#বাঁকুড়া : নিজের দেশেই পরবাসী তারা ওরা বেদে সম্প্রদায়। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে এক জায়গাতে বসবাস করেও মেলেনি তাদের কোনো সুযোগ সুবিধা। এদের নেই স্বাস্থ্য সাথী , নেই লক্ষীর ভান্ডার , নেই কন্যাশ্রী যুবশ্রীর মত প্রকল্প।রেশনের চালটাও জোটেনা এদের। যার জেরে ভিক্ষাবৃত্তিই এদের মূল জীবিকা। একপ্রকার অসহায় অবস্থায় দিন যাপন তাদের। বাঁকুড়া জেলার একসময়ের জঙ্গলমহল আজ আগের তুলনায় অনেক খানি শান্ত। নেই বারুদের গন্ধ নেই বুটের আওয়াজ নেই মৃত্যুর হাতছানি।
বাঁকুড়া জেলার হিড়বাঁধ ব্লকের অন্তর্গত কাজলডোবা গ্রামের সাহেববাঁধ নামে একটি পুকুরের পাড়ে ছয় ছয়টি বেদের পরিবারের তিরপল দিয়ে মোড়া ছোট্ট ছোট্ট কুটির তৈরি করে বসবাস। নেই তাদের কোন বাসস্থানের জমি। নিজ দেশে পরিচয়হীন তারা । মেলেনি এখনো পর্যন্ত নাগরিকতার স্বীকৃতি , মেলেনা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুযোগ-সুবিধা। স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে কিছু সাহায্য করা হলেও সেই সাহায্য ছয় ছয়টি পরিবারের দিন আনতে পান্তা ফুরোনোর মত অবস্থা। এই ছোট্ট ছোট্ট কুটিরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন চলে জীবন যুদ্ধের লড়াই। সংসারে অন্নসংস্থানের জন্য এরা কেউ ভিক্ষা করে কেউ দিনমজুরের কাজ করে কোনরুপ দিন যাপন করে ।ওই বেদে পরিবারের এক সদস্য ঈশ্বর বেদে বলেন তারা তাদের পরিচয়পত্রের জন্য এবং বসবাসের উপযুক্ত জায়গার জন্য জেলা প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও কোন সাহায্য পায়নি। তারাও চাই পাঁচটা মানুষের মত সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে। চাই সরকারি সব কিছু সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে।
আরও পড়ুন - লাখ লাখ জাল নোট ছাপা চলছে! বাজারে নতুন কৌশলে রোজগার! বাঁকুড়ায় অবাক কাণ্ড
আরও পড়ুন - কোভিড ভেঙে দিল স্বপ্ন! বিটেক ইঞ্জিনিয়ার এখন বিটেক চা-ওয়ালা!
দীর্ঘ আট বছর যাবত তারা ওই এলাকাতে ববসবাস করলেও তাদের পরিবারের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে অন্ধকারাচ্ছন্ন না হয় তাই তারা চান তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে শিক্ষার আলো দেখাতে। স্থানীয় মিরগি গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উদ্যোগে 2021 সালে ওই পরিবারের বাচ্চাদের স্কুলে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করা হয়।ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুনীল সদ্দার বলেন এরা এই এলাকায় আট বছর ধরে আছে। এদের পূর্ব পুরুষেরা কেউ শিক্ষিত নয়। আমাদের এক শিক্ষকের উদ্যোগে এই বেদ বেশকিছু শিশুকে স্কুলে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন প্রশাসনকে একটু ব্যবস্থা নেওয়া উচিত যাতে তারা এই এলাকায় স্থায়ী বাসিন্দা হতে পারে। তাহলে তারা সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে।
ওই গ্রামের বাসিন্দা নরেন্দ্রনাথ কুম্ভকার বলেন আমরা দেখেছি এই বেদে সম্প্রদায় বিভিন্ন জায়গায় যাযাবর জীবন যাপন করত। প্রায় আট বছর এই বেদে পরিবারগুলি আমাদের গ্রামে বসবাস করছে। দীর্ঘদিন তারা কষ্টের মধ্য দিয়ে এভাবেই দিনযাপন করছেন। প্রশাসনের কাছে তিনি অনুরোধ করে বলেন তাদের যেন পুনর্বাসন দেওয়া হয় এবং সাথে আধার কার্ড ভোটার কার্ড তৈরি করে একটা সঠিক পরিচয় পত্র দেওয়া হয়। তাহলেই তারা এই সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে পারবে।
JOYJIBAN GOSWAMI
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Bankura news