Murshidabad News: জাহাঙ্গীরপুর থেকে জঙ্গিপুর! জানুন এক শহরের লুকনো ইতিহাস, এই বাংলারই গল্প!
- Published by:Suman Biswas
- hyperlocal
- Reported by:Tanmoy Mondal
Last Updated:
Murshidabad News: এখানকার তাঁতিরা শুধু শাড়ি বুনতেন না—বুনতেন ইতিহাস, বুনতেন শিল্প, বুনতেন রাজসিকতার প্রতীক।
advertisement
1/8

জঙ্গিপুর, তন্ময় মন্ডল: বাংলার বুকের উপর দিয়ে কত সাম্রাজ্য, কত রাজবংশ গিয়েছে– তবুও কিছু জনপদ তাদের ভৌগোলিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের জন্য বারবার ইতিহাসের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। জঙ্গিপুর সেই রকমই এক শহর।
advertisement
2/8
আজ যাকে আমরা “জঙ্গিপুর” নামে চিনি, তারই প্রাচীন নাম ছিল জাহাঙ্গীরপুর—মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নামানুসারে। সম্রাট নিজে যখন পূর্বভারতের অস্থিরতায় ছুটে এসে ভাগীরথীর তীরে শিবির করেছিলেন, তখনই এই জনপদ জাহাঙ্গীরপুর নামে খ্যাত হয়। পরে সংক্ষেপে নাম হয় জঙ্গীপুর—যেমন ঔরঙ্গজেবের নামে ঔরঙ্গাবাদ, ফারুক শেয়ারের নামে ফরক্কাবাদ।
advertisement
3/8
বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ মানস বাবু তার কথায়, জঙ্গিপুর শুধু মুঘল আমলের স্মৃতি নয়, বরং নবাবি বাংলার শিল্প সংস্কৃতির এক গৌরবময় অধ্যায়। এখানকার তাঁতিরা শুধু শাড়ি বুনতেন না—বুনতেন ইতিহাস, বুনতেন শিল্প, বুনতেন রাজসিকতার প্রতীক। নবাব নাজিমদের প্রতিকৃতি খচিত রেশমী শাড়ি আজও কিংবদন্তির মতো শোনা যায়।
advertisement
4/8
১৮০২ সালে লর্ড ভ্যালেন্টাইনা জঙ্গিপুরকে আখ্যা দিয়েছিলেন “The greatest silk station of East India Company”। তখন এখানে ৬০০ ফার্নেসে কাজ করত, তিন হাজার মানুষ রুটি-রুজির আশ্রয় পেত। পাশের বালুচর, মীর্জাপুরের তাঁতশিল্প বিলাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। আর এখানকার নাহাট্টা পরিবার একদিন শুধু বাংলাতেই নয়, ফ্রান্সের বাজারেও জুয়েলারির ব্যবসায় খ্যাতি অর্জন করেছিল।
advertisement
5/8
মানস বাবু এও জানিয়েছেন, অর্থনীতি যেমন প্রসারিত হয়েছিল, তেমনি রাজনীতির ঝড়ও বয়ে গিয়েছে এই জনপদের উপর। পাঠানদের দমন করতে রাজপুত সেনানায়কেরা এখানে শিবির গড়েছিলেন। পর্তুগিজ, মগ, বর্গিদের আক্রমণে জর্জরিত হলেও জঙ্গিপুর দাঁড়িয়ে ছিল অবিচল। মুঘল, পাঠান, সেন, গুপ্ত—কোনও সাম্রাজ্যেরই কেন্দ্রীয় দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি এই অঞ্চল।
advertisement
6/8
কিন্তু জঙ্গিপুর শুধু রাজনীতি বা বাণিজ্যের ইতিহাস নয়—এটি বিদ্রোহ ও প্রতিরোধেরও ইতিহাস। ইতিহাসের পাতায় জঙ্গিপুর ছিল গুপ্ত, সেন, পাঠান ও মুঘল সাম্রাজ্যের কেন্দ্রস্থল, যেখানে বহু যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে এবং মুর্শিদাবাদ ছিল রাজধানী।
advertisement
7/8
নদী অববাহিকার পথ ধরে সম্রাট, সুলতান, পীর, ফকির, সাধু, সন্ন্যাসী, জনজাতি ও উপজাতির আগমন ঘটেছে; মগ, বর্গি, পর্তুগিজদের আক্রমণও এই অঞ্চলে ঘটেছে। বৌদ্ধ, মহাবীর, চৈতন্যদেবের ছোঁয়া যেমন রয়েছে, তেমনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির—ব্রিটিশ, ফরাসি, ডাচ, ওলন্দাজ—বাণিজ্যিক আগ্রাসনও ঘটেছে।
advertisement
8/8
ওহাবি আন্দোলন, কৃষক বিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহের মতো সামাজিক আন্দোলন এই ভূমিকে আন্দোলিত করেছে। নদীপথ ধরে পশ্চিমের জাতি-জনজাতির আগমন ঘটেছে, যার ফলে রাঢ় ও বাগড়ির সাংস্কৃতিক ধারা পৃথক হয়েছে—রাঢ়ে রক্ষণশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা হয়েছে, আর বাগড়িতে মিশ্রণ ও নব সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছে। এইভাবে জঙ্গিপুর শুধু একটি ভূগোল নয়, বরং ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি ও সংগ্রামের এক জীবন্ত কাব্য।
বাংলা খবর/ছবি/দক্ষিণবঙ্গ/
Murshidabad News: জাহাঙ্গীরপুর থেকে জঙ্গিপুর! জানুন এক শহরের লুকনো ইতিহাস, এই বাংলারই গল্প!