Alipurduar News: কদিন বাদেই শিবরাত্রি, জটেশ্বর শিবমন্দিরের কথা জানলে আপনাকে অবাক হতেই হবে
- Published by:Suman Biswas
- hyperlocal
Last Updated:
Alipurduar News: ভক্তদের বিশ্বাস তারা যা মানত করেন তা পূরণ হয়।
আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা ব্লকের প্রান্তিক এলাকা জটেশ্বর। এই জটেশ্বর বাজার এলাকায় সুপ্রসিদ্ধ একটি শিবমন্দির আছে যা এই এলাকার প্রত্যেকটি লোকের কাছে আস্থার প্রতীক। স্থানীয় লোকজনের কাছে জটেশ্বর শিব মন্দির নামে পরিচিতি। এই মন্দিরের ইতিহাস পুরোনো।প্রতি শিবরাত্রিতে ভক্তদের ভীড় উপচে পড়ে এই মন্দিরে। ভক্তদের বিশ্বাস তারা যা মানত করেন তা পূরণ হয়।
মন্দিরের ইতিহাস
আনুমানিক বাংলার ১২৩৩ সালে এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছ। এর পেছনে একটি রোমাঞ্চকর কাহিনী। এই কাহিনীর শুরুতেই বলতে হয়,জটেশ্বরের দক্ষিণে অবস্থিত কাঠালবাড়ি গ্রাম, বর্তমানেও গ্রামটির নাম কাঠালবাড়ি নামেই পরিচিত। জটেশ্বরের পূর্বদিকের গ্রামটির নাম হেদায়েতনগর, এই হেদায়েতনগর গ্রামের জোতদার ছিলেন বেদেং ধ্বনি। তিনি ছিলেন তত্কালীন সময়ের ক্ষমতাশালী জোতদার। তাঁর নীচে কর্মরত লোকেরা বাস করতেন কাঠালবাড়ি গ্রাম।এই গ্রামেই কোনও এক শনিবার দুপুরে দিকে গ্রামবাসীরা লক্ষ্য করেন জঙ্গলের ভেতর একটি দুগ্ধবতী গরু অনবরত দুধ দিয়ে যাচ্ছে।কৌতুহলী গ্রামবাসী খানিকটা এগিয়ে গিয়ে যা দেখলেন তাতে তারা নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। তারা সামনে গিয়ে দেখতে পান মাটি ভেদ করে একটি পাথর উঠে আছে। সেই পাথরেই গাভীর দুধ অনবরত পড়ে চলেছে,এই দৃশ্য দেখে গ্রামবাসীর মনে ভীতির সঞ্চার হয়। তাঁরা সবাই মিলে ভাবলেন যে,এখানে ঠাকুরের আবির্ভাব হয়েছে, এই কথাটি নিমিষে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লো, লোক মারফত বেদেং ধ্বনির কানে এসে পৌছালো।তিনি হতভম্ব হয়ে যান এই খবর শুনে, তিনি তত্ক্ষণাত্ খবর পাঠালেন তাঁর বিশ্বস্ত হরেন রায় ও শচীন রায়ের কাছে,তাদেরকে আদেশ দিলেন ঠাকুরটিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য, জোরদারের নির্দেশ মতো তাঁরা ঠাকুর আনতে বেড়িয়ে পড়লেন, তাঁরা ঠাকুর অর্থাত্ পাথরটিকে মাটি থেকে উঠিয়ে খাঁচায় ভরে বাকে করে অর্থাত্ একটি বাঁশ দুজনের কাঁধে নিয়ে মাঝখানে ঠাকুরটিকে রেখে জোরদারের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলেন, সেই সময়ে পাথরটির উচ্চতা ছিলো মাত্র, ১০-১২ ইঞ্চি, ও ১৪-১৫ ইঞ্চি গোলাকৃতি।
advertisement
advertisement
কাঁঠালবাড়ি থেকে জটেশ্বর হাট পর্যন্ত আনতে অনেক সময় লেগে গেলো, তাই খানিকক্ষণ বিশ্রাম নেবার উদ্দেশ্যে ও চা পান করার জন্য বর্তমান যেখানে শিবলিঙ্গটি আছে সেখানে বাকটি নামিয়ে রেখে গেলেন, বিশ্রাম শেষে খাঁচাটি তুলতে গেলে কোনোভাবেই সেটিকে তুলতে না পেরে ধর্মভীরু লোকেদের মনে ভয় হয়, তাঁরা তত্ক্ষণাত্ জোতদারকে খবর পাঠান, তিনি এসেও ব্যর্থ হন, সেসময় জটেশ্বর কাঁচারিতে ম্যানেজার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন ওলিয়ার রহমান, তাকে ডেকে পাঠানো হয়, তত্কালীন সময়ে কাঁচারিতে দুটি হাতি থাকতো, একটির নাম ছিলো পেয়ারী ও দ্বিতীয়টির নাম ফুলমতী, এই হাতি দুটিকে এনেও খাঁচাটিকে তুলার ব্যাবস্থা করা হলেও সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়ে পড়লো, বাধ্য হয়ে খাঁচাটিকে এখানেই রেখে দিয়ে সবাই যে যার মতো বাড়ি চলে গেলো, পরের দিন সকালে জোতদার বেদেং ধ্বনি নিজে এসে কাশিয়া ও পাটকাঠি দিয়ে একচালার মতো একটি ঘর বানিয়ে দেয়, ও দই চিড়া, ধূপকাটি, ধুপধুনা দিয়ে নিজে প্রথম পুজো দেন।
advertisement
করোনা পরিস্থিতি কাটিয়ে এবারে মেলা বসতে চলেছে জটেশ্বর গরুহাটির মাঠে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছেন দোকান দিতে। এবিষয়ে জটেশ্বর শিব মন্দির কমিটির সম্পাদক দেবজিৎ পাল জানান, "আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে শিব চতুর্দশীর মেলা শুরু হতে চলেছে। শোভা যাত্রার মধ্য দিয়ে নদী থেকে জল নিয়ে এসে মহাদেবের মাথায় ঢেলে শুভ সূচনা করা হয় পুজোর । খুব নিষ্ঠার সঙ্গে শিব চতুর্দশী পালিত হয় এখানে। এবারে শিব চতুর্দশী উপলক্ষে পনেরোদিন মেলা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি।"
advertisement
Annanya Dey
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 16, 2023 1:56 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/আলিপুরদুয়ার/
Alipurduar News: কদিন বাদেই শিবরাত্রি, জটেশ্বর শিবমন্দিরের কথা জানলে আপনাকে অবাক হতেই হবে
