এমন কর্মী রাখতে হবে, যেখানে অভিভাবকদের চাহিদা পূরণ হয়।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ২০ - ৩০ লক্ষ টাকা
জায়গা: ১০০০ - ২০০০ বর্গফুট
ডিটিডিসি ক্যুরিয়র সার্ভিস:
ভারতের জনপ্রিয় এবং অতি পরিচিত ক্যুরিয়র পরিষেবাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ডিটিডিসি। এর মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নানা জিনিসপত্র এবং প্রয়োজনীয় নথি ডেলিভার করা হয়ে থাকে। ১৯৯০ সালে বেঙ্গালুরুতেই প্রথম ব্যবসা শুরু করেছিল ডিটিডিসি। সারা দেশ জুড়ে প্রায় এক হাজারেরও বেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লোকেশন রয়েছে।
ফ্র্যাঞ্চাইজি শুরু করার জন্য প্রয়োজন:
বিনিয়োগ: ১০ - ১২ লক্ষ টাকা
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
নতুন বছরে ব্যবসা শুরু করার ইচ্ছে? রইল কিছু জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি ব্যবসার সুলুকসন্ধান
Next Article
advertisement
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', অসমের জনসভায় বললেন মোদি, তাঁর 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? চিনিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী!
'আমি শিবভক্ত, সব বিষ গিলে নিই...', 'রিমোট কন্ট্রোল' কে? অসমের জনসভায় চিনিয়ে দিলেন মোদি
  • অসমের জনসভায় কংগ্রেসকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • মোদি বলেন, জনগণই তাঁর আসল প্রভু এবং তাঁর ও ‘রিমোট কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রক’

  • অসমের দরং ও গোলাঘাটে ১৮,৫৩০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন

VIEW MORE
advertisement
advertisement