শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান উপার্জিত অর্থ! আগে ভাল করে জেনে নিন এই বিষয়গুলি
- Published by:Arjun Neogi
- news18 bangla
- Written by:Trending Desk
Last Updated:
শেয়ার বাজারে উল্লিখিত স্টকের চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে একটি স্টকের দাম নির্ধারিত হয়।
#কলকাতা: শেয়ার বাজারে সব সময় ওঠাপড়া লেগেই থাকে। তবু একেই বিনিয়োগের একটি সেরা মাধ্যম বলে মনে করা হয়। কারণ এখানে বিনিয়োগকারীরা সব থেকে বেশি রিটার্ন পেয়ে থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকি কম হলেও তা কখনই ব্যাঙ্কের ফিক্সড ডিপোজিটের মতো নিরাপদ নয়। পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগে মোটা টাকা রিটার্ন মিলতে পারে। ফলে ঝুঁকির মোকাবিলা করা দরকার, আর এটিই বিনিয়োগকারীদের প্রধান কাজ। কেমন ঝুঁকি থাকতে পারে, এড়িয়ে চলার পথই বা কী। দেখে নেওয়া যাক এক নজরে।
#১ বাজারগত ঝুঁকি -
শেয়ার বাজারে উল্লিখিত স্টকের চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে একটি স্টকের দাম নির্ধারিত হয়। অতএব, এটি প্রতিদিন এবং এমনকী দিনের মধ্যেও ওঠানামা করতে পারে। বিনিয়োগকারীকে কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশের মাধ্যমে বা উচ্চ মূল্যে তা বিক্রি করে লাভ অর্জন করতে হবে। যদি কেউ শেয়ারের দাম কম থাকাকালীন স্টক বিক্রি করতে বাধ্য হন, তা হলে তার লোকসান। এটি হল বাজারগত ঝুঁকি।
advertisement
advertisement
#২ কোম্পানির ঝুঁকি -
একটি শেয়ার হল কোম্পানির মালিকানার একটি অংশ। কোম্পানি যদি ব্যবসায় সমস্যার সম্মুখীন হয়, তা হলে শেয়ারের দাম কমতে পারে। বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীই কোম্পানির স্টকে বিনিয়োগ করার আগে, কোম্পানির আর্থিক ও ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করে নেন।
#৩ লিকুইডিটি ঝুঁকি -
advertisement
যে হেতু লভ্যাংশ স্টকগুলিতে নিয়মিত আয়ের একটি ভাল উৎস, তাই কোম্পানির স্বচ্ছলতা বা লিকুইডিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিকুইডিটি সমস্যা থাকলে কোনও কোম্পানি লভ্যাংশ কমাতে পারে বা আরও খারাপ হতে পারে। তার পক্ষে ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হতে পারে। এতে কোম্পানির শেয়ারের দামের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
#৪ কর যোগ্যতার ঝুঁকি -
advertisement
সরকার অর্থনীতির প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে করের নিয়ম পরিবর্তন করে চলেছে। বিনিয়োগকারীরা যে খাতে বিনিয়োগ করেছেন তা যদি এই ধরনের কোনও রাজস্ব আইনের দ্বারা বিরূপভাবে প্রভাবিত হয়, তা হলে স্টকের দাম অল্প সময়ের মধ্যেই পড়ে যেতে পারে।
#৫ সুদের হারের ঝুঁকি -
অর্থনীতি যে দিকে যাচ্ছে তার উপর ভিত্তি করে সরকার আমানত ও ঋণের সুদের হারও পরিবর্তন করে। তাই, যদি সুদের হার বৃদ্ধি পায়, কোম্পানিগুলি উচ্চ হারে ঋণ পায় যা তাদের মুনাফা হ্রাস করতে পারে এবং স্টক মূল্যকে প্রভাবিত করতে পারে। অন্যদিকে, যদি সুদের হার খুব কম হয়, তবে এটি অর্থনীতিতে মন্দার ইঙ্গিত দেয় এবং ব্যবসাগুলিও ক্ষতির সম্মুখীন হয়। সুতরাং বলা যায় সুষম হারের শাসন স্টক মার্কেটের জন্য স্বাস্থ্যকর।
advertisement
#৬ নিয়ন্ত্রক ঝুঁকি -
অনেক ক্ষেত্রই নিয়ন্ত্রক সংস্থার হাতে থাকে। যেমন ফার্মাসিউটিক্যালস, তামাক, টেলিকমিউনিকেশন ইত্যাদি। নিয়ন্ত্রক দ্বারা করা যে কোনও পরিবর্তন মূল্য হ্রাসের কারণ সেক্টরের সমস্ত কোম্পানির ব্যবসাকে প্রভাবিত করতে পারে।
#৭ মুদ্রাস্ফীতি -
মূল্যস্ফীতি হল পণ্য মূল্যের সামগ্রিক বৃদ্ধি। মূল্যস্ফীতির হার বাড়লে কোম্পানিগুলোকে একই পরিমাণ কাঁচামাল সংগ্রহ করতে বেশি খরচ করতে হয়। মূল্যস্ফীতির হারে আকস্মিক বৃদ্ধি কোম্পানিগুলির মুনাফাকে প্রভাবিত করতে পারে। যার ফলে শেয়ারের দাম কমে যায়।
advertisement
এ ছাড়াও রয়েছে রাজনৈতিক ঝুঁকি, সামাজিক ঝুঁকি, মুদ্রাগত ঝুঁকি ইত্যাদি।
অতএব শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা নিরাপদ কিনা, তা নির্ভর করে বিনিয়োগকারীরা কী ভাবে এই ঝুঁকিগুলি পরিচালনা করবেন তার উপর। শেয়ার বাজারের এই ঝুঁকি পরিচালনা করার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় রয়েছে—
#১ বৈচিত্র্য -
বিনিয়োগকারী যদি নিজের বিরাট অঙ্কের টাকা একটি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করেন এবং সেই ক্ষেত্রটি কখনও কঠিন সময়ের সম্মুখীন হয়, তা হলে বিশাল ক্ষতির আশঙ্কা থাকে হতে পারে। অতএব, একাধিক স্টকে বিনিয়োগ করাই ভাল। যাতে একটি অংশে ক্ষতি হলেও অন্যটি যেন তার ধাক্কায় পড়ে না যায়।
advertisement
#২ বিনিয়োগের আগে গবেষণা -
যে কোনও শেয়ারে বিনিয়োগের আগে ওই কোম্পানি সম্পর্কে ভাল ভাবে গবেষণা করে নেওয়া দরকার। এটিও ঝুঁকি মোকাবিলা করার একটি ভাল উপায়।
#৩ বিনিয়োগে আবেগ নয় -
বর্তমানে প্রায় প্রতিটি নিউজ চ্যানেল, ব্লগ, অনলাইন নিবন্ধে শেয়ার বাজার সংক্রান্ত প্রচুর তথ্য থাকে। প্রায় সকলেই 'বিশেষজ্ঞ' এবং তাদের দাবি, তারা বিশাল টাকা অর্জনে সহায়তা করবে। কিন্তু সঠিক গবেষণা ছাড়া বিনিয়োগ করলে ফল খারাপ হতে বাধ্য।
#৪ বিনিয়োগে নজরদারি -
শেয়ার বাজার অস্থির। তাই, স্টকগুলির একটি পোর্টফোলিও তৈরি করে রাখা প্রয়োজন। কারণ এমন সময় আসতে পারে যখন নির্দিষ্ট স্টক বিক্রি করতে হবে এবং কিছু নতুন ক্রয় করতে হবে। এই ক্ষেত্রে যদি নিয়মিত নিজেদের বিনিয়োগের উপর নজর রাখা যায় তা হলেই সেই সুযোগগুলি সনাক্ত করা যাবে।
আরও পড়ুন: Lionel Messi Car Collection: প্রচুর টাকা, অগুন্তি গোলই নয়, মেসি কোটি কোটি টাকার বিলাসবহুল গাড়ির মালিকও
#৫ প্রতিরক্ষামূলক স্টকে বিনিয়োগ -
প্রতিরক্ষামূলক স্টক হল প্রয়োজনীয় পণ্য এবং পরিষেবাগুলি বিক্রয়কারী সংস্থার অন্তর্গত। এই ধরনের সংস্থায় বিনিয়োগ করলে অর্থনীতির অবস্থা যেমনই হোক না কেন, বেশির ভাগ মানুষ পণ্য বা পরিষেবাগুলিতে ব্যয় করতে বাধ্য। তাই এ ধরনের কোম্পানির শেয়ারের দাম তুলনামূলক ভাবে স্থিতিশীল থাকে। ফলে এখানে বিনিয়োগ পোর্টফোলিওর সামগ্রিক ঝুঁকি কমতে পারে।
আরও পড়ুন: LPG cylinder: ১,০৫০ নয়! রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার মাত্র ৫০০ টাকায়, বিরাট সিদ্ধান্ত সরকারের
#৬ লাভজনক স্টক -
বিনিয়োগকারীরা যদি নিজেদের ইক্যুইটি বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশের আকারে নিয়মিত আয়ের দিকে না তাকান, তবে যে কোম্পানিগুলি ধারাবাহিক এবং উচ্চ লভ্যাংশ অফার করে তাদের শক্তিশালী কোম্পানি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
#৭ ঝুঁকি সহনশীলতা অনুযায়ী বিনিয়োগ -
শেয়ারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নানা ধরনের ঝুঁকি রয়েছে তাই বিনিয়োগের সময় মনে রাখতে হবে, নিজেদের ঝুঁকি সহনশীলতা কতখানি অর্থাৎ কোনও সমস্যা হলে জীবনে কেমন প্রভাব পড়বে। সেই অনুসারে বিনিয়োগ করা উচিত।
ব্যবসা-বাণিজ্যের সব লেটেস্ট খবর ( Business News in Bengali) নিউজ 18 বাংলা-তে পেয়ে যাবেন, যার মধ্যে ব্যক্তিগত অর্থ, সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের টিপস (সেভিংস ও ইনভেস্টমেন্ট টিপস) ব্যবসার উপায়ও জানতে পারবেন। দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর অনলাইনে নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভি-তে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ সব খবরের আপডেট পেতে ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
December 20, 2022 12:08 AM IST
বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান উপার্জিত অর্থ! আগে ভাল করে জেনে নিন এই বিষয়গুলি